কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটিকে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরুর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ভারত। রাখাইনে ফেরত যাওয়া রোহিঙ্গাদের অনুকূল জীবনযাত্রার পরিবেশ বজায় রাখতেও মিয়ানমারের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছে ভারত।
বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমার জানান, তারা যদি (মিয়ানমার) রোহিঙ্গা নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে সম্মতি জানায় তবে আমরা বলবো এটা একটা শুভ সূচনা। আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি যে রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ফলেই রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান সম্ভব।
রবীশ কুমার আরও জানান, রাখাইন প্রদেশে গৃহহারা মানুষদের নিরাপদ, স্থায়ী ও টেকসই প্রত্যাবাসন হলে সেক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসের পরিবেশ তৈরি হবে এবং আমরা আশা করবো যে এই প্রক্রিয়া আরও গতি পাবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে নতুন করে সহিংসতা তৈরি হওয়ায় প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা দেশ ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। এছাড়াও আগে থেকেও আরও কয়েকলাখ রোহিঙ্গা আগেই অবস্থান করছে দেশটিতে। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ১০ লাখের কাছাকাছি। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশ তাদের আশ্রয় দিলেও বিষয়টি যথেষ্ট উদ্বেগের। আন্তর্জাতিক মহলও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
এমন অবস্থায় আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের পিরিয়ে নিতে গত বছরের শেষ দিকে বাংলাদেশের চুক্তি করলেও এই প্রথম প্রত্যাবাসন শুরুর একটি নির্দিষ্ট সময় ঠিক করা হয়।
গত মঙ্গলবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত বাংলাদেশ ও মিয়ানমার-দুই দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের তৃতীয় বৈঠক শেষে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ে জানান, নভেম্বরের ১৫ তারিখ থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়া শুরু করবে। প্রথম ধাপে নির্ধারিত পাঁচ হাজার ও দ্বিতীয় ধাপে দুই হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নেওয়া হবে।
অন্যদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক জানান, আমরা আশা করছি নভেম্বরের মাঝামাঝি আমরা প্রত্যাবাসন শুরু করতে পারবো। এটা হবে প্রথম গ্রুপ।
বিষয়টি নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, ভারত সবসময়ই বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের উদ্দেশ্যে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, দ্রুত ও টেকসই প্রত্যাবাসনের পক্ষে। আমি মনে করি এটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া গৃহহীন রোহিঙ্গাদের ত্রাণ সহায়তার ব্যাপারে ভারত কাজ করে চলেছে। পাশাপাশি মিয়ানমারেও সেই সব রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার অনুকূল পরিবেশ স্থাপনেও ভারত সহায়ক ভূমিকা রেখেছে।