নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেছেন, বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়নি। কর্মীরা যাচ্ছেন এবং যাবেন। কর্মী পাঠানোর বর্তমান পদ্ধতি বন্ধ হলে আগের পদ্ধতিতে লোক যাবে।
আজ মঙ্গলবার সকালে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে রিপোর্টার্স ফর বাংলাদেশি মাইগ্রেন্টস (আরবিএম) আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।
সিন্ডিকেটের অনৈতিক ব্যবসার কারণে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার জিটুজি-প্লাস পদ্ধতি স্থগিত করছে মালয়েশিয়া। গত ২১ আগস্ট মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল ইন্দেরা খাইরুল দাজমি বিন দাউদের স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে জানানো হয়েছে যে, সে দেশের বিগত সরকার বাংলাদেশের যে ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সির মারফত শ্রমিক নিতো, তাদের এসপিএ সিস্টেম ১ সেপ্টেম্বর থেকে বাতিল হয়ে যাবে। এই ১০টি এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এর সঙ্গে মালয়েশিয়ার আগের সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একজন মালয়েশিয়ার নাগরিকও জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। এর প্রেক্ষিতেই বর্তমান পদ্ধতিতে আর কর্মী নেবে না তারা।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান পদ্ধতি বাতিলের বিষয়ে আনষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানায়নি মালয়েশিয়া। প্রকৃত অবস্থা জানতে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাই কমিশনকে দেশটির সংশিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। একটি ‘ভারবাল নোট’ বা চিঠি দেওয়া হচ্ছে। শিগগিরই প্রকৃত অবস্থা জানা সম্ভব হবে। তবে কর্মী যাচ্ছে এবং বর্তমান পদ্ধতি বাতিল হলে ১ সেপ্টেম্বরের পর থেকে অটোমেটিকালি পুরোনো পদ্ধতিতে যাবে। তবে এই পুরোনো পদ্ধতির বিস্তারিত কিছুই জানাননি মন্ত্রী।
ইতিমধ্যে যাদের মালয়েশিয়ার ভিসা হয়ে গেছে তারা মালয়েশিয়ায় যেতে পারবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রণালয়ের সচিব নমিতা হালদার বলেন, ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বর্তমান পদ্ধতি কাজ করবে। ২৫ থেকে ৩০ হাজার কর্মীর ভিসা হয়ে গেছে এই সময়ের মধ্যে তারা যেতে পারবেন।
মালয়েশিয়া ব্যবস্থা নিতে পারলেও বাংলাদেশ কেন এই সিন্ডিকেটের এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সিন্ডিকেট আমাদের পক্ষ থেকে হয়নি। এটা হয়েছে মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে। লিখিতভাবে আমাদের কাছে অভিযোগ আসলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।
তিনি বলেন, রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর বিষয়ে ডাটা সংগ্রহ চলছে। এসব ডাটা এক জায়গায় আসার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিগগিরই এসব এজেন্সির বিরুদ্ধে ‘শোকজ’ নোটিশ জারি করা হবে।
সাংবাদিক সম্মেলনে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী মন্ত্রীকে রীতিমতো প্রশ্নের তোপের মুখে পড়তে হয়। মালয়েশিয়ার সিন্ডিকেটের সঙ্গে মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য জড়িত রয়েছে এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার পরিবারের কেউ ‘ম্যান পাওয়ার’ এর ব্যবসা করে না, ঢাকাতেও আসে না, তারা অন্য ব্যবসা করে। এই ব্যবসা করে টাকা রোজগারের কোনো ইচ্ছাও নেই।
সাংবাদিক সম্মেলনে কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক সেলিম রেজা, আরবিএমের সভাপতি ফিরোজ মান্না, সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল হকসহ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।