লাইফ স্টাইল ডেস্ক:
রমজান ইসলামের পাঁচ মূল স্তম্ভের অন্যতম ফরজ স্তম্ভ। মুসলিম নর-নারী সবার জন্যই রোজা ফরজ করেছেন আল্লাহ। তবে অসুস্থ ব্যক্তিদের রোজার ব্যাপারে কিছুটা শিথিলতা আছে। কোনো ব্যক্তি যদি বেশি অসুস্থ থাকেন, তাহলে তার জন্য রোজা জরুরি নয়। কিন্তু, কিছু কিছু রোগ আছে কষ্টদায়ক হলেও একটু সতর্ক থাকলে রোজা রাখা সম্ভব। এতে করে রোগীদের জন্য সময়টা আরও উপকারী হয়ে দাঁড়ায়।
বিশেষ করে যারা হাঁপানি বা অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত, তাদের পক্ষে রোজা রাখা অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ, হাঁপানি রোগীদের ব্যবহার করতে হয় ইনহেলার। আসুন, জেনে নিই রোজা রেখে এটি কীভাবে ব্যবহার করবেন। অনেকে এটা নিয়ে টেনশনে থাকেন যে, রোজায় কীভাবে ইনহেলার ব্যবহার করবেন। আসুন আজ আমরা এই ব্যাপারে জেনে নেই কিছু পরামর্শ।
শ্বাসকষ্ট খুবই যন্ত্রণাদায়ক একটি রোগ। বাংলাদেশে প্রায় ১ কোটি মানুষ এ রোগে আক্রান্ত। শ্বাসকষ্ট না কমলে রোগীর জীবনের প্রতি হুমকি দেখা দিতে পারে। এমনকি মৃত্যুও হতে পারে যদি যথাসময়ে চিকিৎসা শুরু করা না হয়। তাই অনেক চিকিৎসকই হাঁপানির সময় ইনহেলার ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ইনহেলার নিলে শ্বাসকষ্ট কমে।
অনেকেরই ধারণা, হাঁপানি বা অ্যাজমা রোগ নিরাময়ে নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। এমন ধারণা মোটেও ঠিক নয়। কারণ, বাংলাদেশে এ রোগ নিরাময়ে অত্যাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে। যদিও এ রোগের সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব নয়। তবুও উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে রেখে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব।
হাঁপানি রোগীদের সাধারণত দীর্ঘ মেয়াদী ব্যবস্থার আওতায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হয়। আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় অ্যাজমা রোগীদের মুখে খাবার ওষুধের চেয়ে ইনহেলার বেশি ব্যবহার করতে দেয়া হয়। কেন না এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, কম পরিমাণ ওষুধ লাগে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক নিয়মে ব্যবহার করলে খুব দ্রুত শ্বাসকষ্টের পরিমাণ কমে যায়।
ইনহেলার অ্যাজমা রোগীর জন্য এমন এক চিকিৎসা পদ্ধতি যা রোগী শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে টেনে নেয় এবং ওষুধ শ্বাসনালিতে পৌঁছায়। অনেকেই মনে করেন, ইনহেলার হাঁপানির সর্বশেষ চিকিৎসা। ইনহেলার একবার ব্যবহার করলে পরে শ্বাসকষ্টের পরিমাণ কমানোর জন্য আর অন্য কোনো ওষুধ কাজে আসে না। তাদের জেনে রাখা ভালো, হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের প্রথম চিকিৎসা হচ্ছে ইনহেলার।
এখন অবশ্য অনেক ডিভাইস পাওয়া যায়। তা ব্যবহারের মাধ্যমে হাঁপানিতে আক্রান্ত রোগীরাও রোজা রাখতে পারেন। যেমন: একটি ইনহেলার সালবিউটামল। এটি ইফতারের সময় দুই পাফ এবং সেহেরির সময় দুই পাফ নেয়া যায়। এতে রোগী দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ভালো থাকবেন। রোজা রাখা অবস্থায় যদি কেউ ইনহেলার নেন, তাহলেও রোজা ভাঙবে না। কারণ, ইনহেলার মোটেও খাদ্যের পরিপূরক নয়।
এর মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ রাখা হয়। ইসলামী চিন্তাবিদরা বলে দিয়েছেন, রোজা রাখা অবস্থায় ইনহেলার সহজেই গ্রহণ করা যাবে। এরপরও যদি কেউ না নিতে চান, তাহলে সেহরি ও ইফতারের সময় দুই পাফ করে নিতে পারেন।
কিছু টিপস:
কিছু খাবার আছে যেগুলো খেলে অ্যালার্জি বাড়ে, যেমন: গরুর মাংস, ইলিশ মাছ, ইত্যাদি। অনেক হাঁপানি রোগীর এতে অ্যালার্জি আছে। চিংড়ি, বেগুনেও অনেকের অ্যালার্জি আছে। এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
যেসব খাদ্যে রোগীর সংবেদনশীলতা থাকে, তাহলে খাওয়া যাবে না।
বেশি মসলাযুক্ত ও ভাজা-পোড়া খাওয়া যাবে না।
হাঁপানি রোগী যদি খুব পেটভরে খান, তাহলে স্বাভাবিকভাবে দম নিতে তার কষ্ট হবে। ইফতারে এক সঙ্গে অনেক কিছু না খেয়ে ধাপে ধাপে খান।
সেহেরি খাওয়ার পর আপনার সুবিধা মতো সময়ে ইনহেলারের পাফ নিয়ে নিন।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি