জেলা প্রতিনিধি:
নাটোরের লালপুর উপজেলার কদমচিলান কিলিক মোড় এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ জনের প্রাণহানির কারণ হিসেবে লেগুনাচালককে প্রাথমিকভাবে দায়ী করেছে অনুসন্ধানে আসা উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি। এছাড়াও দুর্ঘটনা কবলিত বাসটির ফিটনেস ছিল না বলে জানিয়েছে তারা।
কমিটির ভাষ্য, লেগুনা চালক আব্দুর রহিম ছিলেন অদক্ষ ও অল্পবয়সী। একটি ট্রাককে ওভারটেক করতে গিয়ে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার দুপুরে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের গঠিত ১০ সদস্যের কমিটির ৬ সদস্য নাটোরের লালপুরে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত কাজ শুরু করেন।
সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির অন্য সদস্য হলেন বিআরটিএর পরিচালক (অপারেশন) সিতাংশু শেখর বিশ্বাস, গাজীপুর হাইওয়ে পুলিশ সুপার শফিকুল ইসলাম, বুয়েটের সহযোগী অধ্যাপক ও দুর্ঘটনা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সদস্য কাজী মোহাম্মদ সিফান নেওয়াজ, ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ এর কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম আজাদ হোসেন এবং বৈশাখী টিভির হেড অব নিউজ অশোক চৌধুরী। তদন্ত কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং মানুষের সঙ্গে দুর্ঘটনা বিষয়ে কথা বলেন। এসময় তারা দুর্ঘটনাকবলিত বাসের ত্রুটি বিচ্যুতি অনুসন্ধান করেন।
তদন্ত দলের প্রধান শফিকুল ইসলাম দুর্ঘটনার জন্য প্রাথমিকভাবে লেগুনার চালককে দায়ী করেছেন। একই সঙ্গে চ্যালেঞ্জার বাসের ফিটনেস নেই বলে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় মৃত্যুহার কমাতে ট্রমা সেন্টার করা হবে। হাইওয়ে পুলিশকে অ্যাম্বুলেন্স দেওয়ার সুপারিশ করবে তদন্ত দল।
১০ কার্য দিবসের মধ্যে এই দুর্ঘটনা সম্পর্কে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলা হলেও এর আগেই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
পরে কমিটির সদস্যরা গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত শেষে প্রকৃত দোষীদের শাস্তি নিশ্চিতের পাশাপাশি সড়ক নিরাপদ করতে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করা হবে। এ সময় মহাসড়ক নিরাপদ রাখতে পরিবহন খাতের সংশ্লিষ্ট সকলের নজরদারিসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধের আহ্বান জানান তারা।
গত শনিবার পাবনা থেকে বগুড়াগামী চ্যালেঞ্জার পরিবহনের একটি বাস কদিমচিলান এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি লেগুনাকে সামনে থেকে চাপা দেয়। এতে দুই শিশু, ছয় নারীসহ ১০ জন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। পরে হাসপাতালে তিনজন ও এরপর আরও দুই জন মারা যান।
ওই দুর্ঘটনার পর লালপুর থানায় মামলা করেন বনপাড়া হাইওয়ে পুলিশের এএসআই ইউসুফ আলী।
পরে মঙ্গলবার দুপুরে বাসটির চালক মো. শামীম হোসেন বগুড়া জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করেন শ্রমিক নেতারা।