বিশেষ প্রতিবেদক:
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একেবারে শেষের দিকে ৬ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী জাপানের হিরোশিমা শহরের উপর লিটল বয় নামের নিউক্লীয় বোমা ফেলে। মুহূর্তের মধ্যে চমৎকার ঝকঝকে শহরটি পরিণত হয় মৃত্যুকূপে।
লিটল বয় শীর্ষক বোমাটির ওজন ছিল ৬০ কেজি। নিজস্ব গন্তব্যে পৌঁছতে এটি সময় নেয় ৫৭ সেকেন্ড। এই সময়ে এটি অতিক্রম করে ৬০০ মিটার দূরত্ব। এ বিস্ফোরণটি ঘটে ১৩ কিলোটন (tnt)-এর সমান এবং সে সময় তাপমাত্রা হয়েছিল ৩৯০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বিশ্বজুড়ে কলঙ্কিত সেই হামলার ৭৩ বছর পর আজও আমাদের কাছে এ সম্পর্কিত অনেক তথ্যই অজানা রয়ে গেছে।
চলুন জেনে নেই হিরোশিমায় ‘লিটল বয়’ হামলার কিছু অজানা তথ্য-
১. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে এই বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় এক লক্ষ চল্লিশ হাজার মানুষের। বেসরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা প্রায় আড়াই গুণ। শহরের নব্বই শতাংশ বাড়ি একেবারে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
২. হিরোশিমা বিস্ফোরণে বেঁচে যান সুতোমু ইয়ামাগুচি নামে এক ব্যক্তি। এরপর নাকি কাজে যোগ দিতে ট্রেন ধরে নাগাসাকিও পৌঁছান তিনি। ৯ অগস্ট নাগাসাকি বিস্ফোরণ থেকেও বেঁচে যান তিনি।
৩. মার্কিন যুদ্ধবিমান ‘এনোলা গে’র শরীর থেকে আকাশ কালো করে নেমে এসেছিল সাক্ষাৎ মৃত্যু।
৪. ‘এলোনা গে’র ১২ জন সদস্যের মাত্র তিন জন এই অভিযানের আসল কারণটা জানতেন।
৫. সেই সময় আমেরিকা যতটা ইউরেনিয়াম জোগাড় করতে পেরেছিল, তার পুরোটাই নাকি বোমা বানাতে খরচ করেছিল।
৬. মাত্র ০.৭ গ্রাম ইউরেনিয়ামের কারণেই সবচেয়ে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয় বলে জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। এক ডলারের নোটের চেয়েও হালকা একটা পদার্থের কারণে এক ধাক্কায় প্রাণ হারান ৮০ হাজার মানুষ।
৭. বিস্ফোরণের আগে লিফলেট ফেলে সতর্ক করা হয়েছিল হিরোশিমাবাসীকে। যাতে তারা নিরাপদ এলাকায় চলে যেতে পারেন। ১৫ মিনিট অন্তর রেডিওতে সতর্ক করা হয়েছিল।
৮. হিরোশিমা হামলার পরেও লিফলেট ফেলে নাকি বলা হয়েছিল, মাত্র একটা বোমাই ফেলা হয়েছে! সতর্ক করা হয়েছিল নাগাসাকির বাসিন্দাদেরও।
৯. হিরোশিমা থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে ছিলেন শিগেকি তানাকা। বয়স ১৩। বোমা ফেলা দেখেছিলেন, বোমার শব্দও পেয়েছিলেন।
১০. বিস্ফোরণের কয়েক সপ্তাহ পর ধ্বংসলীলার রঙিন ভিডিও ফুটেজ তুলে রেখেছিল আমেরিকা। মার্কিন সেনাবাহিনী এ কথা গোপন করেছিল। ২০১১ সালে এই তথ্য প্রকাশ্যে আসে।
১১. মতাইকোকু ব্যাঙ্কের একটা ভল্টের কোনরকম ক্ষতি হয়নি এই বিস্ফোরণে। আমেরিকার একটি সংস্থার তৈরি ছিল ওই ভল্ট!