২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৩:৫২

টনসিলের চিকিৎসা

স্বাস্থ্য ডেস্ক:

মুখ হা করলে গলার ভেতরে ডান ও বাঁ দিকে ছোট্ট বলের মতো যা দেখা যায় তার নাম টনসিল। ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে যখন টনসিল ফুলে যায়, তখন তাকে টনসিলের প্রদাহ বলে। টনসিল সমস্যা সাধারণত ১০ বছরের নিচের বাচ্চাদের বেশি হয় ।

লক্ষণ :

১. গলাব্যথা ও খুসখুসে কাশি হওয়া।
২. খাবার গিলতে, পানি পান করতে ব্যথা পাওয়া।
৩. জ্বর।
৪. কানে ব্যথা ও নাক দিয়ে পানি ঝরা।
৫. টনসিল বেশ লালচে বর্ণ ধারণ করে।
৬. টনসিলের ওপর হলুদ বা সাদা আস্তরণ পড়তে পারে।
৭. গলার ভেতর ও এর আশপাশের অন্যান্য লসিকাগ্রন্থিও ফুলে যায়।
৮. মুখে দুর্গন্ধ হয়।
৯. মাথাব্যথা হয়।
১০. গলার স্বর পরিবর্তিত হয়।
১১. খাবার খেতে ইচ্ছা করে না।

কী করবেন :

১. ঠাণ্ডা তরল পান করুন। আইসক্রিম চুষে খান।
২. কুসুম গরম পানি পান করুন ও কুসুম গরম পানি দিয়ে বারবার গার্গল করুন।
৩. বেনজোকাইন জাতীয় লজেন্স চুষে খান।

কখন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে :
১. মুখ দিয়ে লালা ঝরলে।
২. জ্বর ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার বেশি হলে।
৩. খাবার বা পানীয় গিলতে অসুবিধা হলে।
৪. গলায় ফুলে ওঠা লিম্ফগ্রন্থিতে অনেক ব্যথা হলে।

চিকিৎসা :

১. টনসিলের চিকিৎসা নির্ভর করে কারণের ওপর। যদি ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়, তাহলে রোগীকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হবে।
২. ভাইরাসের জন্য হলে পাঁচ-সাত দিনের মধ্যে এমনিতেই সেরে যায়। সে ক্ষেত্রে উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয়।
৩. চিকিৎসার পর উপসর্গ চলে গেলেও টনসিলের আকৃতি ছোট হতে কিছুটা সময় নেয়। কয়েক মাস পর্যন্ত টনসিল বাড়তি আকৃতিতেও থাকতে পারে।
৪. টনসিলাইটিস হলে বেশি বেশি তরল খাবার ও গরম পানীয় পান করতে হবে। শিশুদের গরম স্যুপ, জাউ বা নরম করে রান্না করা খাবার দিলে ভালো।

কখন অপারেশন করাবেন :

১. টনসিল বড় হওয়ার জন্য ঘুমের মধ্যে শ্বাসকষ্ট হলে বা নাক ডাকলে।
২. ঢোক গিলতে বা খেতে বেশি অসুবিধা হলে।
৩. বছরে পাঁচ-সাতবার রোগের লক্ষণ দেখা দিলে। একাধারে দুই বছর বা প্রতিবছর টনসিলের ইনফেকশন হলে।
৪. টনসিলে একবার ফোঁড়া বা পুঁজ হলে।
৫. ছয় মাস যথাযথ চিকিৎসার পরও না সারলে।

টনসিল অপারেশনের পদ্ধতি :

টনসিল অপারেশনের বিভিন্ন পদ্ধতি আছে। যেমনডিসেকশন ম্যাথড, ইলেকট্রকটা, লেজার,  কোবলেশন আলট্রাসনিক।

ডিসেকশন ম্যাথড বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। এই উপায়ে অপারেশনের সময় কিছু রক্তপাত হয় এবং রক্তনালিগুলো সেলাই করে দিতে হয়।

লেজার, কোবলেশন এবং আলট্রাসনিক উপায়ে টনসিল অপারেশন অনেক উন্নতমানের কিন্তু ব্যয়বহুল। উপযুক্ত ট্রেনিংপ্রাপ্ত দক্ষ সার্জনের প্রয়োজন।

ইলেকট্রকটারি, লেজার পদ্ধতিতে টনসিল অপারেশনের সুবিধা হলো এটি রক্তপাতহীন, নিরাপদ, আধুনিক এবং কম সময়ে লাগে। ইলেকট্রকটারি, লেজার পদ্ধতিতে টনসিল অপারেশনে কোনও সেলাই লাগে না। অপারেশনের পরই রোগী মুখে খেতে পারবে। দ্রুত আরোগ্য লাভ এবং রোগী শিগগিরই দৈনন্দিন স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে ফিরে যেতে পারে। সূত্র: অনলাইন।

দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ

প্রকাশ :মে ১৮, ২০১৮ ৮:৩৬ অপরাহ্ণ