২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১:৪০

এটিএন কমিউনিকেশনের ৫৮ লাখ টাকার শুল্ক ফাঁকি

নিজস্ব প্রতিবেদক:
অভিনব পদ্ধতিতে ব্যাংকের কাগজ জালিয়াতির মাধ্যমে এটিএন কমিউনিকেশন নামে একটি মোবাইল আমদানিকারকের আমদানি ও শুল্ক খালাস করার অপকৌশল উদঘাটন করেছে শুল্ক মূল্যায়ন ও অডিটের একটি দল। ওই  প্রতিষ্ঠানটি ঢাকার পরিবাগের মোতালিব প্লাজায়। এটি মোবাইল ফোনের আমদানিকারক ও সরবরাহকারী হিসেবে নিবন্ধিত বলে জানা গেছে। জালিয়াতির মাধ্যমে শুল্ক ফাঁকি প্রায় ৫৮ লাখ টাকা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, আমদানিকারক নিউ এ্যালিফ্যান্ট রোডের আল আরাফা ব্যাংকের শাখায় ৪টি এলসি খোলে। এগুলোর মাধ্যমে সেলুলার ফোন আমদানির কথা। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা কাস্টম হাউসের এয়ারফ্রেইটে ৭টি বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে ক্যাপিটাল মেশিনারি ও ফার্মা কাঁচামাল ঘোষণা দিয়ে খালাস নিয়েছে। এতে ব্যাপক হারে শুল্ক ফাঁকি উদ্ঘাটিত হয়েছে।
এলসিসমূহের ৩টি বিল অব এন্ট্রিতে আমদানিকারক মোবাইল ফোনের পরিবর্তে ক্যাপিটাল মেশিনারি ১%  হারে খালাস নিয়েছে। অন্য ২টিতে ফার্মাসিউটিক্যালস এর কাঁচামাল দেখিয়ে ০% হারে শুল্ক সুবিধা নিয়েছে।
বাকি ২টি বিল অব এন্ট্রিতে মোবাইলের প্রকৃত সংখ্যা কম দেখিয়েছে। সবগুলো বিল অব এন্ট্রিতে আমদানিকারক কর্তৃক ভুয়া কাগজ দাখিল করে শুল্ক জালিয়াতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে।
ব্যাংকের মূল দলিল পর্যালোচনায় দেখা যায় প্রতিষ্ঠানটি কেবল মোবাইলের জন্যই এলসি খুলেছে। এসব এলসি-তে প্রতি পিস মোবাইল ৬.৫ ও ৬.২৫ মার্কিন ডলার হিসেবে দেখিয়েছিল। ব্রান্ড দেখিয়েছে স্পোর্টস মোবাইল, মডেল এসপি – ৯ ও ডব্লিউ – ৭।
কিন্তু ঢাকা কাস্টম হাউসের তথ্যে দেখা যায়, ভিন্ন পণ্য শুল্কায়ন করে খালাস করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ভিন্ন পণ্য ও পরিমাণে কম দেখিয়ে শুল্ক কম পরিশোধ করা হয়।
অন্যদিকে ঔষধের জন্য কোন এলসি খোলা না হলেও অসত্য কাগজ দাখিল করে এবং ঔষধ প্রশাসনের বৈধ কাগজ না থাকলেও তা ০% হারে খালাস নেওয়া হয়।
ঢাকা কাস্টম হাউসের বিল অব এন্ট্রিগুলো হল- সি৯১৫৭৬৯, তারিখ ১৬/১০/১৭; ৯১৫৭৭৩, তারিখ ১৬/১০/১৭; ৩৯৬২১০, তারিখ ৪/৫/১৭; ৩৯৮৭৯৬, তারিখ ৪/৫/১৭; ৪২৫২৭১, তারিখ ১৪/৫/১৭; ১১৪২৩০২, তারিখ ১৮/১২/১৭ এবং ৪৩৫৯৬৫ তারিখ ১৬/৫/১৭।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, তিনি সবগুলোতেই মোবাইল ফোন আমদানি করেছিল এবং শুল্ক জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এ জন্য বিটিআরসি’র বাধ্যতামূলক ছাড়পত্র নেয়া হয় নি। ফলে মোবাইলের আইএমইআই নম্বর অনুমোদিত নয়। উল্লেখ্য, ঔষধের কাঁচামালে ০% শুল্ক, ক্যাপিটাল মেশিনারি ১% এবং মোবাইলে মোট ২৯.৫% শুল্ক প্রযোজ্য।
মোবাইল ফোনের ৪টি এলসি’র মূল্য ৩.৩৫ লক্ষ মার্কিন ডলার। আলোচ্য ৭টি বিল অব এন্ট্রিতে মোবাইল ফোন হিসেবে জালিয়াতির মাধ্যমে শুল্ক ফাঁকি দেয়া হয়েছে প্রায় ৫৮ লক্ষ টাকা। এ বিষয়ে শুল্ক আইনে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

দৈনিক দেশজন /এন আর

প্রকাশ :মে ২২, ২০১৮ ৮:৩১ অপরাহ্ণ