২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ভোর ৫:০১

মিয়ানমার রাতারাতি মানচিত্র আংশিক সংশোধন করেছে

বাংলাদেশের তীব্র প্রতিবাদের পর রাতারাতি মিয়ানমার তাদের নতুন মানচিত্রের আংশিক সংশোধন করেছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছে।

বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনকে মিয়ানমার সরকার তাদের মানচিত্রে দেখানোর ঘটনায় দেশটির রাষ্ট্রদূতকে গতকাল রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ।

দ্বীপটির মালিকানা নিয়ে মিয়ানমারের মিথ্যাচারের কারণ সম্পর্কে দেশটির রাষ্ট্রদূত লুইন ওকের কাছে জানতে চায় বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলমের দপ্তরে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত লুইনকে তলব করা হয়।

রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম বলেন, মিয়ানমার মানচিত্রের রং অপরিবর্তিত রেখেছে। কিন্তু সেন্ট মার্টিনের জনসংখ্যাসংক্রান্ত তথ্য মুছে দিয়েছে।

খুরশেদ আলম জানান, কম্পিউটার বাটনে টিপ দিয়ে আগে যে–কেউ রাখাইন রাজ্যের পাশাপাশি সেন্ট মার্টিনের জনসংখ্যাসংক্রান্ত তথ্য দেখতে পেতেন। কিন্তু এখন তা নেই।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির কাছে এ ব্যাপারে সবশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন খুরশেদ আলম।

সংসদীয় কমিটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি নিয়ে তৎপর থাকতে সুপারিশ করেছে। পাশাপাশি মিয়ানমার এই অসত্য মানচিত্র অন্য কোনো ওয়েবসাইটে আপলোড করেছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে বলেছে কমিটি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা জানান, মিয়ানমারের শ্রম, অভিবাসন ও জনসংখ্যা মন্ত্রণালয়সহ দেশটির অন্তত তিনটি ওয়েবসাইটে সেন্ট মার্টিনকে তাদের মানচিত্রের অংশ হিসেবে দেখায়। এর প্রতিবাদে গতকাল দেশটির রাষ্ট্রদূতকে তলব করে বাংলাদেশ নিজেদের অবস্থান জানায়। আলোচনার একপর্যায়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত স্বীকার করেন, সেন্ট মার্টিনকে মিয়ানমারের ভূখণ্ড হিসেবে দেখানো ভুল হয়েছে।

বঙ্গোপসাগরের বুকে ভেসে থাকা সেন্ট মার্টিন দ্বীপ কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার একটি ইউনিয়ন। এর আয়তন ১৭ বর্গকিলোমিটার।

কূটনীতিকেরা জানান, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান ও ভারতের বিভক্তির সময় সেন্ট মার্টিন অন্তর্ভুক্ত হয় পাকিস্তানে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে এটি বাংলাদেশের অন্তর্গত। ১৯৭৪ সালে সেন্ট মার্টিনের ওপর বাংলাদেশের অধিকার স্বীকার করে নিয়েই বাংলাদেশের সঙ্গে সমুদ্রসীমা চুক্তি করে মিয়ানমার। ২০১২ সালে সমুদ্র আইনবিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল এক রায়ে সেন্ট মার্টিনকে বাংলাদেশের মানচিত্রে দেখিয়েছে।

প্রকাশ :অক্টোবর ৮, ২০১৮ ১২:০৪ অপরাহ্ণ