নিজস্ব প্রতিবেদক:
বহুল আলোচিত সড়ক পরিবহন বিল-২০১৮ রাষ্ট্রপতির অনুমোদন ছাড়াই সংসদে পাঠিয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।
সংবিধান অনুযায়ী, কোনো বিল আইনে পরিণত হলে তা প্রয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের অর্থ ব্যয়ের সম্ভাবনা থাকলে সেই বিল সংসদে উত্থাপনের আগে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সেই অনুমতি না নেয়ায় সংসদ সচিবালয় থেকে তা ফেরত পাঠানো হয়েছে।
সংসদের আইন মন্ত্রণালয় সূত্র এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, এ অবস্থায় পরে সংসদ সচিবালয় থেকে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে বিলটি নতুন করে পাঠানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী কোনো বিল আইনে পরিণত হলে তা প্রয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের অর্থ ব্যয়ের সম্ভাবনা থাকলে সেই বিল সংসদে উত্থাপনের আগে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিতে হয়।
সংসদ সচিবালয়ের আইন শাখা পর্যালোচনা করে দেখেছে যে, সড়ক পরিবহন বিলের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয়ের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। বিষয়টি তারা মৌখিকভাবে মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে এবং নতুন করে বিলের নোটিশ পাঠাতে বলেছে।
বিলটি আসন্ন জাতীয় সংসদ অধিবেশনেই উত্থাপন করা হবে। ৯ সেপ্টেম্বর থেকে সংসদের অধিবেশন বসছে। বর্তমান সরকারের মেয়াদ ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি শেষ হবে। ডিসেম্বরের শেষে একাদশ সংসদ নির্বাচনের দিন নির্ধারণ করা হবে। সে হিসেবে জরুরি কোনো প্রয়োজন না পড়লে আগামী সংসদ অধিবেশনই চলতি সংসদের শেষ অধিবেশন হতে পারে। নভেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।
সূত্র জানায়, আইন অনুযায়ী প্রস্তাবিত কোনো আইন সংসদে উত্থাপনের আগে আইন মন্ত্রণালয় তা যাচাই-বাছাই করে থাকে। আইনে কোনো ধরনের ত্রুটি থাকলে তারা তা শুধরে দেয়। এ বিষয়ে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, এ ক্ষেত্রে ভুলটি করেছে আইন মন্ত্রণালয়। তবে সেটা বড় ধরনের কোনো ভুল নয়। কারণ অধিবেশন শুরু হতে এখনো কয়েক দিন বাকি। এই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে বিলটি সংসদে পাঠানো সম্ভব।
সংসদ সচিবালয় সূত্র জানায়, এই অধিবেশনে পাসের জন্য এখন পর্যন্ত তাদের কাছে ২১টি বিল রয়েছে। শেষ অধিবেশন বিবেচনা করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে আরও বেশ কয়েকটি বিল আসতে পারে। ২১টি বিলের মধ্যে সংসদীয় কমিটির সুপারিশ শেষে পাসের অপেক্ষায় আছে তিনটি বিল। নয়টি বিল যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সংসদীয় কমিটিতে আছে। বাকি নয়টি বিল আছে উত্থাপনের অপেক্ষায়।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় দুই কলেজশিক্ষার্থী নিহত হয়। পরের দিন থেকে রাজধানীর সড়কে অবস্থান করে বেপরোয়া বাস চালকের ফাঁসি, রাস্তায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালনা বন্ধসহ ৯ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। এরপর আইনটি চূড়ান্ত করে সাজা ও জরিমানা বাড়ানো হয়।