২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৮:৩৭

‘একান্ত বাধ্যগত’ এক ভিসি’র কথা

মহিউদ্দিন খান মোহন: আমি তাকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকেই ধন্যবাদ জানাতে চাই। কারণ, তিনি একটি চরম সত্যকে জনসমক্ষে অত্যন্ত সাহসের সঙ্গে তুলে ধরেছেন। তিনি পরিষ্কার করে দিয়েছেন বর্তমান সময়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে। এতদিন যেটা ছিল গোপন, আজ তা প্রকাশ্য। এতদিন যা ছিল সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন এবং সচেতন মানুষদের অভিযোগ, আজ সেটা প্রতিষ্ঠিত সত্যে পরিণত হয়েছে। এমন একটি নির্মম সত্যকে তুলে ধরার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ শুধু নয়, বরং তার প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করা জরুরি।
হ্যাঁ, আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর মীজানুর রহমানের কথাই বলছি। গত ২৭ এপ্রিল দৈনিক প্রথম আলো’য় প্রকাশিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা বিজ্ঞপ্তিতে বিনা পরীক্ষায় ‘বিশেষ কর্মকর্তা’ হিসেবে ১২ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর নিয়োগ বিষয়ক প্রতিবেদনে ভিসি যা বলেছেন, তাতে বর্তমান সময়ে সরকারি আধা-সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের সঠিক চিত্রই ফুটে উঠেছে। প্রথম আলো’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভাইস চ্যান্সেলর মীজানুর রহমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ কর্মকর্তার পদ সৃষ্টি করে এবং নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই ১২ জন ছাত্ররীগ নেতাকে নিয়োগ দিয়েছেন। তাদের মধ্যে দু’জন সংগঠনটির সাবেক নেতা, অন্যরা ওই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্ররীগের নেতা-কর্মী। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভাইস- চ্যান্সেলর হিসেবে মীজানুর রহমানের আগের মেয়াদ শেষ হওয়ার এক মাস আগে গত ফেব্রুয়ারিতে এ ১২ জনকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেন তিনি। আর এ নিয়োগ দেয়া হয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে। উল্লেখ্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে মীজানুর রহমানের এখন দ্বিতীয় মেয়াদ চলছে।
নিয়োগ দিয়েই তিনি চুপ থাকেন নি। এ ধরনের বিতর্কিত নিয়োগ নিয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন ‘ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের চাকরি দিতে আমি বাধ্য। নিয়োগপ্রাপ্ত ওই ১২ জন কঠোর পরিশ্রমী নেতা-কর্মী ছিলেন। এর মধ্যে দু’জন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার বাসিন্দা। এটাই তাদের বড় পরিচয়।’ তাহলে সাধারণ প্রার্থীদের কী হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন- ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ছাত্র বা চাকরি প্রার্থী বলে কিছু নেই। এখানে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাই চাকরি পাবেন। এটাই তাদের বিশেষ যোগ্যতা।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলারের বক্তব্যে দেশের সর্বমহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তার এ বক্তব্যকে কেউ কেউ ‘একে চুরি, তার ওপর সিনাজুরি’ বলে আখ্যায়িত করলেও অনেকেই মনে করছেন যে, দলের একজন একনিষ্ঠ কর্মী’ হিসেবে তিনি সঠিক কথাই বলেছেন। একই সঙ্গে দেশের সরকারি, আধা-সরকারি এবং স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা সমূহে নিয়োগের ক্ষেত্রে যেসব ঘটনা ঘটছে তারই প্রতিফলন ঘটেছে ভিসি মীজানুর রহমানের বক্তব্য। তিনি সত্যকে অস্বীকার করেননি, এড়িয়ে যান নি। যা করেছেন এবং অন্তরে লালন করেন, তা-ই অকপটে বলে দিয়েছেন। কোনো রাখঢাক করেননি। এটা তার সৎ সাহসের পরিচায়ক বলেই ধরে নেয়া যায়।
ভিসি মীজান বলেছেন তিনি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের চাকরি দিতে তিনি বাধ্য। কেন বাধ্য? কারণ, তিনি একজন ‘একান্ত বাধ্যগত’ ভাইস-চ্যান্সেলর। যারা তাকে নিয়োগ দিয়েছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ এবং অনুগত তো তাকে থাকতেই হবে। তাদের নির্দেশনা সূচারুরূপে পালন করা তার অবশ্য পালনীয় কর্তব্য। আর তিনি তা পালন করবেন এ বিশ্বাস ছিল বলেই তো ‘উপরওয়ালারা’ তাকে ওই গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছে। এখানে আমি ভিসি হিসেবে মীজানুর রহমানের নিয়োগের যোগ্যতা-অযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চাই না। সরকারের কাছে তাকে যোগ্য মনে হয়েছে বলেই তিনি পদটি বাগিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন। তবে, এ পদে নিয়োগ পাবার ক্ষেত্রে ওই ১২ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর মতো তারও একই ধরনের ‘যোগ্যতা’ কাজ করেছে- এ সন্দেহ করাটা বোধকরি অসঙ্গত হবে না। কেননা, প্রথম আলো’র উল্লিখিত প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে- ‘মীজানুর রহমান একসময় আওয়ামী যুব লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ছিলেন। প্রথম মেয়াদে উপাচার্য হওয়ার পর এই পদ থেকে পদত্যাগ  করেন। তবে গত বছরের অক্টোবরে আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিলে তিনি কাউন্সিলর ছিলেন। বর্তমানে তিনি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।’ তো এমন একজন ‘পার্টিজান’ ভিসি যদি নিয়মনীতি ভঙ্গ করে স্ব-দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়োগ দিয়েই থাকেন তাতে দোষ ধরার কী আছে? অগ্রজ হিসেবে তিনি যে যোগ্যতায় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পদে দু’বার নিয়োগ পেয়েছেন, তিনি তো তার অনুজদের ক্ষেত্রে একই  ‘যোগ্যতা’কে চাকরি পাবার সঠিক উপযুক্ততা মনে করবেনই।
কিন্ত যে প্রশ্নটি এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে তাহলো, শুধু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, প্রশাসনের প্রায় সর্বত্র এখন এ ধরনের কায়-কারবার চলছে। চাকরি পাবার ক্ষেত্রে প্রার্থীদের প্রধান যোগ্যতা হলো তারা শাসক দল আওয়ামী লীগের সমর্থক, নিদেন পক্ষে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের স্বজন কিনা। ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার-দফাদার থেকে শুরু করে সরকারি প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদ পর্যন্ত চলছে একই নীতির অনুসরণ। পদোন্নতি পদায়ন বদলীর ক্ষেত্রেও চলছে একই প্রক্রিয়া। সব জায়গায় দলীয় লোক বসানোর উদগ্র বাসনার এক অশুভ তৎপরতা চলছে। রাষ্ট্রক্ষমতাকে স্থায়ীভাবে কুক্ষিগত করার অভিপ্রায় যে এক্ষেত্রে প্রধান উদ্দেশ্য হিসেবে কাজ করছে তা না বললেও চলে।
এ প্রক্রিয়াকে রাষ্ট্র ও সমাজ সচেতন ব্যক্তিরা দেশ ও জাতির জন্য ভয়ঙ্কর ভবিষ্যতের অশনি সংকেত হিসেবেই দেখছেন। তারা বলছেন যে, এভাবে যদি রাষ্ট্র, প্রশাসন বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক পরিচয়কে যোগ্যতার একমাত্র মাপকাঠি ধরে নিয়োগ দেয়া হয়, তাহলে সর্বস্তরে মেধাবী কর্মকর্তার প্রচন্ড অভাব খুব শিগগিরই দেখা দেবে। পাশাপাশি যারা মেধাবী শিক্ষার্থী বা চাকরি প্রার্থী আছে, তারা হতাশ হয়ে পড়বে। বঞ্চিতদের মনে জ্বলতে থাকবে ক্ষোভের আগুন। সে আগুন ধূমায়িত হয়ে এক সময় সৃষ্টি করতে পারে ভয়াবহ দাবানল। সে দাবানলে পুড়ে ছারখার হয়ে যেতে পারে কারো কারো সাজানো উদ্যান। অবশ্য এটাও ঠিক যে, বর্তমানে যারা ক্ষমতায় আছেন কিংবা ক্ষমতা নামের সূর্যের আলোয় নিজেদের শরীরে তাপ সংগ্রহ করে শক্তিমান হয়ে ওঠেছেন, তারা সে ভবিষ্যতের কথা মোটেই ভাবছেন বলে মনে হয় না। যদি ভাবতেন, তাহলে এ ধরনের কোনো কাজ করার আগে তারা এর প্রতিক্রিয়া নিয়ে হিসাব কষে সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপ নিতেন।
সরকার প্রধান কিংবা সরকারের শীর্ষ নীতি নির্ধারকগণ ভিসি মীজানের কথাগুলোকে কীভাবে নিয়েছেন আমার জানা নেই। তবে, তার এ বক্তব্য যে সরকারের মুখমন্ডলে একদলা কাদা লাগিয়ে দিয়েছে, সেটা অস্বীকার করা যাবে না। তার উক্তি মোতাবেক এখন চাকরি পেতে হলে ছাত্রলীগ তথা বর্তমান শাসক দলের কর্মী-ক্যাডার হওয়া এবং গোপালগঞ্জের বাসিন্দা হওয়াটাই সবচেয়ে বড়ো যোগ্যতা। ভিসি মীজানের এ উক্তিকে যদি সরকারের গোপন পরিকল্পনার বেফাঁস বহিঃপ্রকাশ বলে ধরে নেয়া হয়, তাহলে অবস্থাটা কী দাঁড়ায়? চাকরির ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দল বা বিশেষ কোনো জেলা বা উপজেলার বাসিন্দারা কী অগ্রাধিকার পেতে পারে?
বাংলাদেশের সংবিধান দেশটিকে জনগণের মালিকানাধীন করেছে। সংবিধানের ৭ এর (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ এবং জনগণের পক্ষে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল এই সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বে কার্যকর হইবে।’ ১৯ (১) অনুচ্ছেদে ‘সুযোগের সমতা’ বিষয়ে বলা হয়েছে- ‘সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করিতে রাষ্ট্র সচেষ্ট হইবেন।’ ২০(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- ‘কর্ম হইতেছে কর্মক্ষম প্রত্যেক নাগরিকের পক্ষে অধিকার, কর্তব্য ও সম্মানের বিষয়, এবং “প্রত্যেকের নিকট হইতে যোগ্যাতানুসারে ও প্রত্যেককে কর্মানুযায়ী”-এই নীতির ভিত্তিতে প্রত্যেকে স্বীয় কর্মের জন্য পারিশ্রমিক লাভ করিবেন।’ আর ২৯(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ-লাভের ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা থাকিবে।’ একই অনুচ্ছেদের (২) উপধারায় বলা হয়েছে-‘কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারীপুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিক প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ-লাভের অযোগ্য হইবেন না কিংবা সেই ক্ষেত্রে তাহার প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন করা যাইবে না।’
সংবিধান একটি রাষ্ট্রের জন্য অলঙ্ঘনীয় বিধানাবলীর নির্দেশক। রাষ্ট্র বা সরকারের প্রতিটি অঙ্গ সংবিধানের প্রতিটি বিধান অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতে বাধ্য। বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হলেও সেগুলোও সাংবিধানিক নিয়ম-নীতির দ্বারাই পরিচালিত হয়। রাষ্ট্রের বা প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য অঙ্গের মতো সাংবিধানিক রীতি-নীতি ও নির্দেশনা মেনে চলা একটি বিশ্ববিদ্যালয় বা এর ভিসি’র জন্য অবশ্য কর্তব্য। এ নিবন্ধে সংবিধানের যে ক’টি ধারা-উপধারার উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, জগনাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মীজানুর রহমান স্পষ্টতই সংবিধান লংঘন করেছেন। কেননা, তিনি ‘কর্মে’ নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যদের বঞ্চিত করে একটি বিশেষ গোষ্ঠী (ছাত্রলীগ) এবং একটি বিশেষ জেলার বাসিন্দাদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করেছেন। যার ফলে দেশের অন্য নাগরিক, যারা চাকরি প্রার্থী ছিলেন, তারা বঞ্চিত হয়েছেন। অর্থাৎ ভিসি মীজান তাদের প্রতি বৈষম্য করেছেন। তো সংবিধানিক বিধান লংঘনকারী একজন ব্যক্তি দেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত থাকার অধিকার ও যোগ্যতা রাখে কী না এ প্রশ্ন এড়িয়ে যাবার উপায় নেই। শুধু ভিসি মীজানুর রহমানই নয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে তার পূর্বে যিনি ভিসি ছিলেন, সে তিনিও একই কায়দায় ২০১২ সালে ৩১ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদে চাকরি দিয়েছিলেন।
এটা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় যে, দলের প্রতি আনুগত্যের পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করতে গিয়েই ভিসি মীজানুর রহমান সংবিধানের নির্দেশনা, ইউজিসি’র নিষেধাজ্ঞা এবং সব ধরনের নিয়ম-নীতির বরখেলাপ করে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের চাকরি দিয়েছেন। দলের প্রতি অন্ধ আনুগত্যের কারণেই যে তিনি নিয়ম-নীতির  বিষয়গুলো বিস্মৃত হয়েছেন তা বেশ বোঝা যাচ্ছে। কথায় আছে – প্রেমে পড়লে মানুষ অন্ধ হয়ে যায়, কেউ কেউ হয় উন্মাদ। দল প্রেমে গদ গদ হয়ে ভিসি মীজানুর রহমান যে খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন, বাংলাদেশের মানুষ তা অনেকদিন বিস্মৃত হবে না। সে সাথে এটা দলীয়করণের এক ন্যাক্কারজনক ঘটনা হিসেবেও চিহ্নিত হয়ে থাকবে।

লেখক ঃ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

mohon91@yahoo.com

প্রকাশ :মে ৪, ২০১৭ ৩:৩২ অপরাহ্ণ