অর্থনীতি ডেস্ক:
২০১৬ সালে শিল্প খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ৫৬ উদ্যোক্তাকে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বা সিআইপি মনোনীত করেছে সরকার।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে সিআইপিদের হাতে সিআইপি কার্ড ও ক্রেস্ট তুলে দেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। ভারপ্রাপ্ত শিল্প সচিব মো. আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
শিল্পমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, ব্যবসায়ীরা সঠিকভাবে এগিয়ে যাওয়ায় দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সরকার পরিকল্পিতভাবে সম্পদের সঠিক ব্যবহার করায় দেশ ২০২১ সালের আগেই মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে বলে আশা করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, সরকার নতুন শিল্প উদ্যোক্তা তৈরির জন্য পূর্ণ সহযোগিতা করছে। দেশে যে অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে সেখানে দেশীয় উদ্যোক্তারা সবার আগে স্থান পাবেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি হতে ৩ থেকে ৪ বছর লাগবে। এই অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে শিল্প কারখানা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ভাবতে হবে।
বিটিএমএ সভাপতি তপন চৌধুরী বলেন, শিল্প চালাতে প্রতিদিনই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়। সব সময় তা তুলে ধরা সম্ভব হয় না। বিশ্ব প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে।
পদাধিকারবলে সিআইপি (শিল্প) নির্বাচিতরা হলেন— এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ, এফবিসিসিআই ও বিসিআইর সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ, বিটিএমএ সভাপতি তপন চৌধুরী, বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ও বিকেএমইএ সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান, এফআইসিসিআইর সাবেক সভাপতি রূপালী চৌধুরী, বিডব্লিউসিসিআইর সভাপতি সেলিমা আহমাদ ও নাসিবের সভাপতি মির্জা নুরুল গণি শোভন।
বৃহৎ শিল্প (উৎপাদন) খাতে সিআইপি হয়েছেন ২০ জন। তারা হলেন— বিএসআরএম স্টিলসের চেয়ারম্যান আলী হোসাইন আকবর আলী, ইউনিভার্সেল জিন্সের এমডি মো. নাছির উদ্দিন, বিআরবি কেবলের এমডি পারভেজ রহমান, এসিআইর এমডি ড. আরিফ দৌলা, বিএসআরএমের এমডি আমের আলী হোসাইন, জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিক্সের এমডি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম (নোমান), কসমোপলিটন ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক তানভীর আহমেদ, আব্দুল মোনেম লিমিটেডের এমডি আবদুল মোনেম, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমসের এমডি প্রকৌশলী মো. আবু নোমান হাওলাদার, পাহাড়তলী টেক্সটাইল অ্যান্ড হোসিয়ারি মিলসের এমডি মির্জা সালমান ইস্পাহানি, ফারিহা নিট টেক্সের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মামুন ভূঁইয়া, এম আর এস ইন্ডাস্ট্রিজের এমডি মো. শামসুর রহমান, ভিয়েলাটেক্সের এমডি কে. এম. রেজাউল হাসানাত, সোহাগপুর টেক্সটাইলের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার, প্যাসিফিক জিন্সের পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের এমডি অঞ্জন চৌধুরী, পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালসের এমডি ডা. মোস্তাফিজুর রহমান, এনভয় টেক্সটাইলসের চেয়ারম্যান কুতুব উদ্দিন আহমেদ, বাদশা টেক্সটাইলের এমডি মো. বাদশা মিয়া ও মেঘনা সিমেন্ট মিলসের পরিচালক সায়েম সোবহান।
বৃহৎ শিল্প (সেবা) খাতের সিআইপি হয়েছে পাঁচজন। এরা হলেন— এসটিএস হোল্ডিংসের এমডি খন্দকার মনির উদ্দীন, নাভানা রিয়েল এস্টেটের ভাইস চেয়ারম্যান সাজেদুল ইসলাম, কনকর্ড রিয়েল এস্টেটের চেয়ারম্যান এস এম কামাল উদ্দিন, জিএমই এগ্রোর এমডি চৌধুরী হাসান মাহমুদ ও শেলটেকের এমডি ড. তৌফিক এম সেরাজ।
মাঝারি শিল্প (উৎপাদন) খাতে সিআইপি হয়েছেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী, প্রমি এগ্রো ফুডসের চেয়ারম্যান এনামুল হাসান খান, অকো-টেক্সের এমডি আব্দুস সোবহান, মাধবদী ডাইং অ্যান্ড ফিনিশিং মিলসের এমডি নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া লিটন, ফু-ওয়াং ফুডসের এমডি আরিফ আহমেদ চৌধুরী, অ্যাকোয়া মিনারেলের এমডি রামজুল সিরাজ, সিটাডেল এপারেলসের এমডি মো. মাহিদুল ইসলাম খান, জালালাবাদ ফ্রোজেন ফুডসের এমডি আব্দুল জব্বার মোল্লা, বসুমতি ডিস্ট্রিবিউশনের এমডি জেড এম গোলাম নবী, মোনেম ইগলু ফুডসের পরিচালক এএসএম মঈনউদ্দিন, বিআরবি পলিমারের এমডি মো. মজিবর রহমান, মোশাররফ স্পিনিং মিলসের এমডি মো. মোশাররফ হোসেন।
মাঝারি শিল্প ( সেবা) খাতে সিআইপি নির্বাচিত হয়েছেন তিনজন। তারা হলেন— স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্সের চেয়ারম্যান খান মো. আফতাব উদ্দিন, শান্ত প্রোপার্টিসের পরিচালক জেসমিন সুলতানা ও বিল্ডিং ফর ফিউচারের এমডি তানভিরুল হক প্রবাল।
ক্ষুদ্র শিল্প (উৎপাদন) খাতে সিআইপি হয়েছেন কিয়াম মেটালের এমডি মো. মিজবার রহমান, ফুজি ইংক ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ফারহানা মোনেম, আরএমএম লেদারের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন, রানার ব্রিকসের ভাইস চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন এবং সবজীয়ানার ডিএমডি মোহাম্মদ আবু শাহরিয়ার।
ক্ষুদ্র শিল্প (সেবা) খাতে কিউএনএস কনটেইনার সার্ভিসের চেয়ারম্যান নুরুল কাইয়ুম খান, মাইক্রো শিল্প খাতে টেকনোমিডিয়া এমডি যশোদা জীবন দেব নাথ এবং কুটির শিল্প খাতে এবি ফ্যাশন মেকারের স্বত্বাধিকারী সানাউল হক বাবুল সিআইপি হয়েছেন।
কার্ড পাওয়ার পর থেকে এক বছরের জন্য সিআইপিরা ব্যবসা সংক্রান্ত ভ্রমণের সময় বিমান, রেল, সড়ক ও জলপথে সরকারি যানবাহনে আসন সংরক্ষণের অগ্রাধিকার পাবেন। সহজে ভিসা পাওয়ার জন্য তাদের অনুকূলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট দূতাবাসকে ‘লেটার অব ইন্ট্রোডাকশন’ দেবে। বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ-২ ব্যবহারের সুবিধা এবং সচিবালয়ে প্রবেশের পাস পাবেন তারা। এ ছাড়া শিল্পবিষয়ক নীতিনির্ধারণী কোনো কমিটিতে সিআইপিদের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে সরকার। এ ছাড়া বিদেশে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বৈঠকের সুযোগ পাবেন সরকারি নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে।