নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীতে ইয়াবা পাচারে রোহিঙ্গা শিশুদের ব্যবহারের প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। এ জন্য শিশুদেরকে জীবনের ঝুঁকিতেও ফেলা হতো। স্কচটেপ দিয়ে ইয়াবার বড় আকারের ক্যাপসুল বানিয়ে, তা শিশুদের গিলে খাওয়ানো হতো। এরপর ঢাকায় আসার পর তা পেট থেকে বের কর হতো।
ধরা পড়া দুটি শিশুর একটি শিশু একেকটি চালানে ৩৫০০ এবং আরেকটি শিশু ১৫০০ করে ইয়াবা বড়ি ঢাকায় নিয়ে এসেছে। আর ইয়াবার ক্যাপসুল গেলা থেকে শুরু করে রাজধানীতে আানর পর তা বের করে আনার পুরো প্রক্রিয়াটিই যন্ত্রণাদায়ক।
আজ সকাল সাড়ে ১১টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিং এ ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ( ডিবি) দেবদাস ভট্টাচার্য্য।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ২৭ মে রাজধানীর দক্ষিণখান থানা এলাকা থেকে ছয় জনকে ইয়াবাসহ আটক করেন গোয়েন্দারা। তাদের মধ্যে দুইজন রোহিঙ্গা। তারা পাকস্থলীতে ইয়াবা বহন করে কক্সবাজার থেকে ঢাকায় নিয়ে আসত।
গ্রেফতারকৃতরা হল- রোহিঙ্গা মোঃ সেলিম মোল্যা, রোহিঙ্গা মোঃ আফছার ওরফে বাবুল, মোঃ মামুন শেখ, মোঃ শরিফুল, মোঃ ফাহিম সরকার ও মোঃ রাজিব হোসেন। গত ২৭ মে’ ২০১৮ তারিখ বিকাল ১৭.১৫ টায় দক্ষিণখান থানাধীন পূর্ব গাওয়াইর এলাকা হতে ৩৩৫০ পিচ ইয়াবাসহ তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক মামুন শেখ জানান, তিনি এবং তার সহযোগী রেজোয়ান দীর্ঘদিন ধরে এই কৌশলে ইয়াবা পাচার করে আনছেন।
রেজোয়ান কক্সবাজারে বাসা ভাড়া নিয়ে ইয়াবা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠান এবং মামুন শেখ ঢাকায় সে বড়ি গ্রহণ করেন।
দেবদাস ভট্টাচার্য জানান, রেজোয়ান মাদক মামলার পলাতক আসামি। তার সঙ্গেই আটক দুই রোহিঙ্গা নাগরিকের পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে রেজোয়ান উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের দুই শিশুকে টাকার বিনিময়ে এভাবে পাকস্থলিতে করে ঢাকায় ইয়াবা নিয়ে আসার প্রস্তাব দেন।
এতে দুই শিশু রাজি হলে রেজোয়ান ৫০টি করে করে ইয়াবা বড়ি স্কচটেপ দিয়ে পেঁচিয়ে ক্যাপসুলের মতো তৈরি করেন। এ রকম ৭০টি ক্যাপসুল একটি শিশুকে এবং ৩০টি ক্যাপসুল অন্য একটি শিশুকে পানি দিয়ে গেলান।
এরপর বাস বা ট্রেনে দুই শিশুকে নিয়ে আসা হতো রাজধানীতে। এভাবে বাসে তিন থেকে চারটি চালান আনা হতো।
আটকর মামুন পুলিশকে জানান, ইয়াবার চালান আনার সময় যাত্রা পথে শিশুদেরকে কোনো খাবার বা পানি পান করতে দেয়া হতো না। ঢাকায় আসার পর বিশেষ ওষুধ সেবন করিয়ে পাকস্থলী থেকে পায়ু পথে বের করে আনা হতো ইয়াবা।
প্রতি চালানের জন্য একটি শিশুকে ১৫ হাজার এবং অন্যজনকে ১০হাজার টাকা দেয়া হতো। আর এই ইয়াবা রাজধানীর ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করতেন ধরা পড়া চার জন।
দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ