২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৪:২৪
পলিথিনের বিকল্প পচনশীল সোনালি ব্যাগ তৈরির প্রকল্প উদ্বোধন করা হয় ২০১৭ সালের ১২ মে। ফাইল ছবি

পাটের ‘পলিথিন ব্যাগ’ আসছে বাজারে

অর্থনীতি ডেস্ক:
আগামী ছয় থেকে নয় মাসের মধ্যে পাটের ‘পলিথিন ব্যাগ’ বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হবে। পরিবেশবান্ধব ও সাশ্রয়ী এই ব্যাগ দেখতে পলিথিনের মতোই। তবে এতে পলি-ইথিলিন ব্যবহার করা হয় না। পাটের আঁশ থেকে পচনশীল এই পলিমার ব্যাগের পরীক্ষামূলক উৎপাদন চলছে অনেক দিন ধরেই। পুরোপুরি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের লক্ষ্যে যুক্তরাজ্যের ফুটামুরা কেমিক্যালের সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) করেছে বাংলাদেশ সরকার।

মঙ্গলবার চুক্তিতে সই করেন বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) সচিব এ কে এম তারেক এবং ফুটামুরা কেমিক্যালের পক্ষে কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক গ্রিমি কোউলহার্ড। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে চুক্তি সই শেষে এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, সোনালি আঁশ পাটের উৎপাদন ও বহুমুখী ব্যবহার উৎসাহিত করতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। কাঁচা পাট ও বহুমুখী পাটজাত পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি করা, পাটজাত পণ্য রফতানি ও অভ্যন্তরীণ ব্যবহার বাড়ানো ও পরিবেশ রক্ষায় পলিথিন বর্জনের ক্ষেত্রে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে পলিথিনের মতো পাটের তৈরি সোনালি ব্যাগ বাজারে আনা হচ্ছে। আগামী ছয় থেকে নয় মাসের মধ্যে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সোনালি ব্যাগ উৎপাদন শুরু হবে।

এমওইউ অনুযায়ী ফুটামুরা কেমিক্যাল কোম্পানি সোনালি ব্যাগ উৎপাদনে সব ধরনের কারিগরি সহায়তা দেবে। তবে পাট থেকে সেলুলোজ উৎপাদনের মাধ্যমে সোনালি ব্যাগ প্রস্তুত ও বাজারজাতের কাজটি করবে বিজেএমসি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাটকে বিশ্ববাজারে তুলে ধরতে জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি) এই ২৩৫ প্রকার পাটপণ্যের স্থায়ী প্রদর্শনী ও বিক্রয়কেন্দ্র চালু করেছে। পাটের ব্যবহার বহুমুখীকরণ ও উচ্চমূল্য সংযোজিত পাটপণ্য উৎপাদন, বাজারজাত করা ও ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে পাটকাঠি দিয়ে কালি উৎপাদনে চারকোল, উন্নতমানের কাপড় উৎপাদনে কাঁচামাল হিসেবে ভিসকোস, পাটপাতার পানীয়সহ নতুন নতুন বহুমুখী পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী, বিজেএমসির চেয়ারম্যান ড. মো. মাহমুদুল হাসান, বিজেএমসির উপদেষ্টা এবং সোনালি ব্যাগের আবিস্কারক বিজ্ঞানী ড. মোবারক আহম্মেদ খান, ফুটামুরা কেমিক্যালের গ্রুপ ম্যানেজার মার্টিন রিচার্ড কক রফি, অপারেশন ম্যানেজার অ্যান্ডিউ জেমস ডাক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশি বিজ্ঞানীর আবিস্কৃত পলিথিনের বিকল্প পচনশীল সোনালি ব্যাগ দেখতে প্রচলিত পলিথিনের মতোই হালকা-পাতলা ও টেকসই। পাটের সেলুলোজকে প্রক্রিয়াজাত করে এ ব্যাগ তৈরি করা হয়েছে। এই ব্যাগ মাটিতে ফেললে তা মাটির সঙ্গে মিশে যাবে। ফলে পরিবেশ দূষিত হবে না। বহন ক্ষমতাও পলিথিনের প্রায় দেড় গুণ এবং পলিথিনের মতোই স্বচ্ছ হওয়ায় খাদ্যদ্রব্য ও পোশাকশিল্পের প্যাকেজিং হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।

প্রকাশ :অক্টোবর ৩, ২০১৮ ১০:০৮ পূর্বাহ্ণ