২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১০:২৫

মাদক নিয়ন্ত্রণের নামে ব্যর্থ সরকার মানুষ খুন করছে : মওদুদ

নিজস্ব প্রতিবেদক :

সরকার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়ে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ।

তিনি বলেছেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে সরকার এতোদিন নিশ্চুপ ছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তাদের কাছে তালিকা আছে। তাহলে এই অভিযান আগে থেকে চালিয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ আনতে পারেনি কেন? কারণ হলো এই মাদক ব্যবসায় তাদের নেতারা জড়িত। হাজার হাজার কোটি টাকা তারা এখান থেকে আয় করেছে। আর তাই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে নির্বিচারে মানুষ মারা শুরু করেছে সরকার। ৫৮ জন মানুষ মারা গেছে ৮ মে থেকে ২৫ মে- ১৭ দিনে। মানুষের কি জীবনের কোন মূল্য নেই?

শুক্রবার (২৫ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে প্রতিবাদী নাগরিক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়া মুক্তি পরিষদ নাগরিক প্রতিবাদী সভাটির আয়োজন করে।

বিএনপিও মাদক নির্মূল চায় জানিয়ে ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, আমরাও চাই মাদক নির্মূল করা হোক। এর দায় দায়িত্ব সরকারের। আমাদের এ ব্যাপারে কিছু করার নেই। কিন্তু মানুষ মেরে করা যায় না? যাদেরকে হত্যা করা হচ্ছে এরা তো মালিক না। এরা তো বাহক। তারা বিক্রি করে মালিককেই দেয়। সেই মালিক কারা? তারা এই সরকারের মদদপুষ্ট। এভাবে মানুষ হত্যা বন্ধ করুন। মাদক ব্যবসা উচ্ছেদ হোক। কিন্তু মানুষ মারা চাই না।

আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে সাবেক এ আইনমন্ত্রী বলেন, খুলনায় নির্বাচন হয়নি। পুলিশি নির্বাচন হয়েছে। জনগণের নির্বাচন হয়নি। খুলনা প্রায় ১০০ কেন্দ্রে আমাদের এজেন্টরা দাঁড়াতে পারেনি। এখন তারা খুলনা স্টাইলে গাজীপুরে নির্বাচন করতে চায়। তারা যদি সে চেষ্টা করে এবার আমরা সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে সেটা প্রতিহত করার চেষ্টা করবো। আমরা সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে তাদের বাধা দিবো।

নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এরা সরকারের একটি তলপিবাহক নির্বাচন কমিশন। সরকার যা চাইবে তারা তাই করবে। আচরণবিধি পরিবর্তন করছে। এখন সংসদ সদস্য প্রচারণা চালাতে পারবে। সংসদ সদস্য মানে তো আওয়ামী লীগের। এরা যেন প্রচারণা চালাতে পারে। এটির দূরভিসন্ধিমূলক লক্ষ্য আছে। তারা আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এটি করেছে। তারা সংসদ রেখে আগামী নির্বাচন করতে চায়। তাই এই নিয়ম রেখেছে। সংসদ সদস্য থেকেই নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য করেছে। আচরণবিধি পরিবর্তন করা ষড়যন্ত্রের অংশ।

খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়েও কথা বলেন বিএনপির এই নীতিনির্ধারক। তিনি বলেন, সর্বোচ্চ আদালত জামিন দেয়ার পর কি আর কোনো কথা থাকে? যদি তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা থাকেও সেটাও দুই এক দিনেই জামিন হয়ে যায়। কিন্তু নিম্ন আদালতের বিচারকরা সরকার যা চাইবে তাই করবে।  নির্বাচন কমিশনও তাই করে।

এ সময় তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘একদিন বেশিও যদি খালেদা জিয়া কারাগারে থাকেন তাহলে তার জনপ্রিয়তা দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। আইন আদালত ও শান্তিপূর্ণ কোনো কর্মসূচির মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়; আন্দোলন ছাড়া জনগণের কোনো দাবি কোনদিন কোনোভাবে আদায় করা হয়নি। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার একমাত্র পথ রাজপথ। রমজান মাসের পরে আমাদেরকে কঠোর কর্মসূচির কথা চিন্তা করতে হবে। আর সেভাবেই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের আন্দোলন গণতন্ত্রের আন্দোলন। এটি অব্যাহত থাকবে। আমরা বর্তমান অবস্থার অবসান চাই। এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে সম্পূর্ণভাবে নৈরাজ্য নিরাজ করছে না। কোনো জবাবদিহিতা নেই। ভয়ংকর একটি অবস্থা। এই অবস্থার অবসান চায় দেশের মানুষ।

প্রধানমন্ত্রীর পশ্চিমবঙ্গ সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা আশা করবো প্রধানমন্ত্রী খালি হাতে ফিরবেন না। আমরা আশা করি তিনি তিস্তার পানি চুক্তি বাস্তবায়ন করেই ফিরবেন। আর না হলে আমরা বলবো তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।

আয়োজক সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রতিবাদী নাগরিক সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরীন সুলতানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :মে ২৫, ২০১৮ ২:১৭ অপরাহ্ণ