নিজস্ব প্রতিবেদক:
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কেলেঙ্কারির ঘটনায় ৭ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় সেগুনবাগিচাস্থ দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদেরকে তলব করেছে দুদক।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে ২৩০ কোটি টাকার ১ লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা গায়েবের ঘটনায় বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আনিসুর রহমান গত ২৪ জুলাই ১৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। যার তদন্ত করছে দুদক।
তিনি বলেন, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কেলেঙ্কারির ঘটনায় করা মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির ৩২ কর্মকর্তাকে তলব করা হয়েছে। খনির মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড কন্ট্রাক্ট ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনের উপ-মহাব্যবস্থাপক নাজমুল হককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে দুদক কর্মকর্তারা।
দুদকের উপপরিচালক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সামসুল আলমের স্বাক্ষর করা চিঠিতে এসব কর্মকর্তাদের নির্ধারিত তারিখে দুদকে হাজির হতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে আজ (১৬ আগস্ট, বৃহস্পতিবার) ৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে।
তারা হলেন- খনির মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড কন্ট্রাক্ট ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনের উপ-মহাব্যবস্থাপক নাজমুল হক, কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপক শোয়েবুর রহমান ও সহকারী ব্যবস্থাপক মাহবুব রশিদ, প্রডাকশন ম্যানেজমেন্টের উপ-ব্যবস্থপক সাঈদ মাসুদ ও সহকারী ব্যবস্থাপক মো. মনিরুজ্জামান, মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড অপারেশনের উপ-ব্যবস্থাপক মাহাবুব হোসেন, ব্যবস্থাপক (স্টোর) দিদারুল কবির।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ আগস্ট কয়লা খনির সাবেক এমডি আমিনুজ্জামান, প্রকৌশলী খুরশিদ হাসান, প্রকৌশলী কামরুজ্জামান ও সাবেক জিএম (মাইনিং) মিজানুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গত ১ আগস্ট প্রতিষ্ঠানটির সাবেক এমডি এসএম নুরুল আওরঙ্গজেবকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক।
খনির বর্তমান জিএম (সারফেস ও অপারেশন) সাইফুল ইসলাম সরকারকে গত সোমবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এছাড়া সাবেক এমডি মাহবুবুর রহমান ও সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এবং সাবেক জিএম হিসাব (মাইনিং) মীর আবদুল মতিনকে সোমবার দুদকে তলব করা হলেও তারা হাজির না হয়ে সময়ের আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৮ আগস্ট ৮ জন, ২৯ আগস্ট ৮ জন এবং বাকি ৯ জনকে ৩০ আগস্ট দুদকে হাজির হতে বলা হয়েছে।
২৮ আগস্ট যাদের তলব করা হয়েছে তারা হলেন- মাইন অপারেশন বিভাগের ব্যবস্থাপক এটিএম নূর উজ-জামান চৌধুরী, স্টোর ডিপার্টমেন্টের উপ-ব্যবস্থাপক একেএম খালেদুল ইসলাম, মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের উপ-ব্যবস্থাপক মো. মোর্শেদুজ্জামান, প্রডাকশন ম্যানেজমেন্টের উপ-ব্যবস্থাপক হাবিবুবর রহমান, মাইন ডেভেলপমেন্টের উপ-ব্যবস্থাপক জাহেদুর রহমান, ভেন্টিলেশন ম্যানেজমেন্টের সহকারী ব্যবস্থাপক সত্যেন্দ্র নাথ বর্মন, নিরাপত্তা বিভাগের ব্যবস্থাপক সৈয়দ হাসান ইমাম ও মাইন প্লানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের উপ-মহব্যবস্থাপক জোবায়ের আলী।
২৯ আগস্ট যাদের তলব করা হয়েছে তারা হলেন- সদ্য সাবেক এমডি হাবিব উদ্দিন আহমদ, কোম্পানি সচিব আবুল কাশেম প্রধানীয়া, ব্যবস্থাপক (এক্সপ্লোরেশন) মোশাররফ হোসেন সরকার, ব্যবস্থাপক (জেনারেল সার্ভিসেস) মাসুদুর রহমান হাওলাদার, ব্যবস্থাপক (প্রডাকশন ম্যানেজমেন্ট) অশোক কুমার হালদার, ব্যবস্থাপক (মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন) আরিফুর রহমান, ব্যবস্থাপক (ডিজাইন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন) জাহিদুল ইসলাম ও উপ-ব্যবস্থাপক (সেফটি ম্যানেজমেন্ট) একরামুল হক।
৩০ আগস্ট যাদের তলব করা হয়েছে তারা হলেন- কোল অ্যান্ড হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্টের উপ-ব্যবস্থাপক খলিলুর রহমান, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (অর্থ ও হিসাব) আবদুল মান্নান পাটোয়ারি, মহাব্যবস্থাপক গোপাল চন্দ্র সাহা, হিসাব শাখার ব্যবস্থাপক সারোয়ার হোসেন, সেলস অ্যান্ড রেভিনিউ কালেকশন শাখার ব্যবস্থাপক কামরুল হাসান, মার্কেটিং অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেসের উপ-ব্যবস্থাপক নোমান প্রধানীয়া, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) একেএম সিরাজুল ইসলাম ও শরিফুল ইসলাম এবং নিরাপত্তা বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক আল আমিন।