মানুষ সাধরণত মতের অমিল হলে পরস্পরে তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত হয়। বিষয়টি সত্য কিংবা মিথ্যা হোক তর্ক-বিতর্ক সম্পর্কে ইসলামের বিধানই বা কী? এ বিষয়ে হাদিসে পাকে রয়েছে সুস্পষ্ট নির্দেশনা।
মিথ্যা ও অসাড় কথাবার্তাসহ যুক্তি-তর্কের গোড়ামি থেকে বিরত থাকা ঈমানদারের প্রধান কাজ। বিষয়টি সত্য হোক কিংবা মিথ্যা হোক কোনো বিষয়েই বিতর্ক করা ঠিক নয়।
তিনটি কাজের ফলে আল্লাহ তাআলা মুমিন বান্দার জন্য জান্নাতের তিনটি স্তরে ঘর নির্মাণ করেন। এ তিনটি কাজের একটি হলো যারা সত্য বিষয়ে বিতর্ক পরিহার করে। হাদিসে এসেছে-
হজরত মুআজ ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমি সেই ব্যক্তির জন্য জান্নাতের পাশ্বদেশে, জান্নাতের মধ্যভাগে এবং জান্নাতের উপরিভাগে একটি ঘর নির্মাণ করা হবে। যে ব্যক্তি সত্যাশ্রয়ী হওয়া সত্বেও তর্ক পরিহার করে, উপহাসস্বরূপ হলেও মিথ্যা কথা বর্জন করে, আর নিজের চরিত্রকে সুন্দর করে। (মুসনাদে বাযযার, তারগিব)
এ হাদিসে মানুষের ৩টি গুণের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো সত্যাশ্রয়ী হওয়া সত্ত্বেও অর্থাৎ বিষয়টি সঠিক হলেও সে বিষয় সম্পর্কে তর্ক করা থেকে বিরত থাকে। আবার অনিচ্ছা সত্ত্বেও মিথ্যা কথা বর্জন করে। আর নৈতিক চরিত্রবান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে।
বিষয়টি সত্য কিংবা মিথ্যা হোক উভয় বিষয়ে তর্ক-বিতর্ক পরিহার করা আবশ্যক। কেননা সত্য কিংবা মিথ্যা উভয় বিষয়ে বির্তক পরিহার করায় রয়েছে ফজিলত। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহ আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘অন্যায়ের স্বপক্ষে থেকে যে ব্যক্তি তর্ক-বিতর্ক পরিহার করে তার জন্য জান্নাতের পাশে এক গৃহ নির্মাণ করা হয়। আর ন্যায়ের স্বপক্ষে থেকেও যে ব্যক্তি তর্ক পরিহার করে তার জন্য জান্নাতের মধ্যস্থলে এক গৃহ নির্মাণ করা হয়। আর যে ব্যক্তি তার চরিত্রকে সুন্দর করে তার জন্য জান্নাতের উপরিভাগে এক গৃহ নির্মাণ করা হয়। (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, বায়হাকি)
সুতরাং বিষয়টি সত্য হোক কিংবা মিথ্যা হোক উভয় ক্ষেত্রে তর্ক-বিতর্ক পরিহার করার প্রতি হাদিসে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। কারণ অন্যায় বিষয়ে বিতর্ক করা থেকে বিরত থাকার ফলে যেমন জান্নাতের ঘর নির্মাণ করা হয় তেমনি ন্যায় বিষয়ে তর্ক-বিতর্ক পরিহার করলেও জান্নাতে ঘরের মালিক হওয়া যায়।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে অযথা তর্ক-বিতর্ক করা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। নৈতিক ও উন্নত চরিত্র গঠনে আত্মনিয়োগ করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।