মারুফ শরীফ, নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, নির্বাচনের বছরে এসে নার্ভাস হয়ে সরকার মাদক বিরোধী অভিযানের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড চালাছে। তিনি প্রশ্ন করেন, প্রধানমন্ত্রী বারবার কেন ভারতে যাচ্ছেন? তাঁর সফরেতো ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশের কোনো স্বার্থই উদ্ধার হয়নি বা হচ্ছে না। সময় মতো দেশে গণঅভ্যুত্থান হবে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির নীতিনির্ধারনী নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
আজ শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ‘বাংলাদেশ জাতীয় দল’ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপির এই নেতা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরে বাংলাদেশের কোনো স্বার্থ উদ্ধার হচ্ছে না। তাহলে বারবার কেন প্রধানমন্ত্রী ভারত যাচ্ছেন, জনগণের মধ্যে এ নিয়ে নানা গুঞ্জন আছে।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সরকার নার্ভাস হয়েছে তার প্রমাণ- হঠাৎ করে মাদক বিরোধী অভিযান শুরু করলো, তাও আবার নির্বাচনের বছরে। তাদের দু’টি উদ্দেশ্য, প্রথমত লোক দেখানো আর দ্বিতীয়ত বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে হত্যা ও নির্যাতন করা।
ড. মোশাররফ বলেন, এই মাদক ছয়মাস কিংবা একমাস আগেও আসে নাই। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাদের এমপি, মন্ত্রী ও নেতারা মাদক ব্যবসায়ীদের আশ্রয় প্র¯্রয় দিয়ে মাদকের অবস্থা আজ এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। দেশকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
অভিযানের ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, আমরাও চাই মাদক বন্ধ হোক। এই মাদক বিরোধী অভিযান চালাতে গিয়ে আজকে যে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড চলছে তা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়। যাদের মারা হচ্ছে, তারা যদি সত্যিকারের মাদক ব্যবসায়ী হয় তাহলে তাদের আইনের আওতায় আনা হোক। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে গডফাদারদের তথ্য অবশ্যই পাওয়া যাবে।
বিএনপি মাদক বিরোধী অভিযানের বিরোধিতা করে সরকারের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে মোশাররফ বলেন, আমরা অভিযানের বিরোধিতা করি না। আমরা পদ্ধতির বিরোধিতা করি। তাদের গ্রেফতার করা হোক। আইনে সোপর্দ করা হোক। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গডফাদারদের বের করা হোক। এদেশের সাধারণ মানুষ পর্যন্ত জানে মাদকের স¤্রাট কারা। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত পর্যন্ত সংসদে বলেছেন- এই পার্লামেন্টেই মাদকের গডফাদার আছে। এদের আজকে ধরা হয় না, ধরা হয় ছোট খাটো যারা মাদক বহন করে। তাদের খুন করা হয়। এর মধ্যে কোনও বাহাদুরি নাই। মূল উৎপাটন করা না গেলে এদেশে মাদক বিরোধী আন্দোলন সফল হবে না।
সরকারের বিভিন্ন সংস্থা মাদক বিরোধী অভিযানের নামে বাণিজ্য করছে এমন অভিযোগ করে ড. মোশাররফ বলেন, এই অভিযানের নামে অনেক বাণিজ্য হচ্ছে। এসব বন্ধ করতে হবে। এই গণবিরোধী, স্বৈরাচার সরকারের হাত থেকে জনগণকে রক্ষা করতে হবে। এই স্বৈরাচারী সরকারের পতন ছাড়া এদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে না।
বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে চলমান আন্দোলন সম্পর্কে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, গণতন্ত্র, বেগম খালেদা জিয়া ও সুষ্ঠু নির্বাচন একই সূত্রে গাঁথা। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। এজন্য আমাদের আন্দোলন করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে হবে।
মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ ও নরম কর্মসূচির মাধ্যমে স্বৈরাচার বিদায় হয়নি। দেশে গণঅভ্যুত্থান হবে সময় মতো। তারিখ নির্ধারণ করে সেটা হবে না। কোটা পদ্ধতির আন্দোলন তারিখ নির্ধারণ করে হয়নি। আগামীতে জনগণকে নিয়ে ছাত্র-যুবকরা স্বৈরাচারের পতন ঘটাবে। সেই দিনের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
সংগঠনটির সভাপতি সৈয়দ এহসানুল হুদার সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, যুবদলের নুরুল ইসলাম নয়ন, ছাত্রদলের আকরামুল হাসান প্রমুখ।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ