মিয়ানমারের নাগরিকদের ফেরত নিতে দেশটির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চীনের উদ্যোগ এ সংকট সমাধান সহায়ক হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে চীনের স্টেট কাউন্সিলর ও জননিরাপত্তামন্ত্রী ঝাও কেজির সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আহ্বান জানানো হয়।-খবর বাসসের।
শেখ হাসিনা চীনের মন্ত্রীকে বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করেছে। মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু দেশটি কথা অনুযায়ী কাজ করছে না।
এ সময়ে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীন ইতিবাচক ও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবে বলে বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছে ঝাও কেজি।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের অবহিত করেন। তিনি বলেন, চীনের মন্ত্রী সাইবার অপরাধ মোকাবেলায়ও বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস দেন।
প্রেস সচিব চীনের মন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে কারিগরি সহায়তা দিতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
ঝাও কেজি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে মানবিক কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তার সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, এ দুটি সামাজিক অভিশাপকে কঠোর হস্তে দমন করা হচ্ছে। সাইবার অপরাধ দমনে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।
ঝাও কেজি দেশের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে বলেন, আপনার নেতৃত্বে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় জাতির স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের চলমান সহযোগিতার প্রশংসা করেন। তিনি চীনে সমুদ্রের ওপর বিশ্বের দীর্ঘতম সেতু উদ্বোধনের কথা উল্লেখ করে একে ‘বিস্ময়কর’ বলে বর্ণনা করেন।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ এবং বিভিন্ন নদীর ওপর আমাদের সেতু নির্মাণ প্রয়োজন। এ জন্য আমরা চীনের সহযোগিতা চাই।
বাংলাদেশে বিনিয়োগের বিষয় আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে চীনের উদ্যোক্তাদের জন্য ভূমি বরাদ্দ করেছে, যাতে তারা সেখানে শিল্প স্থাপন করতে পারে।
তিনি বলেন, আমরা আশা করি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ কাজে লাগিয়ে চীনের আরও উদ্যোক্তা বাংলাদেশে আসবে।
চীনের মন্ত্রী বলেন, বেইজিং সবসময় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সমর্থন দিয়ে আসছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নেও আমরা সমর্থন দিয়ে যাব।
এ সময় অন্যদের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব নজিবুর রহমান, পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. জাবেদ পাটোয়ারী, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মিয়া জয়নুল আবেদীন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন এবং নিরাপত্তা সার্ভিস বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।