নিজস্ব প্রতিবেদক:
মতিঝিলের কলোনি এলাকায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রান্না করতে যান মমেনা আক্তার। কিন্তু চুলা জ্বলছে না গ্যাস নাই ভালভাবেন চুলা জ্বলছেনা মিট মিট করে জ্বলছে । বিপদে পড়েন তিনি। শেষ পর্যন্ত রাতের খাবার ও সাহরি রান্না শেষ করতে তার সময় লাগে রাত ১০ টা পর্যন্ত। শুধু মতিঝিল এলাকায় নয়, পুরান ঢাকাসহ রাজধানীর অনেক এলাকায় গ্যাসের চুলা জ্বলছে না। এতে রমজানে সাহরি ও ইফতারের খাবার তৈরি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন অনেক বাসিন্দা। গ্যাস না থাকায় পুরান ঢাকার আবাসিক এলাকায় গড়ে ওঠা হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো ঝুঁকিপূর্ণ সিলিন্ডার ব্যবহার করছে।
পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারের গোয়ালনগর লেনে ৬০টি বহুতল ভবনে অন্তত ৭০০ পরিবার বসবাস করছে। গত বুধবার সকালে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, গ্যাস থাকে না বলে বেশির ভাগ বাড়িতে কেরোসিনের চুলা কেনা হয়েছে।
বিমল মল্লিক বলেন, সকাল ছয়টায় গ্যাস চলে যায়, আসে বেলা তিনটার পর। আবার সন্ধ্যায় গিয়ে আসে গভীর রাতে। দরকারি সময়ে গ্যাস থাকে না বলে কেরোসিনের চুলা জ্বালাতে হয়। কেরোসিন কিনতে বাড়তি অনেক টাকা চলে যায়। আবার তিতাস গ্যাস কোম্পানিকে গ্যাসের বিলও দিতে হয়।
তাঁতীবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. নুর হোসেনের বাড়িতে ১০টি পরিবার ভাড়া থাকে। গ্যাস না থাকায় ভাড়াটেদের কেউ কেউ বাড়ি ছেড়েছে বলে তাঁকে জানিয়েছেন। রমজানে ইফতার ও সাহরির খাবার তৈরির বিষয়ে তাঁরা দুশ্চিন্তায় আছেন বলে জানান।
একই দুশ্চিন্তা লালবাগের শহীদবাগ, সোয়ারীঘাট, সূত্রাপুরের মালাকার টোলা, বানিয়ানগর, গোপীবাগ, কে এম দাস লেন, গেন্ডারিয়ার এস কে দাস রোড, কে বি রোডসহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদেরও। এসব এলাকাতেও বেশির ভাগ সময়ই গ্যাস থাকে না।
গেন্ডারিয়া এসকে দাস রোডের ৭০/৬ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা জামিলা খাতুন জানান, দিনে গ্যাসের চাপ না থাকায় গভীর রাতে রান্না করতে হয়।
সূত্রাপুরের ফরাশগঞ্জ এলাকার ইমরান হোসেন বিভিন্ন অফিসে দুপুরের খাবার সরবরাহ করেন। গ্যাসের সংকটে সময়মতো রান্না করে খাবার সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে তাঁর ব্যবসা পড়ে গেছে বলে জানালেন।
পুরান ঢাকার বাইরে পল্লবী, মিরপুরের ১১ নম্বর, ১৪ নম্বর, কাফরুলের কিছু এলাকা, মোহাম্মদপুরের আদাবর, শেখেরটেকের কিছু এলাকাতেও গ্যাসের সংকট চলছে। তিতাসের নিয়ন্ত্রণকক্ষে এসব এলাকার বাসিন্দারা গ্যাস-সংকটের বিস্তর অভিযোগ করেছেন।
গ্যাস-সংকটের বিষয়ে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর মশিউর রহমান বলেন, ঢাকায় ২০০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস দরকার, পাওয়া যাচ্ছে ১ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এই ঘাটতির জন্যই সমস্যা। এলএনজি যুক্ত হওয়ার পর সমস্যা কমে যাবে।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ