নিজস্ব প্রতিবেদক:
আইনজীবীদের সনদ প্রদান ও পেশাগত বিষয়ের সর্বোচ্চ সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে কর্তৃত্ব ধরে রেখেছে সরকার দল আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা। গতকাল সোমবার ভোটগ্রহণের পর বেসরকারি ফলাফলে এই তথ্য জানা যায়। তবে আনুষ্ঠানিক ফলাফল বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেল আজ রাতে ঘোষণা করবেন।
সারাদেশের ৭৮টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শেষে রাতেই আলাদা করে কেন্দ্রগুলোতে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। সে অনুযায়ী প্রাপ্ত ফলাফল থেকে জানা যায় নির্বাচিত ১৪টি পদের মধ্যে ১২টিতেই সরকারপন্থীরা জয়লাভ করেছে। বাকি দুটো পদ পেয়েছেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
এর মধ্যে সাধারণ ক্যাটাগরিতে ৭টি পদের মধ্যে আওয়ামীপন্থী প্যানেল থেকে ছয়জন নির্বাচিত হয়েছেন। এই প্যানেল থেকে সাধারণ ক্যাটাগরিতে নির্বাচিতরা হলেন বার কাউন্সিলের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুয়ায়ুন, বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম (জেড আই) খান পান্না, আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ. ম. রেজাউল করিম, অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান বাদল।
সাধারণ ক্যাটাগরিতে বিএনপিপন্থী প্যানেল থেকে শুধু সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী নির্বাচিত হয়েছেন।
গ্রুপভিত্তিক সাতটি পদের মধ্যে আওয়ামীপন্থীরা ছয়টি পদে জয়লাভ করেন। তারা হলেন সাবেক বৃহত্তর ঢাকা জেলার সকল আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ -এ) অ্যাডভোকেট কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, বৃহত্তর ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর জেলার আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ বি) মো. কবির উদ্দিন ভূঁইয়া, বৃহত্তর কুমিল্লা জেলা ও সিলেট জেলা অঞ্চলের আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ ডি) এএফ মো. রুহুল আনাম চৌধুরী, বৃহত্তর খুলনা, বরিশাল ও পটুয়াখালী অঞ্চলের আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ ই) পারভেজ আলম খান, বৃহত্তর রাজশাহী, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ এফ) মো. ইয়াহিয়া এবং বৃহত্তর দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া ও পাবনা জেলার আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ জি) রেজাউল করিম মন্টু।
গ্রুপভিত্তিক পদে শুধু বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জেলার আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ সি) বিএনপি সমর্থিত প্যানেল থেকে অ্যাডভোকেট মো. দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী নির্বাচিত হয়েছেন।
বাংলাদেশ লিগ্যাল প্র্যাকটিশনার্স অ্যান্ড বার কাউন্সিল অর্ডার ১৯৭২ অনুসারে ১৫ সদস্যের কাউন্সিলে অ্যাটর্নি জেনারেল পদাধিকার বলে চেয়ারম্যান। এছাড়া ১৪ জন সদস্য নির্বাচিত হন। যার মধ্যে সাতজন সাধারণ ক্যাটাগরিতে ও সাতজন আঞ্চলিক ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হন। নির্বাচিত এই ১৪ সদস্য নিজেরা ভোটের মাধ্যমে একজন ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন। নির্বাচিত কমিটির মেয়াদ হলো তিন বছর।
এদিকে নির্বাচন সংক্রান্ত আপত্তি শুনানির জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দেয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হলেন বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলাম। বাকি দু’জন হলেন- বিচারপতি ফরিদ আহমেদ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. অজি উল্লাহ।
উল্লেখ্য, সবশেষ ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত বার কাউন্সিল নির্বাচনে ১৪টি পদের মধ্যে ১০টিতে আওয়ামীপন্থি ও ৪টিতে বিএনপিপন্থীরা জয়লাভ করে। সদস্যদের ভোটে পরে অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ