সৌন্দর্যে ছাওয়া ভুটানের চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামের আশপাশ। কিন্তু এখানেও বাংলাদেশের মেয়েদের মনে ছিল অদৃশ্য দুঃখের ছোপ। এখনও ৫০ দিন হয়নি ভারতের বিপক্ষে সাফের ফাইনালে হেরেছে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৫ দলের মেয়েরা। সেই ক্ষতে প্রলেপ দিলেন স্বপ্না-মাছুরারা। নেপালকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-১৮ নারী ফুটবল দল হলো সাফ চ্যাম্পিয়ন।
রোববার ভুটানের চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে অনূর্ধ্ব-১৮ নারী দল সাফ ফুটবলের ফাইনালে নেপালকে হারানোর প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নামে।শিরোপা জয়ই লক্ষ্য বলে ম্যাচের আগে জানান নারী দলের কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটন। তবে প্রথমার্ধে গোল করতে পারেনি কোন দল। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গোল দিয়ে এগিয়ে যায় বাংলাদেশের মেয়েরা। প্রথমার্ধে গোলাম রাব্বানী ছোটনের শিষ্যরা কিছুটা এলোমেলো ছিল। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই বাংলাদেশের মেয়েরা কাঙ্খিত গোল পেয়ে যায়। এগিয়ে যায় ১-০ গোলে। ওই গোলে নিশ্চিত হয় অনূর্ধ্ব-১৮ মেয়েদের সাফ ফুটবলের শিরোপা।
এর আগে ঢাকায় গত বছরের ডিসেম্বরে অনূর্ধ্ব-১৫ নারী সাফের চ্যাম্পিয়ন ছিল বাংলাদেশ। সেই পদচিহ্ন অনুসরণের সুযোগ ছিল এবার অনূর্ধ্ব-১৮ নারী দলের সামনে। সুযোগ ছিল গেল আগস্টে ভুটানের এই চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে অনূর্ধ্ব-১৫ মেয়েদের ভারতের কাছে হারের দুঃখ ভোলার। এমননি ২০১৬ সালে এই চাংলিমিথায় স্টেডিয়ামেই হেরে একপ্রকার নির্বাসনে গিয়েছিল মামুনুল ইসলামরা। মেয়েদের সামনে সুযোগ ছিল সেই দুঃখের স্মৃতিতে নতুন পদচিহ্ন আঁকার। অদৃশ্য কোন অভিশাপ থাকলে তাকে বিদায় করার। সেই সুযোগ দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছে গোলাম রাব্বানী ছোটনের শিষ্যরা।
ফাইনালে ভারত নেই বলে স্বস্তির হাওয়া ছিল স্বপ্নানের মনে। ফাইনালে ছোট বলে কোন প্রতিপক্ষে নেই সেটাও ভোলেননি মেয়েদের কোচ কিংবা তার শিষ্যরা। বয়সভিত্তিক আসরে কখনোই নেপাল বাংলাদেশের মেয়েদের হারাতে পারেনি। এটাও ছিল আত্মবিশ্বাসের খোরাক। নেপালের বিপক্ষে জিতে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হতে হবে ঠিক সেভাবেই খেলা শুরু করে মেয়েরা। প্রথমার্ধে বেশ কিছু আক্রমণও করে।
কিন্তু প্রথমার্ধে গোল হওয়ার মতো বড় কোন সুযোগ বের করতে পারেনি স্বপ্না-শামসুন্নাহাররা। তবে দ্বিতীয়ার্ধের ৪৯ মিনিটে ডিফেন্ডার মাছুরা পারভীন গোল করে দলকে লিড এনে দেন। পরে আর গোল করতে না পারলেও নিজেদের জাল অক্ষত রাখে মেয়েরা। দ্বিতীয়ার্ধের ওই একমাত্র গোলে নিশ্চিত হয় ফাইনালের শিরোপা।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৮ দলের এ ম্যাচে আলাদা স্বস্তি ছিল দ্রুত গতির স্বপ্না ইনজুরি কাটিয়ে ফেরায়। কেবল স্বপ্না নন, ভুটানের বিপক্ষে গোল করা সানজিদা, শামসুন্নাহাররাও ছিলেন দলে। তবে ফাইনালে গোল করে শিরোপা জয়ে অবদান রাখলেন মাছুরা। বয়সভিত্তিক সাফে বাংলাদেশের মেয়েরা এ নিয়ে জিতলো দুই শিরোপা। লিখলো বাংলাদেশের ফুটবলের আরেকটি ‘স্বস্তি’র গল্প।