অনলাইন ডেস্ক:
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩শ’ রান করেও হেরেছেন টাইগাররা। তাই ‘এ’ গ্রুপে কোনো পয়েন্ট ছাড়া ৪র্থ স্থানে অবস্থান করছে মাশরাফিরা। দ্বিতীয় ম্যাচে টাইগারদের প্রতিপক্ষ দল অস্ট্রেলিয়া।
সোমবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিটে খেলাটি শুরু হবে ওভালে।
গত ৬ বছরে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কোন ওয়ানডে খেলেনি বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত ১৯ ওয়ানডেতে দেখা মিলেছে মাত্র একটি জয়। সেটিও প্রায় ১২ বছর আগে ২০০৫ সালে এই যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ স্টেডিয়ামে। তাই সেই জয়টি বাংলাদেশ অধিনায়কের অনুপ্রেরণার কারণ হতে পারে। সেই ম্যাচে খেলা বর্তমান দলের একমাত্র সদস্যও তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিজেদের টিকিয়ে রাখতে এই ম্যাচে জয়ের কোন বিকল্প নেই টাইগারদের। তাই শেষ ম্যাচ হারের পরই তিনি বার্তা দিয়েছেন একক নয়, দলের সব বিভাগকেই উজাড় করে দিতে হবে।
বোলিং নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও অধিনায়ক মাশরাফি বিশ্বাস করেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বোলাররা নিজেদের প্রমাণ করতে পারবে।
মাশরাফি আরো বলেন, ‘বোলাররা সবাই চেষ্টা করেছে। তারা খারাপ বল করেনি, আমি চেষ্টা করেছি। রান আরো বেশি হলে হয়তো রান রেটের চাপ ওরা অনুভব করতো, তখন কিছু হতে পারতো। সেটা হয়নি। এমনকি সাকিব পর্যন্ত সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও কিছু করতে পারেনি। তবে আশা করি সামনের ম্যাচে আমাদের চেষ্টা সফল হবে।’
অস্ট্রেলিয়া নিজেদের প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছে। বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত পরিত্যক্ত হয়ে যায়। যে কারণে তারাও আজ জিততে মরিয়া থাকবে। এই কন্ডিশনটা অজিদের বেশ ভালোভাবে চেনা। প্রথম ম্যাচে তাদের বোলিংটা শুরুতে একটু খারাপ হলেও শেষ দিকে ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়ার পেসাররাই টাইগার ব্যাটসম্যানদের অন্যতম চ্যালেঞ্জ হবে।
তিনি বলেন, ‘শুধু ওভাল নয়, সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডে পেসাররা এখন এরকমই অসহায়। এজবাস্টনে দেখুন, মিচেল স্টার্ক সুবিধা করতে পারেনি। হেজেলউড শেষ ওভারে ৩টি নিয়ে ৬ উইকেট নিয়েছেন বটে, তবে শুরুতে রান দিয়েছেন অনেক। দক্ষিণ আফ্রিকা-ইংল্যান্ড সিরিজে কত কত রান হলো। ওদের পেস আক্রমণ তো আমাদের চেয়ে কত ভালো। তবু পারছে না। ইংল্যান্ডে সাড়ে তিনশও এখন নরম্যাল হয়ে গেছে।’ আজকের খেলাটি দিবা-রাত্রির। তাই কন্ডিশনটা ভিন্ন হতে পারে। আর টস জয়ও একটা ফ্যাক্টর হতে পারে। এ আসরের দুটি দিবা-রাত্রির ম্যাচের প্রথম এটি।
প্রথম ম্যাচে তামিম ইকবাল সেঞ্চুরি হাঁকান। সৌম্য, ইমরুল খুব ভালো কিছু করতে না পারলেও আজ তারা দলে থাকবেন। পরিবর্তন আসতে পারে একটিই। মোসাদ্দেক হোসেনকে বাদ দিয়ে খেলানো হতে পারে অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজকে। এছাড়াও রুবেল হোসেনকে বসিয়ে পরীক্ষা করা হতে পারে তাসকিন আহমেদকেও। তবে অধিনায়কের জন্য ঘুরে ফিরে সেই উইকেট ভাবনা।
তিনি বলেন, ‘বড় রানের ম্যাচ হলে আমাদের জন্য কাজটা কঠিন। যদি উইকেট একটু গ্রিপ করত, কিংবা যদি স্পোর্টিং হতো, ২৮০ বা ৩০০ রানের উইকেট হলে আমাদের দারুণ সম্ভাবনা থাকত। আমরা ওদের আটকে রাখতে বা তাড়া করতে পারতাম। কিন্তু সাড়ে তিনশর খেলা হলে আমাদের জন্য অনেক কঠিন।’ তবে উপায়ও খুঁজে বের করেছেন মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘উপায় আছে, ১০ ওভারে ৬০ বলের ৪০টিই ইয়র্কার করতে হবে! তবু দেখা যাবে ৫০ রান হয়ে গেছে। এসব উইকেটে আসলে ৫০ কেন, ৬০ রানও বেশ ভালো। ৫ বোলার ৬০ রান করে দেওয়া মানে ৩০০ রান, যেটি বেশ ভালো বোলিং। আমাদেরও সেটিই করতে হবে। একটু বৈচিত্র্য দিয়ে, ব্যাটসম্যান বুঝে জায়গামত বল ফেলে রানটা যত সম্ভব আটকে রাখতে হবে।’
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ দল শেষ ওয়ানডে খেলেছে ২০১১ সালে বাংলাদেশের মাটিতে। আর বিদেশের মাটিতে ২০০৮ সালে। এর মধ্যে টেস্ট খেলতে বাংলাদেশে আসার কথা থাকলেও নিরাপত্তা অজুহাতে সফর শুধু পিছিয়েছেই। যে কারণে দুই দলের বর্তমান ক্রিকেটারা মুখোমুখি হবার খুব কমই সুযোগ পেয়েছে। গত তিন বছরে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ এখন আইসিসির র্যাঙ্কিংয়ে ছয় নাম্বার দল। মাশরাফি বাহিনী এখন যেকোনো দলকে হারাতে পারে। তাই এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ফেবারিট হলেও টাইগারদেরও কেউ ছোট করে ভাববার চেষ্টা করবে না।
দৈনিক দেশজনতা /এমএম