নিজস্ব প্রতিবেদক:
মাদক অভিযানে ক্রসফায়ারের নামে ‘বিচারবর্হিভুত হত্যাকাণ্ড’ বন্ধ করে সারাদেশের মাদকের গডফাদারদের নামের তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। মঙ্গলবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন বলেন।
ড. মোশাররফ বলেন, সারাদেশে মাদক অভিযানের নামে তারা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে। গত একদিনে ১১ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। তারা যদি মাদক কারবারি, মাদকসেবী কিংবা যেকোনো অন্যায়কারী হয় তাহলে এদেশে বিচারের ব্যবস্থা আছে, আইন আছে, আমাদের সংবিধান আছে। সেটাকে ভ্রুক্ষেপ করছে না এই সরকার।
তিনি আরো বলেন, মাদক অভিযানের নামে আজকে যাদেরকে হত্যা করা হচ্ছে আমরা জানি না আসলে তারা কে? তারা কী রাজনৈতিক বিরোধী কন্ঠস্বর, না তারা মাদক ব্যবসায়ী বা মাদকসেবী? এটা দেখানোর জন্য, প্রমাণ করার দরকার ছিলো কোর্টে। কোনো সভ্য দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিক সুলতানা, মুক্তিযোদ্ধা দলের শাহ মো. আবু জাফর, মতিউর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সরকারের সমালোচনা করে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপি মাদকের বিরুদ্ধে। মাদকের বিরুদ্ধে আপনাদের এমপি থেকে শুরু করে সারা বাংলাদেশ যাকে মাদকের সম্রাট হিসেবে জানে প্রথমে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন, মাদক সম্রাটের আশে-পাশে যারা আছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। আমাদের দাবি- ঢাকায় মাদকের যারা মূল নায়ক তাদের নাম প্রকাশ করুন। এটা প্রকাশ করা হলে দেখা যাবে তারা কোনো না কোনো আওয়ামী লীগের নেতা, কোনো না কোনো কর্মী হবে।
মোশাররফ বলেন, আমরা জানি, আপনারা সেই তালিকা প্রকাশ করবেন না। একটা প্রলেপ দেওয়ার জন্য কিছু লোককে হত্যা করে জনগণকে দেখাতে চান। উদ্দেশ্যে আগামী নির্বাচন, জনগণকে আতঙ্কিত করা। খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও এভাবে পুলিশের মাধ্যমে গ্রেফতার করে ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছিল।
সরকার গায়ের জোরে আগামী নির্বাচন করার ষড়যন্ত্র করছে অভিযোগ করে এর বিরুদ্ধে সকলকে সংগঠিত হওয়ার আহবান জানিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী আরো বলেন, জনগণের ক্ষোভ আগুনের ফুলকিতে পরিণত হয়েছে, অগ্নুৎপাতের বাকী। তাই যার যার অবস্থান থেকে সকলে প্রস্তুতি নিন। সময় আসছে যদি সরকার সব কিছুকে উপেক্ষা করে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হয়, জনগণ এটা হতে দেবে না। জনগণ তাদের রাস্তার সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। ইনশাল্লাহ গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই সরকারের পতন হবে।
দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ