নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির বিরুদ্ধে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে পাল্টা অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপি মহাসচিব বলছেন, সরকারই ইতিহাস বিকৃতি করছে।
মঙ্গলবার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার কর্মময় জীবনের ওপর বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছিলেন ফখরুল।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর নানা ঘটনাপ্রবাহে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় চলে আসেন সে সময়ের সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান। আর ক্ষমতায় থেকে তিনি গঠন করেন বিএনপি।
১৯৮১ সালের ৩০ মে এক ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে গুলিতে নিহত হন জিয়াউর রহমান।
প্রয়াত নেতার স্মরণে এবার ১০ দিনের কর্মসূচি নিয়েছে বিএনপি, যা শুরু হয়েছে গত ২৫ মে।
মঙ্গলবারের কর্মসূচিতে ফখরুল বলেন, ‘জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। তাকে খাঁটো করবার জন্য বিকৃত ইতিহাস তুলে ধরা হচ্ছে।’
বিএনপি নেতার দাবি, ১৯৭১ সালে আওয়ামী লীগের ‘ব্যর্থতার কারণে’ জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। আবার তিনি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন, যখন আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র পরিচালনায় ‘ব্যর্থ’ হয়েছিল।
‘এই আওয়ামী লীগ যারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল, একদলীয় শাসন বাকশাল কায়েম করেছিল, সমস্ত পত্রপত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিল।’
‘যারা জিয়াউর রহমানকে হত্যা করেছিল তারাই আজ মিথ্যা মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখেছে।’
‘আজকে জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকীতে আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা করতে, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে নতুন করে শপথ নিতে হবে। দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।’
চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের নিন্দা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘মাদকের নামে পাখির মত মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। তারা মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না, সমাজকে মাদক থেকে সেভ করতে পারছে না।’
বিএনপি কিছু শর্তসাপেক্ষে আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে জনিয়ে ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন তো আমরা অবশ্যই চাইব। কিন্তু তার আগে সর্বপ্রথম বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।’
‘সরকারের কথায় আইন পরিবর্তনকারী নির্বাচন কমিশনকে বাতিল করে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।’
‘এবং স্পষ্ট করে বলতে চাই- বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া কোনো নির্বাচনে আমরা যাব না।’
আলোচনা সভায় সভাপতি ছিলেন ফখরুল। আর প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ। তিনি ২৯টি বইয়ের রেফারেন্স দিয়ে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন বলে দাবি করেন।
মোশাররফ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে যারা অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন এসব তাদের লেখা।’
‘আওয়ামী লীগ জিয়াউর রহমানের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করতে ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু তিনি মানুষের মনে যেভাবে জায়গা নিয়ে আছেন সেভাবেই থাকবেন।’
সংসদ ভেঙে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি করে নির্বাচনের জন্য আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়ারও আহ্বান জানান মোশাররফ।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর পরিচালনায় আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন- মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান প্রমুখ।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ