নিজস্ব প্রতিবেদক:
আজ আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস। মানুষকে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে এবং মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতি বছর দিবসটি পালন করা হয়।
এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য হল- ‘সাক্ষরতা অর্জন করি, দক্ষ হয়ে জীবন গড়ি।’ দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শোভাযাত্রা বের করা হবে। শিল্পকলা একাডেমিতে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী বাণী দিয়েছেন।
১৯৬৫ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো ৮ সেপ্টেম্বরকে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৬৬ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে প্রথম দিবসটি উদযাপন করা হয়।
প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে দেশে ১৯৭১ সালে সাক্ষরতার হার ছিল ১৬ দশমিক ৮ ভাগ। ১৯৯১ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৩৫ দশমিক ৩। এছাড়া ২০০১ সালে ৪৭ দশমিক ৯ ভাগ, ২০০৮ সালে ৪৮ দশমিক ৮ ভাগ ও ২০০৯ সালে ৫৩ ভাগ ছিল।
সাক্ষরতার হার নিয়ে ২০০২ সালে বিতর্ক দেখা দেয়। তখন এনজিও ছাড়াও সরকারি প্রতিষ্ঠান পৃথক তথ্য প্রকাশ করে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সাক্ষরতার হার ৬৫ ভাগ বললেও বিবিএস জানায় ১১ বছরোর্ধ্ব সাক্ষরতার হার ৪৬ দশমিক ১৫ ভাগ। আর গণসাক্ষরতা অভিযানের (ক্যাম্পে) মতে, ৭ বছরোর্ধ্ব শিশুদের সাক্ষরতার হার ৪১ দশমিক ৪ ভাগ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ব্যানবেইসের সংগৃহীত পরিসংখ্যান মতে, ১৯৯০ সালে সাক্ষরতার হার ছিল ৩৫ ভাগ, ১৯৯৫ সালে ৪৭ ভাগ, ২০০০ সালে ৬৪ ভাগ ও ২০০২ সালে ৬৫ ভাগ।
আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শতভাগ সাক্ষরতা অর্জন ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্য এবং নিরক্ষরতামুক্ত সোনার বাংলায় পরিণত করতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি-৪) মানসম্মত ও সার্বজনীন শিক্ষা নিশ্চিত করা এবং জীবনব্যাপী শিক্ষা প্রসারের অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে।
এটি বাস্তবায়নের জন্য বর্তমান সরকার সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ও ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, আমাদের সরকারের গৃহীত সাক্ষরতা ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা সংক্রান্ত উন্নয়ন কর্মসূচিগুলোর মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে দেশকে মুক্ত করে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য শিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদ অপরিহার্য। সরকার দেশের নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে সাক্ষরজ্ঞান প্রদানের লক্ষ্যে ‘মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্প (৬৪ জেলা)’ বাস্তবায়ন করছে। এর মাধ্যমে দেশের ১৫-৪৫ বছর বয়সী ৪৫ লাখ নিরক্ষর নারী-পুরুষ সাক্ষরতা অর্জন করবে।