২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৪:৩০

জন্মদিনে ফিরোজাকে গুগল ডুডলের স্মরণ

বিশেষ প্রতিবেদক:
ভারতীয় উপমহাদেশের প্রখ্যাত নজরুলসঙ্গীত শিল্পী ফিরোজা বেগমের ৮৮তম জন্মদিনে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ডুডল করেছে সার্চজায়ান্ট গুগল। গুগলের হোমপেজ খুললেই আপনার চোখে পড়বে মাইক্রোফোনের সামনে একটি মুখ। গুগলে লেখাটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সোনালি রঙে।

শনিবার প্রথম প্রহর থেকেই গুগলের হোমপেজে এ ডুডল দেখতে পাচ্ছেন ব্যবহারকারীরা। আজ তার ৮৮তম জন্মবার্ষিকী।

গুগল তাদের ডুডল পাতায় ফিরোজা বেগমের জীবন-সম্পর্কিত তথ্য তুলে ধরেছে। এ ছাড়া ডুডলের ওপর ক্লিক করলে ফিরোজা বেগমসংক্রান্ত তথ্য পাতায় নিয়ে যাচ্ছে।

গুগল ডুডল পাতায় লিখেছে, ফিরোজা বেগম ছিলেন এ উপমহাদেশের একজন বরেণ্য ও কিংবদন্তি নজরুল সংগীতশিল্পী। ফিরোজা বেগমের জন্ম ১৯৩০ সালের ২৮ জুলাই ফরিদপুরের গোপালগঞ্জ মহকুমার (বর্তমান জেলা) রাতইল ঘোনাপাড়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম জমিদার পরিবারে। তার বাবার নাম খান বাহাদুর মোহাম্মদ ইসমাইল এবং মায়ের নাম বেগম কওকাবুন্নেসা। শৈশবেই তার সঙ্গীতের প্রতি অনুরাগ জন্মে।

১৯৫৪ সাল থেকে কলকাতায় বসবাস করতে শুরু করেন। ১৯৫৫ সালে সুরকার, গায়ক ও গীতিকার কমল দাশগুপ্তের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকায় ফিরে আসেন। এ দম্পতির তিন সন্তান – তাহসিন, হামীন ও শাফীন রয়েছে। হামিন ও শাফিন – উভয়েই রকব্যান্ড দল মাইলসের সদস্য।

১৯৪০-এর দশকে তিনি সঙ্গীত ভুবনে পদার্পণ করেন। ফিরোজা বেগম ষষ্ঠ শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে গানে কণ্ঠ দেন। ১৯৪২ সালে ১২ বছর বয়সে বিখ্যাত গ্রামোফোন কোম্পানি এইচএমভি থেকে ৭৮ আরপিএম ডিস্কে ইসলামী গান নিয়ে তার প্রথম রেকর্ড বের হয়। কিছুদিন পর কমল দাশগুপ্তের তত্ত্বাবধানে উর্দু গানের রেকর্ড হয়। এ রেকর্ডের গান ছিল- ‘ম্যায় প্রেম ভরে, প্রীত ভরে শুনাউ’ আর ‘প্রীত শিখানে আয়া’।

১০ বছর বয়সে ফিরোজা বেগম কাজী নজরুলের সান্নিধ্যে আসেন এবং তার কাছ থেকে তালিম গ্রহণ করেন। নজরুলের গান নিয়ে প্রকাশিত তার প্রথম রেকর্ড বের হয় ১৯৪৯ সালে। কাজী নজরুল অসুস্থ হওয়ার পর ফিরোজা বেগম নজরুলসঙ্গীতের শুদ্ধ স্বরলিপি ও সুর সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ৩৮০টির বেশি একক সঙ্গীতানুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন প্রখ্যাত এই সঙ্গীত শিল্পী। নজরুলসঙ্গীত ছাড়াও তিনি আধুনিক গান, গজল, কাওয়ালি, ভজন, হামদ ও নাতসহ বিভিন্ন ধরনের সঙ্গীতে কণ্ঠ দিয়েছেন। জীবদ্দশায় তার ১২টি এলপি, ৪টি ইপি, ৬টি সিডি ও ২০টিরও বেশি অডিও ক্যাসেট প্রকাশিত হয়েছে।

ফিরোজা বেগমের সুরের জাদু আর অনন্য গায়কি প্রতিভা তাকে করেছে চিরভাস্বর। গুগল লিখেছে, ফিরোজা বেগমকে নিয়ে ডুডলটি তৈরি করেছেন তাদের ডুডলার অলিভিয়া হুন। ওয়াটার কালার পেপারের ওপর পেইন্ট করা ছবিতে শিল্পী শ্রোতাদের গান শোনাচ্ছেন—এ দৃশ্য ফুটে উঠেছে। এটি অ্যালবামের কাভারের মতো করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

গুগলের এই ডুডলটি শুধু বাংলাদেশ থেকেই দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন দিবস, ব্যক্তি ও ঘটনার স্মরণে গুগল তাদের হোম পেজে বিশেষ লোগো ফুটিয়ে তোলে, যা ডুডল হিসেবে পরিচিত। এর আগে বাংলাদেশের বিভিন্ন দিবস ও ব্যক্তির স্মরণে এ ধরনের ডুডল প্রকাশ করে গুগল।

প্রকাশ :জুলাই ২৮, ২০১৮ ২:৩৯ অপরাহ্ণ