x‘নিজস্ব প্রতিবেদক:
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব যেকোন পরিস্থিতি বুদ্ধিমত্তা, ধৈর্য্য ও সাহস নিয়ে দৃঢ়তার সাথে মোকাবেলা করতেন। বাংলার মানুষের মুক্তিসংগ্রামে প্রতিনিয়তই তিনি বঙ্গবন্ধুকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা এক অবিচ্ছেদ্য সত্ত্বা, এ সত্ত্বাকে কখনই পৃথক করা যাবে না। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বঙ্গমাতার অবদান অনস্বীকার্য। তিনি বুদ্ধিমত্তা, ধৈর্য্য ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞার যে দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন, তা যুগে যুগে বাঙ্গালি নারীদের জন্য অনুপ্রেণার উৎস হয় থাকবে।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৮৮তম জন্মবার্ষিকীতে আজ ‘উইমেন জার্নালিষ্ট নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ’ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ‘বাঙ্গালির মুক্তিসংগ্রামে ফজিলাতুন নেছা মুজিব’ শীর্ষক এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন। বক্তব্য রাখেন ফজিলাতুন নেসা বাপ্পী এমপি, সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার অধ্যাপক গোলাম রহমান, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা’র (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, সকালের খবরের সম্পাদক আজিজুল ইসলাম ভূইয়া।
ড. শিরীন শারমিন আরো বলেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের বৃদ্ধিমত্তা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, দৃঢ় মনোবল ও অসীম সাহস বঙ্গবন্ধুকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। রাজনৈতিক কারণে বারবার বঙ্গবন্ধুকে কারাবরণ করতে হয়েছে। জাতির পিতার অনুপস্থিতিতে তিনি দলকে মূল্যবান পরামর্শ দিতেন। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের রোগে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, কারাগারে আটক নেতা-কর্মীদের খোঁজ-খবর নেওয়া ও পরবিার-পরজিনদরে যেকোন সংকটে পাশে দাঁড়াতেন তিনি। ইতিহাসে তাই শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব কেবল একজন সাবেক রাষ্ট্রনায়কের সহধর্মিণীই নন, বাঙ্গালির মুক্তি সংগ্রামে অন্যতম এক স্মরণীয় অনুপ্ররেণাদাত্রী। শেখ মুজিবুর রহমান বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠার পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা এ মহিয়সী নারীর। তিনি আমাদের অহংকার।
ফজিলাতুন্নেছা বাপ্পী বলেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন নিবেদিত প্রাণ সহধর্মীনি, মমতাময়ী মা, দক্ষ সংগঠক এবং দূরদৃষ্টি সম্পন্ন এক মহিয়সী নারী। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও পারিবারিক বিপর্যয়ে তিনি দৃঢ়চিত্তে যে ধৈর্য্য ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে মোকাবেলা তা এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। তিনি বঙ্গমাতার জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
অধ্যাপক গোলাম রহমান বলেন, বাংলার মানুষের স্বাধিকার আন্দোলনে এবং মুক্তিযুদ্ধে এই মহিয়সী নারীর ভূমিকা অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। বঙ্গবন্ধুর সার্বক্ষণিক সহযাত্রী থেকে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বঙ্গমাতার প্রভাব সুস্পষ্ট।
সভাপতির ভাষণে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় পাওয়া যায় ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের আগেকার পরিস্থিতি বিশ্লেষণে। তখন বিভিন্নজন বাসায় এসে বিভিন্ন কথা বলছিলেন। বঙ্গমাতা বললেন, কারো কথায় নয়, তোমার মন যা বলে তুমি তাই বলবে। এতোদিন ধরে তুমি যে রাজনীতি করেছো, যাদের জন্য জীবনে এতো কষ্ট করেছো, শুধু তাদের কথা মনে রেখো।
এসময় তিনি আগামীদিনে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বঙ্গমাতার জীবনকে আদর্শ হিসেবে ধারণ করার জন্য নারী সমাজের প্রতি আহবান জানান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি শাহনাজ মুন্নী। সঞ্চালনা করেন উইমেন জার্নালিষ্ট নেটওয়ার্ক-এর সাধারণ সম্পাদক আঙ্গুর নাহার মন্টি।