দেশ জনতা ডেস্ক : জাপানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ইয়োকোহামা। ছবির মতো সুন্দর। রাজধানী টোকিও থেকে ট্রেনে আধা ঘণ্টার পথ। ব্যস্ততম অথচ কোলাহলমুক্ত শহর। আজ বৃহস্পতিবার থেকে এ বন্দরনগরীতে শুরু হচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) বোর্ড অব গভর্নরসের ৫০তম বার্ষিক সভা।
সভা শুরুর আগের দিন গতকাল এশিয়ার অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফ করেন এডিবির প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়াসুউকি সাওয়াদা।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এক দশক ধরে ধারাবাহিকভাবে ভালো করছে। এডিবি মনে করে, এবার বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ। প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে বাংলাদেশকে অবকাঠামোতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। তার সংস্থা অবকাঠামোতে বাংলাদেশের বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়তা করছে।
তার মতে, বাংলাদেশের বড় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রধান কারণ তৈরি পোশাক খাত। রানা প্লাজা দুর্ঘটনা ও কিছু অস্থিরতার পরও এ খাত অনেক ভালো করছে। এ ছাড়া ওষুধ ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, চীনে মজুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের জন্য বাড়তি সুবিধা তৈরি হয়েছে। চীনের ছেড়ে দেওয়া বাজারে বেশি করে ঢুকতে পারবে বাংলাদেশ।
এর আগে পানিসম্পদের ওপর ব্রিফ করেন এডিবির উপ-মহাপরিচালক অ্যামি লিয়াং। তিনি বলেন, এশিয়ার পানি সংকট তীব্র হচ্ছে। বাংলাদেশসহ ২৯ দেশ পানি অনিরাপত্তায় ভুগছে। এর কারণে এ অঞ্চলের প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে। আগামী বছর পানিসম্পদে সাহায্য বাড়াবে এডিবি।
অ্যামি লিয়াং বলেন, তার সংস্থা এ সংকট মোকাবেলায় কাজ করছে। ২০১৬ সালে পানিসম্পদে ২৪০ কোটি ডলার অর্থায়ন করেছে এডিবি। ২০১৭ সালে এটি বেড়ে ৪২০ কোটি ডলার হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশও এ সহায়তা পাবে। তবে কী পরিমাণ সহায়তা পাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনই দেশভিত্তিক তথ্য বলা যাচ্ছে না। তবে বাংলাদেশ বর্তমানে পানিসম্পদ খাতে ঋণ পাচ্ছে। আগামী বছরও পাবে।
আজ সভা শুরু হলেও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে শনিবার। ওই দিন সকালে এডিবির বোর্ড অব গভর্নরসের সদস্যদের উপস্থিতিতে উদ্বোধন অনুষ্ঠান হবে। বোর্ড অব গভর্নরস হলো সংস্থাটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম। সেখানে এডিবির শেয়ারধারী ৬৭ দেশের প্রত্যেকের একজন প্রতিনিধি রয়েছে। এর ম?ধ্যে ৪৮ দেশ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের। গভর্নররা সংস্থার ১২ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচন করেন। বোর্ড অব গভর্নরস বছরে একবার আনুষ্ঠানিকভাবে মিলিত হয়। বার্ষিক সভা থেকে পরবর্তী এক বছরের জন্য এডিবি কীভাবে পরিচালিত হবে সে বিষয়ে নানা সিদ্ধান্ত হয়। প্রশাসনিক, আর্থিক ও পরিচালন কর্মকর্তারা কীভাবে সংস্থাটি পরিচালনা করবেন তার নির্দেশনা পান। এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ইস্যু নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে আলোচনার প্রধানতম ফোরাম এটি।
বাংলাদেশের প্রতিনিধি এডিবির গভর্নর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিকল্প গভর্নর অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব কাজী শফিকুল আজম। অর্থমন্ত্রী ও ইআরডি সচিব আসবেন আজ ভোরে। তারা উঠবেন সম্মেলন কেন্দ্রের কাছে রয়েল পার্ক হোটেলে। ৭০ তলা ল্যান্ডমার্ক টাওয়ারে অবস্থিত এ হোটেলে এডিবির বার্ষিক সভার কয়েকটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
এবারের বার্ষিক সভার বিষয়_ সবাই মিলে সমৃদ্ধ এশিয়া গড়ে তোলা। সদস্য দেশগুলোর অর্থমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিনিধি, বিভিন্ন বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, এনজিও ও গণমাধ্যমের প্রায় পাঁচ হাজার প্রতিনিধি সভায় যোগ দিচ্ছেন। – See more at: http://bangla.samakal.net/2017/05/04/289989#sthash.SJnePJmx.dpuf