নিজস্ব প্রতিবেদক:
পিরোজপুর জেলার পাড়েরহাট মৎস্য বন্দর-বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আফাজ উদ্দিন খালের সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। শত শত শিক্ষার্থী স্কুল-মাদ্রাসায় যাতায়াত করছে চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে। সেতু ভেঙে যাওয়ায় ছয় কিলোমিটার পথ ঘুরে মোটরসাইকেল, রিকশা ও ভ্যান চলাচল করছে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালে বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আফাজ উদ্দিন খালের ওপর ৭০ ফুট দৈর্ঘের লোহার সেতু নির্মাণ করা হয়। তৎকালীন এমপি এই সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন।
গত বছর একটি বালুবাহী ট্রলার খাল দিয়ে যাওয়ার সময় সেতুর সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে সেতুটি নড়বড়ে হয়ে যায়।
গত বছরের জুলাইতে সেতুর উত্তর অংশ ভেঙে পড়ে। এরপর থেকে স্থানীয় লোকজন চলাচলের জন্য সেতুর ভাঙা অংশে সুপারি গাছ ও বাঁশ দিয়ে সাঁকো তৈরি করে।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেতুর উত্তর দিকে মধ্য বাঁশবাড়িয়া গ্রাম। দক্ষিণ দিকে রয়েছে দক্ষিণ বাঁশবাড়িয়া ও বাদুরা গ্রাম। এই দুই গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ সেতুটির ওপর নির্ভরশীল। মধ্য বাঁশবাড়িয়া গ্রামের শতাধিক শিশু প্রতিদিন সাঁকো পার হয়ে দক্ষিণ বাঁশবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করে।
অপরদিকে দক্ষিণ বাঁশবাড়িয়া ও বাদুরা গ্রামের মানুষ সাঁকোটি পার হয়ে জি হায়দার মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হাট বাজার, হাসপাতাল ও জেলা সদরে যাতায়াত করে।
দক্ষিণ বাঁশবাড়িয়া গ্রামের কৃষক মো. মজিদ ও আলম বলেন, সেতুটির একাংশ ভেঙে যাওয়ার পর ভ্যানে করে হাট বাজারে মালামাল ও কৃষিপণ্য নেওয়া যাচ্ছে না। ছয় কিলোমিটার ঘুরে শংকরপাশা গ্রামের এ কে এম এ আউয়াল ফাউন্ডেশনের সামনের সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
জি হায়দার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সিমু, তানিয়া মো. নাদিম জানায়, সেতুটির একাংশ ভেঙে যাওয়ার পর সেখানে তৈরি সাঁকো দিয়ে বিদ্যালয় যেতে হয়। সাঁকো পার হতে আমাদের ভয় করে। বর্ষার সময় সাঁকো কাঁদা-পানিতে পিচ্ছিল হয়ে যায়। তখন পা ফসকে দুর্ঘটনাও ঘটে।
শংকরপাশা ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল হালিম মৃধা বলেন, সেতুটি মেরামত করতে ৬ লাখ টাকা প্রয়োজন। এলজিইডির সেতু মেরামতের জন্য তহবিল নেই।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) পিরোজপুর সদর উপজেলা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী সুভাস চন্দ্র মালাকার বলেন, এলজিডি নতুন কোনো লোহার সেতু নির্মাণ করছে না। পুরনো লোহার সেতুগুলো মেরামতের জন্য বরাদ্দ নেই। এ কারণে সেতুটি মেরামত করা যাচ্ছে না। এখন নতুন করে সেখানে গার্ডার সেতু নির্মাণ করতে হবে।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ
Daily Deshjanata দেশ ও জনতার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর

