সৌদি রাজপরিবারের কঠোর সমালোচক সাংবাদিক জামাল খাসোগির অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে তুরস্কের পুলিশ।
তুরস্কের সৌদি কনস্যুলেটে তল্লাশির পর এবার পাশ্ববর্তী জঙ্গল ও কৃষিজমিতে তার দেহের অনুসন্ধান চালানো হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
গত ২ অক্টোবর কিছু কাগজপত্র তোলার জন্য তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে ঢোকার পর নিখোঁজ হন খাসোগি। তার বান্ধবীর দাবি, তাকে কনস্যুলেটের বাইরে রেখে খাসোগি ভেতরে যান। কিন্তু তিনি আর বেরিয়ে আসেননি।
এরই মধ্যে রহস্য বাড়ছে এই সাংবাদিকের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে। বেশ চাপে পড়েছে সৌদি আরব। ক্রমেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গনেও।
তুরস্কের কর্মকর্তাদের ধারণা- হত্যা করা হয়েছে খাসোগিকে; তবে এমন অভিযোগ বারবারই অস্বীকার করে আসছে সৌদি আরব।
মার্কিন গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় খাসোগির মৃত্যুর হয়েছে-এমন স্বীকারোক্তির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। তবে এ নিয়ে সৌদির পক্ষ থেকে এখনও নিশ্চিত করে কিছু জানানো হয়নি।
নিখোঁজ খাসোগি রহস্য নিয়ে আলোচনার মধ্যেই মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও সৌদি আরব ও তুরস্ক সফর করেছেন।
এদিকে তুরস্কের পক্ষ থেকে খাসোগিকে হত্যার যে দাবি করা হয়েছে- সে বিষয়ে শক্ত তথ্য প্রমাণ হিসেবে তার রেকডিং চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এতথ্য জানিয়েছেন। ট্রাম্প বলেন, যদি এটি থেকে থাকে, আমরা তার রেকডিং চেয়েছি।
বৃহস্পতিবার নিখোঁজ হওয়ার আগে খাসোগির একটি লেখা প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন পোস্ট। ওই লেখায় তিনি মধ্যপ্রাচ্যে মুক্ত গণমাধ্যমের ভূমিকা ব্যাখা করেছেন। এ নিয়েও আলোচনা চলছে সর্বত্র।
৫৯ বছর বয়সী জামাল খাসোগি আল-ওয়াতান পত্রিকা ও সৌদি টিভির সাবেক সম্পাদক ছিলেন। তিনি এক সময় সৌদি রাজপরিবারের খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং ঊর্ধ্বতন সৌদি কর্মকর্তাদের উপদেষ্ট ছিলেন।
তবে তার কয়েকজন বন্ধুকে গ্রেফতার করার পর জামাল খাসোগি সৌদি আরব ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান এবং সেখান থেকে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় লেখালেখি চালিয়ে যাচ্ছিলেন ও বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন।
গত শুক্রবার তুরস্কের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সৌদি সরকারের নির্দেশে কনস্যুলেটের ভেতরে জামাল খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছে এবং এর পক্ষে অডিও ও ভিডিও প্রমাণ তাদের হাতে এসেছে।