তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান না থাকায় জিম্বাবুয়ের ভালো করার আশা দেখেছিলেন কাইল জার্ভিস। জিম্বাবুয়ে পেসারের এই আশা প্রস্তুতি ম্যাচেই ধাক্কা খেল। বিকেএসপিতে আজ বিসিবি একাদশের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছেন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। এতটুকুই কেবল আশার খবর জিম্বাবুয়ের জন্য। মাসাকাদজার ১০২ রানের সঙ্গে বাকি ১০ ব্যাটসম্যান মিলে যে যোগ করতে পারলেন ৭১ রান! জিম্বাবুয়ে ১৭৮ রানেই গুটিয়ে গেছে।
ধ্বংসযজ্ঞটা চালিয়েছেন ইবাদত হোসেন। পেসার হান্টের আবিষ্কার এই বোলার চার বলের ব্যবধানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। সব মিলিয়ে জিম্বাবুয়ের ইনিংসে তাঁর বোলিং ফিগার ৯-৩-১৯-৫। আরেক পেসার মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন ৩২ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ইবাদত রীতিমতো বুলডোজার চালিয়েছেন। শুরুতে তাঁর আঘাতেই মূলত ৪৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। ষষ্ঠ উইকেটে বাংলাদেশের চেনা দুই ‘শত্রু’ মাসাকাদজা আর হ্যামিল্টন চিগুম্বুরা মিলে ১২৪ রান যোগ করে পাল্টা আঘাতের শঙ্কা যেই না জাগিয়েছেন, আবার ইবাদত। ৪৫তম ওভারে টানা দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগালেন। হ্যাটট্রিকটা না হলেও চার বলের মধ্যে তুলে নিলেন তিন উইকেট।
জিম্বাবুয়ের ইনিংসে একাই লড়াই চালিয়ে গেছেন মাসাকাদজা। ১৪ চার ও ১ ছক্কায় ১৩৮ বলের ইনিংসটি দিয়ে ওয়ানডে সিরিজের প্রস্তুতি ঝালিয়ে নিলেন তিনি। কিন্তু বাকি ব্যাটসম্যানরা মুখ থুবড়ে পড়েছেন বিসিবি একাদশের পেস আক্রমণের সামনে। মাসাকাদজার পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর এলটন চিগুম্বুরার (৪৭)। বাকি নয়জনের স্কোর পাশাপাশি বসালে হয়ে যায় মোবাইল নম্বর! এর মধ্যে ‘ডাক’ মেরেছেন তারিসারি মুসাকান্দা আর তেম্বা মাভু্তা।
তৃতীয় ওভারেই ইবাদতের আঘাতে প্রথম ধাক্কা খেয়েছিল জিম্বাবুয়ে। ১ রান করা ক্রেগ আরভিন যখন ফিরছেন, স্কোরবোর্ডে মাত্র ৭ রান। পরের ওভারে সাইফউদ্দিন ফেরালেন ব্রেন্ডন টেলরকে। শুরু হয়ে গেল জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানদের যাওয়া–আসার মিছিল। নিজের চতুর্থ আর ইনিংসের সপ্তম ওভারে ইবাদত ফেরালেন শন উইলিয়ামসকে। মোহর শেখের আঘাতে সিকান্দার রাজাও ফিরলে ১০ ওভারের মধ্যেই জিম্বাবুয়ের ৪ ব্যাটসম্যান নেই। রান মাত্র ২৮। টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়ার সিদ্ধান্তটা তখন প্রশ্নবিদ্ধ।
উইকেটরক্ষক পিটার মুরকে নিয়ে প্রথমে উইকেট পতনে বাঁধ দেওয়ার চেষ্টা করলেন মাসাকাদজা। ১৯ রানের জুটিটা ১৬তম ওভারে গিয়ে ভাঙলেন ইমরান আলী, জিম্বাবুয়ে তখনো ৫০-ই তুলতে পারেনি। অর্ধেক ব্যাটসম্যান ফিরে এসেছেন সাজঘরে।
মাসাকাদজা-চিগুম্বুরা জুটির প্রতিরোধ এরপরই। ২৮ ওভার পার করে দিল এই জুটি। ৪৭/৫ স্কোরটা তখন ওই ৫ উইকেটেই ১৭১! জিম্বাবুয়ে ঝড় তোলার অপেক্ষায়। ৪৪তম ওভারে চিগুম্বুরাকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন সাইফ। তবে আসল কাজটা পরের ওভারে করলেন ইবাদত। ৪৫তম ওভারের তৃতীয় বলে মুসাকান্দাকে, পরের বলে মাভুতাকে ফিরিয়ে জাগিয়েছিলেন হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা। তা না হলেও ওভারটির শেষ বলে হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে তুলে নিয়ে নস্যাৎ করেছেন জিম্বাবুয়ের বড় স্কোরের সম্ভাবনা। ইবাদতের ৫ উইকেট হয়ে গেল। আর পরের ওভারে সাইফ তিরিপানোকে ফিরিয়ে তুলে নিলেন নিজের তৃতীয় উইকেট। এই দুজনেরই শিকার ৮ ব্যাটসম্যান।