শান্তি ও নিরাপত্তার সুমহান আদর্শ ইসলাম। ইসলামি জীবনাদর্শে বিশ্বাসী কোনো ব্যক্তি পরিবার সমাজ তথা রাষ্ট্রে অশান্তির লেশমাত্রও নেই। ইসলাম সর্বদা শান্তি নিরাপত্তা ও সুন্দরের শিক্ষা দেয়।
পক্ষান্তরে ইসলামের সুমহান আদর্শ থেকে বিচ্যুত হওয়া হলো কুফরি। কুফরি করা পাপাচার। এ পাপাচারের কারণে জমিনে অশান্তি ও সন্ত্রাসের সৃষ্টি হয়। আল্লাহ বলেন-
‘নিশ্চয় আল্লাহর কাছে মনোনীত একমাত্র জীবন বিধান হচ্ছে ইসলাম।’
ইসলাম থেকে বিচ্যুতিই হলো বড় অশান্তি। তাই ইসলামের শান্তির ছায়া থেকে সরে গিয়ে কুফরি কিংবা পাপাচারের কারণে সমাজে অশান্তি দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করা হলো সবচেয়ে বড় মুনাফেকি বা কপটতা। মহান আল্লাহ ঘোষণা করেছেন-
‘নিশ্চয় মুনাফিক (কপট ব্যক্তিরা দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টির ফলে) জাহান্নামের সবচেয়ে নিচে অবস্থান করবে।’ অর্থাৎ যার পরে আর কোনো অপরাধীর বাসস্থান নেই।
সুতরাং যারা দুনিয়ায় আল্লাহ বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করবে, তাদের শান্তি ও নিরাপত্তার কমতি হবে না। আর যারাই অশান্তি সৃষ্টি করতে চাইবে, তারা দুনিয়াতে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তাদের আখেরাতও হবে নিষ্ফল।
যেমন ধরে নেয়া যাক
সমাজে অর্থনৈতিক কারণে গরিব-অসহায় মানুষসহ রাষ্ট্রীয় অবস্থা অস্থিতিশীল। কুরআন-সুন্নাহর আলোকে যদি ব্যক্তি পরিবার সমাজ থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে জাকাতভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থা প্রণয়ন করা হয় তবে সমাজের অসাহয়ত্বে অস্থিতিশীল অবস্থা থাকবে না।
আবার ব্যবসা –বাণিজ্যে অস্থির অবস্থার কারণেও মানুষ অস্থিতিশীল। এ অবস্থায় সুদভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে ব্যবসা-বাণিজ্যে কুরআনে প্রণীত অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সুষম বণ্টন করলে সে অস্থিরতা থাকবে না।
বিচার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা ফিরে আসতে কুরআন-সুন্নাহর বিধান বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।
এভাবেই ইসলাম সর্বক্ষেত্রে মানুষের চিন্তা-চেতনা ও গবেষণার দ্বারকে উম্মুক্ত করেছে। যার সুক্ষ্ণাতি সুক্ষ্ম জ্ঞান রয়েছে কুরআনুল কারিম ও প্রিয়নবির সুন্নায়। যা গবেষণা করে শেষ করা যাবে না।
অথচ সমাজে এমন লোকের সংখ্যাই বেশি, যারা কুরআন সুন্নাহ বিরোধী কাজ করে আর মুখে বলে যে, তারা সমাজ সংস্কার, শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণ ও উন্নতির চেষ্টায় নিয়োজিত। প্রকৃত পক্ষে তারা শান্তি বিনষ্টকারী, দাঙ্গা-হাঙ্গামাকারী। কপটতায় তাদের অন্তর ভরপুর। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন-
‘আর যখন তাদেরকে বলা হয় যে, দুনিয়ার বুকে ফাসাদ তথা দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করো না, তখন তারা বলে, আমরা তো মীমাংসার পথ অবলম্বন করেছি। মনে রেখো, তারাই হাঙ্গামা সৃষ্টিকারী, কিন্তু তারা তা উপলব্ধি করে না। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১১-১২)
সোজা কথা হলো
কুরআন-সুন্নাহর বিধান পালনকারীরা যেমন শান্তি ও নিরাপদ মানুষ। ঠিক তেমনি তারা ব্যক্তি পরিবার ও সমাজে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠাকারী হিসেবেও নিরাপদ। আর যারা মুখে ভালো কথা বলে কিন্ত কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কাজে লিপ্ত তারাই সমাজে ফাসাদ বা অশান্তি সৃষ্টিকারী।
সুতরাং সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কুরআন-সুন্নাহর বিধান বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। পৃথিবীর এ সুন্দর জীবন ব্যবস্থায় যারাই দাঙ্গা-হাঙ্গামা-অশান্তি তথা ফাসাদ সৃষ্টি করবে, তারাই হবে ক্ষতিগ্রস্ত।
আল্লাহ তাআলা সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে উক্ত নিফাকি তথা কপটতা থেকে মুক্ত থেকে সুন্দর পৃথিবী উপহার দিতে কুরআনের জ্ঞান অর্জন করার তাওফিক দান করুন। দুনিয়া ও পরকালের সফলতা লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।