২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৪:২০

পবিপ্রবি ছাত্রলীগের ঘুষ নেয়ার ভিডিও ফাঁস

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রায়হান আহমেদ রিমনের এক ঠিকাদারের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
পবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনের একটি কক্ষে সিসি ক্যামেরায় ধারণ হওয়া ভিডিওতে ঠিকাদারের কাছ থেকে এক হাজার টাকার দুটি বান্ডেল গ্রহণ করতে দেখা গেছে। এই ঘুষ কেলেঙ্কারিতে ইমেজ সংকটে পড়েছে পবিপ্রবি ছাত্রলীগ।
এদিকে পবিপ্রবির মৃত্তিকা বিজ্ঞানের মাস্টার্স কোর্সে অধ্যয়নরত আল আমিন হোসেন নামে এক শিক্ষার্থীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে রিমনসহ আরো ১২ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে গত ৩০ মে পটুয়াখলীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ওই শিক্ষার্থীর পিতা মো. আব্দুল আজিজ শিকদার।

ফাঁস হওয়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, পবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনের একটি কক্ষে রিমন (চেক টি-শার্ট) আগে থেকে চেয়ারে বসে ছিল। এরপর ওই কক্ষে দুমকির জলিসা এলাকার বাসিন্দা ঠিকাদার জব্বার হোসেন (সাদা পাঞ্জাবী পরা) প্রবেশ করেন। ঠিকাদার জব্বারের প্রবেশের পর রিমন নিজে উঠে গিয়ে কক্ষের দরজা লাগিয়ে দিয়ে চেয়ারে এসে বসেন। দুই জনের কথোপকথনের একপর্যায়ে ঠিকাদার জব্বার তার ডান পাশের পকেট থেকে এক হাজার টাকার একটি বান্ডেল রিমনের সামনে টেবিলের ওপর রাখে। এতে রিমন সন্তুষ্ট না হওয়ায় রিমনের দাবি মত ঠিকাদার জব্বার তার বাম পকেট থেকে আরো একটি এক হাজার টাকার বান্ডেল টেবিলে রাখলে রিমন ওই দুই বান্ডেল টাকা হাতে নেয়। পরে টাকাগুলো নিজ হাতে তার জিন্সের প্যান্টের বাম পাশের পকেটে রাখেন।
প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজের ব্যাপারে ঠিকাদার মো. জব্বার হোসেন বলেন, সম্প্রতি ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের আসবাবপত্র ক্রয়ের একটি কাজ পান তিনি। ইউরো এন্টারপ্রাইজের অনুকূলে পাওয়া কাজটিতে বরাদ্দ ছিল এক কোটি ৫৫ লাখ টাকা। ওয়ার্ক অর্ডারের পর তিনি কাজ শুরু করলে রিমন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। এসময় রিমন তার কাছে ১২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তিনি চাঁদা দিতে অপরগতা প্রকাশ করলে রিমন বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী মো. ইউনুস শরীফের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন।
এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শামসুদ্দিন তাকে (ঠিকাদার জব্বার) ডেকে নিয়ে বলেন; রিমনের সাথে ঝামেলা করলে পরিবেশ অশান্ত হয়ে উঠলে বিশ্ববিদ্যালয়ে মান-সম্মান ক্ষুন্ন হবে। এর চেয়ে ওদেরকে (রিমন) ৭ লাখ টাকা দিয়ে দিন। উপাচার্যের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তিনি রিমনকে প্রথমে ২ লাখ টাকা ও পরে বাকি ৫ লাখ টাকা দেন।
তিনি আরো বলেন, প্রথম কিস্তিতে দেওয়া ২ লাখ টাকার ভিডিও ফুটেজটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রায়হান আহমেদ রিমনের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টা মামলা দায়েরের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। এ ব্যাপারে রায়হান আহমেদ রিমনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি ঢাকায় আছি।’ এছাড়া আর কোন কথা বলতে রাজি হননি তিনি।

দৈনিক দেশজনতা এন/এইচ

প্রকাশ :জুন ৬, ২০১৭ ১:১২ অপরাহ্ণ