মহাকাশবিজ্ঞানের ইতিহাসে আরেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। ৪১ বছর পর ইন্টারস্টেলার স্পেসে ঢুকতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার তৈরি ভয়েজার–২ নভোযান। গত আগস্ট মাস থেকে ভয়েজার–২ মহাকাশযান মহাজাগতিক রশ্মি বৃদ্ধির মুখে পড়েছে।
১৯৭৭ সালে মহাকাশে পাঠানো হয় এই যান। গবেষকেরা বলছেন, ভয়েজার–২ যে রশ্মির মুখোমুখি হয়েছে, তা সৌরজগতের বাইরে উদ্ভূত। এ রশ্মি থেকেই বোঝা যায়, মহাকাশযানটি ইন্টারস্টেলার স্পেসের কাছাকাছি পৌঁছেছে। বর্তমানে এটি হেলিওপজ এলাকা অতিক্রম করছে। ওই এলাকা সৌরঝড়ে তৈরি বুদ্বুদের প্রান্ত বা হেলিওস্ফেয়ার হিসেবে পরিচিত। এর আগে ২০১২ সালের মে মাসে ভয়েজার–১ নভোযানটিও একই ধরনের রশ্মির মুখোমুখি হয়েছিল। হেলিওস্ফিয়ারের বাইরের সীমানা, অর্থাৎ হেলিওপোজে পৌঁছানোর জন্য মহাকাশযানটির দিকে লক্ষ রাখছিলেন মহাকাশযানবিদেরা।
এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হেলিওস্ফেয়ার হলো সূর্যের চারপাশে ও গ্রহগুলোর চারপাশের সুবিশাল বুদ্বুদ, যা সৌর উপাদান এবং চুম্বকক্ষেত্র দ্বারা প্রভাবিত। ভয়েজার–১–এর পরে এটিই মানুষের তৈরি দ্বিতীয় মহাকাশ যান, যা ইন্টারস্টেলার স্পেসে ভ্রমণ করবে। বর্তমানে পৃথিবী থেকে ১৭ দশমিক ৭ বিলিয়ন কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে ভয়েজার–২। এ মহাকাশযান বৃহস্পতি (১৯৭৯), শনি (১৯৮১) ইউরেনাস (১৯৮১) ও নেপচুন (১৯৮৯) ভ্রমণ করেছে।
গবেষকেরা বলছেন, ভয়েজার–২–এর অবস্থান ও পরিভ্রমণপথ পৃথক। তাই এটি কখন সৌরজগৎ ছাড়িয়ে যাবে, তা ঠিক বলা যায় না। হেলিওস্ফেয়ারের সীমানা পরিবর্তিত হয়। সূর্যের ১১ বছরের চক্রে এ সীমানা পরিবর্তন হয়ে থাকে। তাই কবে নাগাদ সূর্যের বলয় থেকে ওই নভোযানটি বেরিয়ে যাবে, তা ঠিক বলা যায় না।
ক্যালিফোর্নিয়ায় নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির গবেষক এড স্টোন বলেছেন, আগস্টের শেষ দিক থেকেই কসমিক রে সাবসিস্টেম ভয়েজার–২ মহাজাগতিক রশ্মির বৃদ্ধি লক্ষ্য করে, যা গত বছরের থেকে ৫ শতাংশ বেশি।