২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১০:০৭

বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ নেই, তবে সতর্কতা রয়েছে : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে কোনো উদ্বেগ নেই, তবে সতর্কতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের এক যৌথসভায় তিনি একথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা ক্ষমতাসীন দল, আমাদের ভরা কলসি, ভরা কলসি নড়ে না। বিএনপির কলসি শূন্য, তাদের কলসি বেশি নড়াটাই স্বাভাবিক। তাই আমাদের উত্তেজিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। কারো উসকানিতে আমরা পা দেব না।’

তবে বিএনপির কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ এবং রাজনৈতিকভাবে না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তার সমুচিত জবাব দেওয়া হবে বলে জানান সেতুমন্ত্রী।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে দেশে কেউ নৈরাজ্য ও নাশকতা সৃষ্টি করতে চাইলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উদ্ভূত পরিস্থিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। আওয়ামী কারো সঙ্গে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে যাবে না। দেশের মানুষ আতঙ্কিত হয় এমন কোনো দলীয় কর্মসূচিও দেবে না।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা সুশৃঙ্খলভাবে সংগঠিত হচ্ছি এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করছি। সারা দেশে আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি অর্ধেক শেষ হয়েছে। সারা দেশে আমাদের দলীয় নির্বাচনী প্রস্তুতির কাজ চলছে। এ পরিস্থিতিতে কেন আমরা কারো উসকানিতে পা দেব?’

তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গে ট্রেনযাত্রা ও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সড়ক পথে সাংগঠনিক সফরে মানুষের যে ঢল দেখেছি, তাতে তারা নির্বাচনী মেজাজে রয়েছেন, তারা কোনো সহিংসতা দেখতে চায় না। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের রাজনীতি ও দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল এবং বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতিকে প্রত্যাখান করেছে।

কাদের বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী ১ অক্টোবর থেকে এক সপ্তাহ রাজধানীর বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড এবং সারা দেশের জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করব। রাস্তায় মানুষের দুর্ভোগ হয় এমন কোনো কর্মসূচি আমরাও করব না, কাউকে করতেও দেওয়া হবে না।’

বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে চাইলে তা করুক মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমরা এর পাল্টা কোনো কর্মসূচি দেব না।’ তবে তিনি রাজধানীসহ সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থানে থাকার আহ্বান জানান।

কেন্দ্রীয় ১৪ দলের আগামী শনিবারের কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় ১৪ দল পেশাজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছে। আগামী শনিবার সে কর্মসূচিকে আরও বড় পরিসরে করার জন্য রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে সমাবেশ করবে। এটা বিএনপির সঙ্গে কোনো পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নয়।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি একই দিনে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কর্মসূচির ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এখনো অনুমতি দেয়নি। আর তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুমোদন ছাড়া কোনো কর্মসূচি পালন করবেন তা তো হতে পারে না।

যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে বিএনপির ঐক্যের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই)-এর জরিপ অনুযায়ী বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা শতকরা ৬৬ ভাগ, আর আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা শতকরা ৬৪ ভাগ।

জনতার সিংহভাগকে বাদ দিয়ে কখনো কোনো জাতীয় ঐক্য হতে পারে না- উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে বিএনপির যে ঐক্য সেটা জনতার ঐক্য নয়, জাতীয় ঐক্য নয়। তাদের ঐক্য নেতায় নেতায় ঐক্য, জাতীয়তাবাদী সাম্প্রদায়িক ঐক্য। আর জামায়াতকে ছাড়া বিএনপি এক পা এগুতে পারবে না। কিন্তু যুক্তফ্রন্টের নেতারা শর্ত দিয়েছে যে জামায়াত থাকলে তারা বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করবে না।

সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, উপ দপ্তর সম্পাদক ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশিদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা মো. আবু কাওছার, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম ক্রীক, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রকাশ :সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৮ ৫:৪৯ অপরাহ্ণ