ক্রীড়া ডেস্ক:
সাফ চ্যাম্পিয়নশীপ ফুটবলের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে আজ মাঠে নামছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে শক্তিশালী নেপালের মুখোমুখি হবে দুর্বার হয়ে ওঠা বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বের প্রথম দু’ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকলেও তা এখনো নিশ্চিত হয়নি। নেপালের বিপক্ষে জয় বা ড্র হলেই সেমির টিকিট নিশ্চিত করতে পারবে জেমি ডে’র শিষ্যরা।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টায়। এর অগে বিকেল ৪টায় ভুটানের বিপক্ষে লড়বে পাকিস্তান।
২০০৯ সালে সর্বশেষ সাফ চ্যাম্পিয়নশীপের গ্রুপ পর্বের বাঁধা টপকে সেমিফাইনাল খেলেছিলো বাংলাদেশ। এরপর আরো তিনবার সাফে অংশ নিয়ে গ্রুপ পর্ব থেকেই নিজেদের মিশন শেষ করে বাংলাদেশ। এবার অন্তত গ্রুপ পর্বের বাধাঁ টপকে যাওয়াই আসল লক্ষ্য তাদের, এটি বলার অপেক্ষা রাখে না। সেই লক্ষ্যের পূরণের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ।
ভুটানকে ২-০ গোলে হারিয়ে এবারের আসরে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ। ওই জয়ে উজ্জীবিত হয়ে উঠে তপু বর্মন-মাহবুবুর রহমনারা। এমন আত্মবিশ্বাস নিয়ে গ্রুপ পর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামে বাংলাদেশ। লক্ষ্য ছিলো এ ম্যাচেও জয় তুলে নেয়া।
কিন্তু ম্যাচ জিততে প্রয়োজন গোলের, সেই কাঙ্খিত গোলের স্বাদই নিতে পারছিলো না বাংলাদেশ। ৮৪ মিনিট পর্যন্ত গোলহীন কাটিয়ে দেয় বাংলাদেশ। তবে ৮৫ মিনিটে ভাগ্যদেবী মুখ তুলে তাকায় স্বাগতিকদের দিকে। পাকিস্তানের ডি-বক্সের কিছুটা দূরে থ্রো পায় বাংলাদেশ। বাঁ-দিক দিয়ে লম্বা থ্রো রাইটব্যাক বিশ্বনাথ ঘোষের। যেই থ্রো পৌঁছায় পাকিস্তানের গোলমুখের কাছাকাছি। বলটি মাটিতে পড়ার আগেই মাথা দিয়ে গোল আদায় করে তপু বর্মন। আগের ম্যাচে ভুটানের বিপক্ষেও গোল করেছিলেন তিনি। তপুর ওই গোলেই ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। ফলে ২ খেলায় ৬ পয়েন্ট নিয়ে এই গ্রুপের শীর্ষে বাংলাদেশ। পাশাপাশি সেমিফাইনালের দোরগোড়ায়ও। দু’ম্যাচ জিতেও সেমি নিশ্চিত না হবার পেছনে পয়েন্ট টেবিলের মারপ্যাচ রয়েছে।
কারণ, ২ খেলায় ৩ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে নেপাল। একই অবস্থা পাকিস্তানের। প্রথম দু’ম্যাচ হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়েছে ভুটান।
গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে নেপাল যদি বাংলাদেশকে এবং পাকিস্তান যদি ভুটানকে হারিয়ে দেয়, তখন পয়েন্ট টেবিলের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে তিন দলকে। সেক্ষেত্রে তিন দলের পয়েন্ট হবে সমান ৬। তখন গোল গড়ের হিসাবে দু’দল উঠবে সেমিফাইনালে। তাই সেমির টিকিট এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি বাংলাদেশ। অবশ্য এখন পর্যন্ত গোল গড়ে সমান অবস্থানে বাংলাদেশ ও নেপাল। পিছিয়ে রয়েছে পাকিস্তান। বাংলাদেশ ও নেপালের পক্ষে গোল রয়েছে ৩টি করে। পাকিস্তানের ভান্ডার শূন্য।
তবে এসব হিসাব-নিকাশের দিকে আগ্রহ নেই বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে’র। তার কথা বলার আকার-ইঙ্গিত তেমনই আভাস দেয়। পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের পর জেমি ডে বলেন, ‘এমন টানা দু’টি বা একটা ম্যাচ জয়ই সবকিছু নয়, আমাদের যেতে হবে অনেক দূর। ছেলেরা ১২ সপ্তাহ কঠিন পরিশ্রম করেছে। এটি তারই ফল।’
বাংলাদেশের কোচের চোখ বহু দূর। তাই হয়তো শক্তিশালী নেপালের বিপক্ষে আরও চমক দেখানোর ছক কষে রেখেছেন জেমি ডে। বাংলাদেশের ফুটবলের আকাশে কালো মেঘ, দু’ম্যাচ দিয়েই যখন সরিয়ে পেরেছেন তখন নয় বছর পর লাল-সবুজের দলকে শেষ চারে পৌঁছে দিতেও পারবেন জেমি। কারন তার সাথে তো আছেন ১১জন যোদ্ধা। যারা মাঠে গোলের জন্য লড়াই করেন এবং গোল পেলে যুদ্ধের মতো গুলি করে নিজেদের আনন্দ প্রকাশ করেন। যেমনটা পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে গোলের পর গোলদাতা অভিনয়ের মাধ্যমে গুলি করে সতীর্থদের পরাস্ত করেন।
তাই এমন জয়ের পিপাসায় ভুগছিলেন তপু। গোল করে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় এনে দেয়া তপু বলেন, ‘নিজেদের মাঠে খেলা। এমন জয় খুব বেশি দরকার ছিলো। এমন জয়ে আমরা সকলেই দারুন আনন্দিত।’