আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইন্দোনেশিয়ার লম্বক দ্বীপে শক্তিশালী ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ৪৩০ জন প্রাণ হারিয়েছে। এক সপ্তাহেরও বেশি আগে ৬ দশমিক ৯ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে লম্বক দ্বীপে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে সোমবার নিশ্চিত করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
চলতি মাসের ৫ তারিখে প্রথম ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এরপর আরও দুই দফা ভূমিকম্পে স্থানীয় লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার দুপুরের পরে আঘাত হানা ৫ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে আতঙ্কিত লোকজন বাড়ি-ঘর থেকে রাস্তায় নেমে আসে।
ইন্দোনেশিয়ার ভূতাত্ত্বিক জরিপ জানিয়েছে, লম্বক দ্বীপ থেকে ৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর গভীরতা ছিল ১২ কিলোমিটার।
একের পর এক ভূমিকম্পে লম্বক দ্বীপ যেন মৃত্যু নগরীতে পরিণত হয়েছে। জীবন সেখানে থমকে গেছে। কয়েক দফা ভূমিকম্পে বহু মানুষ বাড়ি-ঘর এবং ভেঙে পড়া ইমারতের নিচে চাপা পড়েছে। ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকা পড়াদের উদ্ধারে এখন তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে। সে কারণে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভূমিকম্পে প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ বাস্তহারা হয়ে পড়েছে। এসব মানুষকে খাবার এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে দেশের সেনাবাহিনী এবং পুলিশের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার ন্যাশনাল ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি (বিএনপিবি)।
বিএনপিবির মুখপাত্র সুতোপো পুরো নুগরোহো জানিয়েছেন, সোমবার একটি কার্গো বিমানে করে ২১ টন সহায়তা পৌঁছেছে।
ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ প্রশমন সংস্থা জানিয়েছে, চলতি মাসের ৫ তারিখে আঘাত হানা ৬ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্পের পর থেকেই লম্বকের ভবনগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছিল। তাছাড়া এর আগে গত মাসের ২৯ তারিখে ৬ দশমিক ৪ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পেও অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ওই ভূমিকম্পও বিভিন্ন স্থাপণা ও বাড়ি-ঘরকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং অনেক ভবনই পুরোপুরি ধসে না পড়লেও অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছিল। ফলে চলতি সপ্তাহে কয়েক দফা ভূমিকম্পের আঘাতে দুর্বল স্থাপণাগুলো ধসে পড়ে।
রেড ক্রসের মুখপাত্র ক্রিসটোফার রেসি বলেন, আমরা এখনও দ্বীপের উত্তরাঞ্চলে প্রত্যন্ত কিছু এলাকার ক্ষয়ক্ষতি এবং হতাহতের সঠিক সংখ্যা জানার অপেক্ষায় আছি। তবে এটা নিশ্চিত যে গত ৫ তারিখে আঘাত হানা ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ভূমিকম্পের উপকেন্দ্রে পৌঁছানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে সাহায্য সংস্থাগুলো। এটি দ্বীপের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত এবং সেখানেই বেশিরভাগ আবাসিক এলাকা অবস্থিত। ধ্বংসস্তুপ, ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা-ঘাট এবং ভূমিধসের আশঙ্কায় সেখানে লোকজনের চলাফেরা করা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে।
দ্বীপটিতে প্রথম ভূমিকম্পটি আঘাত হানার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৪৩ বার পরাঘাত (আফটার শক) অনুভূত হয়েছে। ফলে তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযান ব্যহত হয়েছে।
রেড ক্রসের প্রতিনিধি হুসনি হুসনি শনিবার সিএনএনকে জানান, বহু লোক বাস্তুহারা হয়ে পড়েছে। আবার অনেকেই সুনামির আশঙ্কায় পাহাড়ি এলাকাগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে।