বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের হার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে ঋণ বিতরণের হার ব্যাপকভাবে বাড়ার পরও খেলাপি ঋণের হার কমেছে। কিছু দেশে এ হার সামান্য বেড়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এ হার বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। আর পরিমাণ বেড়েছে কয়েকগুণ।
বুধবার বিআইবিএমে অনুষ্ঠিত বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে খেলাপি ঋণের বিষয়ে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। এটি উপস্থাপন করেন ব্যাংক এশিয়ার কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওমর ফারুক।
এতে বলা হয়, ২০১১ সালে বাংলাদেশে মোট বিতরণ করা ঋণের মধ্যে ৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ খেলাপি ছিল। ওই বছরে চীনে এর হার ছিল শূন্য দশমিক ৯৬ শতাংশ, শ্রীলংকায় ৩ দশমিক ৮২ শতাংশ এবং থাইল্যান্ডে ছিল ২ দশমিক ৯২ শতাংশ।
২০১২ সালে বাংলাদেশে এ হার দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। একই বছরে চীনে সামান্য কমে ছিল শূন্য দশমিক ৯৬ শতাংশ। শ্রীলংকায় ৩ দশমকি ৬৩ শতাংশ এবং থাইল্যান্ডে ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ওই বছরে বাংলাদেশ ছাড়া বাকি তিন দেশেই খেলাপি ঋণের হার কমেছে।
২০১৩ সালে বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের হার সামান্য কমে ৮ দশমিক ৬৪ শতাংশে দাঁড়ায়। ওই বছরে বেশি হারে খেলাপি ঋণ অবলোপন করায় এ হার কমেছে। বাকি তিন দেশের মধ্যে চীন ও শ্রীলংকায় সামান্য বেড়েছে। তবে থাইল্যান্ডে কিছুটা কমেছে। এর মধ্যে চীনে এ হার ছিল ১ শতাংশ, শ্রীলংকায় ছিল ৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং থাইল্যান্ডে ২ দশমিক ৩০ শতাংশ।
২০১৪ সালে শ্রীলংকা ও থাইল্যান্ড ছাড়া বাকি দুই দেশে খেলাপি ঋণের হার বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বাংলাদেশে এবং সামান্য বেড়েছে চীনে। ওই বছরে বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের হার ছিল ৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ। চীনে ১ দশমিক ২৫ শতাংশ, শ্রীলংকায় ৪ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং থাইল্যান্ডে ২ দশমিক ৩১ শতাংশ।
২০১৫ সালে চীন ও থাইল্যান্ডে এ হার সামান্য বেড়েছে। বাংলাদেশ ও শ্রীলংকায় কমেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে কম কমেছে বাংলাদেশে। ওই বছরে বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের হার ছিল ৮ দশমিক ৪০ শতাংশ, চীনে ছিল ১ দশমিক ৬৭ শতাংশ, শ্রীলংকায় ছিল ৩ দশমিক ২৪ শতাংশ এবং থাইল্যান্ডে ছিল ২ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
২০১৬ সালে থাইল্যান্ড ও চীনে খেলাপি ঋণের হার কমেছে। বাংলাদেশ ও চীনে বেড়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে এ হার সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। চীনে বেড়েছে সামান্য। ওই বছরে বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের হার বেড়ে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ২০ শতাংশ, চীনে ১ দশমিক ৭৪ শতাংশ, শ্রীলংকায় ২ দশমিক ৬৩ শতাংশ এবং থাইল্যান্ডে ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
২০১৭ সালে চীনে খেলাপি ঋণের হার অপরিবর্তিত থাকে। তবে ওই বছরে তাদের ঋণ প্রবৃদ্ধির হার বেড়েছিল ১৭ শতাংশ।