চট্টগ্রাম প্রতিবেদক:
চট্টগ্রামে মেজবানে পদদলিত হয়ে ১০ জন নিহত হওয়ার ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। দুর্ঘটনার আগে ও পরে রীমা কমিউনিটি সেন্টার এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। এদিকে পদদলিত হয়ে ১০ জন নিহত হওয়ার ঘটনার তদন্তের দাবি করেছেন মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। অন্যদিকে নিহতদের স্বজনদের দাবি ও বিক্ষোভের মুখে ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী গতকাল সোমবার রাত সোয়া ১০টায় ভোরের কাগজকে বলেন, ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মাশহুদুল কবীরকে প্রধান করে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করে তাদের আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের বিষয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন পক্ষ থেকে নানা অনুরোধ এবং নিহতদের স্বজনদের দাবির মুখে ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমি চেয়েছিলাম এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনার ময়নাতদন্ত হোক। কিন্তু নানা কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনার তদন্ত হওয়া জরুরি। এটি কি পরিকল্পিত কোনো ঘটনা- নাকি অসাবধানতাবশত এটি হয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা উচিত। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন হাতে পেলে নিশ্চিত করে বলা যাবে কী ঘটেছে। কুলখানিতে পদদলিত হয়ে ১০ জনের মৃত্যুর ঘটনা স্বাভাবিক নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, রীমা কমিউনিটি সেন্টারের বাইরে নগরীর আরো ১৩টি কমিউনিটি সেন্টারে মেজবানের আয়োজন করেছিলাম। ওই সব সেন্টারের কোথাও সামান্য বিশৃঙ্খলা হয়নি। এখানে কেন এ বিশৃঙ্খলা হলো, আমরা এখনো নিশ্চিত নই। এর আগেও ওই কমিউনিটি সেন্টারে বহুবার মেজবান হয়েছিল। কিন্তু কখনো এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি।
নওফেল বলেন, প্রতিটি কমিউনিটি সেন্টারে আমাদের ১০ থেকে ১৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক ছিল। এ ঘটনায় আমাদের একজন স্বেচ্ছাসেবকও মারা গেছেন। পুলিশও সেখানে ছিল, সুতরাং শৃঙ্খলাব্যবস্থা পর্যাপ্ত ছিল। এটাই চিন্তার বিষয়। আমরা ঘটনার পেছনের কারণ জানার চেষ্টা করছি। অপেক্ষমাণদের মধ্যে থেকে কেউ রীমা কমিউনিটি সেন্টারের দরজার লক খুলে দিয়েছিল কি না তা দেখতে হবে। সেটা সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই বোঝা যাবে। তদন্ত হলে জানা যাবে আসলে কী ঘটেছিল।
এদিকে সোমবার রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিহতদের স্বজনরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তরের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। নগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নিহতদের স্বজনদের পক্ষে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করে ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ হস্তান্তরের অনুমতি প্রার্থনা করেন। মেজবানে পদদলিত হয়ে ১০ জনের মৃত্যুর ঘটনায় ইতোমধ্যে পুলিশও তদন্ত শুরু করেছে। নগর পুলিশের কোতোয়ালি অঞ্চলের সহকারী কমিশনার মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, গোয়েন্দা পুলিশ সেখানে থাকা একটি ভিডিও ক্যামেরার ফুটজে সংগ্রহ করেছে। ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা হবে।
দৈনিক দেশজনতা/ এন আর