নিজস্ব প্রতিবেদক:
২০০৩ সালে চাঁদপুরের মেঘনা নদীর মোহনায় এমভি নাসরিন-১ ডুবির ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ১৭ কোটি ১১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার আদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।
সোমবার হাইকোর্টের রায়ে নিহতদের প্রতি পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে এবং আহত অবস্থায় বেঁচে থাকাদের এক লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে।
হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সোমবার এ সংক্রান্ত জারি করা রুলের ওপর শুনানি শেষে রায় দেন।
শুনানিতে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) পক্ষে ছিলেন ড. কামাল হোসেন, অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী ও সুব্রত চৌধুরী। অন্যদিকে এমভি নাসরিন-১ এর মালিকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার, অ্যাডভোকেট রাফসান আলভী ও ইশরাত হাসান।
রায়ে নিহতদের প্রতি পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে এবং আহত অবস্থায় বেঁচে থাকা মানুষদের এক লাখ টাকা করে দিতে বলা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন লঞ্চমালিক কর্তৃপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসান।
চাঁদপুরের মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মোহনায় ২০০৩ সালের ৮ জুলাই এমভি নাসরিন-১ ডুবিতে ১১০ জনের মৃত্যু হয়। নিখোঁজ হন ১৯৯ জন। ওই দুর্ঘটনায় লঞ্চটির মালিকও নিহত হন।
একই বছর চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক লঞ্চডুবিতে ক্ষতিগ্রস্ত চারশ জনের তালিকা প্রকাশ করেন। সেই তালিকা অনুযায়ী নৌ-দুর্যোগ ট্রাস্টি বোর্ড নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়। যার পরিমাণ ৭০ লাখ টাকার ওপর।
কিন্তু নিহত ব্যক্তিদের দেয়া ক্ষতিপূরণ অপ্রতুল দাবি করে ২০০৪ সালে ঢাকার তৃতীয় জেলা জজ আদালতে নিহত ১২১ জনের পরিবারের পক্ষে ক্ষতিপূরণ মামলা করে ব্লাস্ট। মামলায় ২৮ কোটি ৯৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়।
২০১২ সালে সেই মামলা বদলি হয়ে ঢাকার ৭ম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে যায়। এ আদালত ২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি রায় দেন। রায়ে ৬০ দিনের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের ১৭ কোটি ১১ লাখ টাকা দিতে বিবাদীদের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়। পরে বিবাদীরা জেরা ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সুযোগ চেয়ে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন জানান। আদালত ওই আবেদন খারিজ করে ক্ষতিপূরণের রায় বহাল রাখেন।
ওই আদেশের বিরুদ্ধে বিআইডব্লিউটিএসহ বিবাদীপক্ষ ২০১৬ সালের ২৪ অক্টোবর হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন। হাইকোর্ট পরদিন নিম্ন আদালতের রায় কেন বাতিল ও রদ করা হবে না,তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।
ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট সে আবেদন খারিজ করে ক্ষতিপূরণের রায় দেন।
দৈনিক দেশজনতা/এন আর