ক্রীড়া ডেস্ক:
ভারত ‘বধ’ করেই ফেলেছিল আফগানিস্তান। কিন্তু ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত টাই (সমতা) করে মাঠ ছেড়েছেন রশিদ খানরা। এ ম্যাচে হারলে আফগানিস্তান পরপর তিন ম্যাচে শেষ ওভারে হারের বিরল রেকর্ডই করে ফেলতো। আগের দুই ম্যাচে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ বিপক্ষে শেষ ওভারে হেরেছে তারা। কিন্তু ভারতের শ্বাস রুদ্ধ করে শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা টাই করতে বাধ্য করেছে রশিদ খানরা।
ভারতীয় অলরাউন্ডার রাভেন্দ্র জাদেজার হয়তো মাথা গুলিয়ে গিয়েছিল। না হলে দুই বলে এক রান নেওয়ার সমীকরণে তিনি বল তুলে মারার ঝুঁকি কেনো নেবেন। তিনি অবশ্য টি২০ বিশ্বকাপে মুশফিক-মাহমুদুল্লাহর সেই আউটের কথাও রশিদের বলে আউট হয়ে মনে করিয়ে দিয়েছেন। কতটা চাপে ছিলেন তাও প্রকাশ পেয়েছে। ম্যাচ শেষে প্রকাশ পেয়েছে জাদেজার হতাশাও।
শেষ ওভারে ভারতের জয়ের জন্য মোটে ৭ রান দরকার। দ্বিতীয় বলে একটা চার মেরে লক্ষ্য নাড়ালে নিয়ে এসেছেন জাদেজা। তৃতীয় ও চতুর্থ বলে নিয়েছেন সিঙ্গেল। জয়ের জন্য ভারতের শেষ দুই বলে ১ রান দরকার। স্ট্রাইকে জাদেজা। ড্রেসিং রুমে তো ভারত জয় উদযাপন শুরু করে দিয়েছিল। কিন্তু জাদেজা কি মনে রশিদ খানের পঞ্চম বলটা তুলে মারলেন। ক্যাচ হয়ে ফিরলেন তিনি। সঙ্গে ম্যাচ ’টাই’ করে ’জয়ের আনন্দ’ দিয়ে আসলেন আফগানিস্তানকে।
আবুধাবিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জিততে হলে অবশ্য রেকর্ড করতে হতো ভারতের। এর আগে শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে ২৫০ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড ছিল দুটি। প্রথমে মনে হচ্ছিল আফগানদের দেওয়া রান মামুলি বানিয়ে ফেলবে ভারত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আফগানরা বুঝিয়ে দিয়েছে কেনো তাদের স্পিনারদের বিশ্ব সেরা বলা হয়।
ভারতের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাটে নেমে করা ২৫২ রানেই রশিদ-মুজিব উররা অলআউট করে দিয়েছে ভারতকে। মোহাম্মদ শাহজাদের করা সেঞ্চুরির স্বার্থকতা দিয়েছেন তারা। মোহাম্মদ শাহজাদের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি এবং নবীর ফিফটিকে ওই রান তোলে আসগর আফগানের দল।
আফগানরা ৬৫ রানে প্রথম উইকেট হারায়। এরমধ্যে ৬০ রান করেন মোহাম্মদ শাহজাদ।তারপর ৮৪ রানের মাথায় আফগানদের ৪ উইকেট পড়ে যায়। কিন্তু ক্রিজে ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকেন শাহজাদ। তিনি একাই ভারতীয় বোলারদের কচুকাটা করেছেন। খেলেছেন ১১৬ বলে ১২৪ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। ছয় মেরেছেন ৭টি। এছাড়া ১১টি চার মেরেছেন তিনি। পরে মোহাম্মদ নবী ৫৬ বলে ৬৪ রানের দারুণ এক ইনিংস খেললে ভারতের সামনে ভালো লক্ষ্য দাঁড় করায় তারা।
জবাবে ব্যাট করতে নামা ভারত দুই ওপেনার লোকেশ রাহুল এবং আম্বাতি রাইডুর দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে কোন উইকেট না হারিয়ে শতরান তুলে ফেলে। দলীয় ১১০ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় ভারত। ফিরে যান রাইডু। এরপর ১২৭ রানে ফিফটি করে ফেরেন রাহুলও। দুই উইকেটে ১২৭ করা দলটি বাকি ৮ উইকেটে ১২৬ রান তুলতে পারেনি। অলআউট হয়ে গেছে ঠিক আফগানদের করা ২৫২ রানে।
আফগানদের হয়ে রশিদ খান, মোহাম্মদ নবী এবং আফতাব আলম দুটি করে উইকেট নেন। ভারতের হয়ে জাদেজা ৩টি এবং কুলদীপ যাদব নেন ২ উইকেট। ম্যাচ সেরা হয়েছেন মোহাম্মদ শেহজাদ।