বগুড়া প্রতিবেদক:
বগুড়ার শিবগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ৪ খুনের মোটিভ পুলিশ উদঘাটন করেছে। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়া ৯ জনের মধ্যে ৩ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার কাঠগড়া চকপাড়া গ্রামের জুয়েল শেখ (২৫), চন্দনপুর তালুকদারপাড়ার আবুল কালাম আজাদ (৪৮) ও ডাবুইর গ্রামের রুবেল (৩২)। রোববার দিবাগত রাতে শিবগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা বলেন, গলা কেটে হত্যাকারী অপর একজনসহ হত্যাকাণ্ড অংশ নেয়া বাকি ৬ জনের নাম পুলিশ জানতে পেরেছে। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে তাদের পরিচয় আপাতত প্রকাশ করা হচ্ছে না। তিনি বলেন, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারাও মাদক সেবী এবং ব্যবসায়ী। তাদের নির্দিষ্ট কোনো পেশা নেই। তবে জুয়েল শেখ মাঝে মাঝে রিকশা চালায় বলে দাবি করেছে।
হত্যাকাণ্ডের মোটিভ সর্ম্পকে তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানিয়েছে ৪ জনকে খুন করা তাদের উদ্দেশ্য ছিল না। তারা শুধু জাকারিয়াকেই খুন করতে চেয়েছিল। কারণ হিসেবে তারা বলেছে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া একজনের কাছ থেকে জাকারিয়া হেরোইন বিক্রির ৬ হাজার টাকা পেত। সেই টাকা না দেয়ায় জাকারিয়ার সঙ্গে ওই আসামির হত্যার দুদিন আগে ঝগড়া হয়। এরপরই তাকে খুনের পরিকল্পনা হয়। সেই অনুযায়ি ঘটনার রাতে জাকারিয়াকে রুবেলের বাড়িতে মাদক সেবনের কথা বলে মোবাইল ফোনে বাড়ি থেকে ডেকে আনে তারা। কিন্তু জাকারিয়া একা না এসে তার বন্ধু শাহাবুলকেও সঙ্গে আনে। রুবেলের বাড়ির কাছাকাছি আসলে তাদেরকে রুবেলের বাড়িতে না নিয়ে ঘটনাস্থলের পার্শ্বে একটি শসার ক্ষেতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদেরকে গলা কেটে হত্যা করা হয়।
আসামিরা জানায়, দুই হত্যাকাণ্ড দেখে ফেলায় জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বাসিন্দা হেলাল ও খবিরকেও হত্যা করা হয়।
পুলিশ সুপার জানান, সোমবার আসামিদের নিয়ে পুলিশের একটি দল বগুড়া শিবগঞ্জে ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে আসামিরা হত্যার স্থান দেখিয়ে দেয় এবং হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে বর্ণনা করে। তবে হত্যার কাজে ব্যবহৃত ধারালো ছোড়াটি এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত, গত ৭ মে সোমবার সকালে শিবগঞ্জ উপজেলার আটমূল ইউনিয়নের ডাবুইর গ্রাম সংলগ্ন ধান ক্ষেতে চার ব্যক্তির গলা কাটা লাশ পাওয়া যায়। পরে দুপুরে পুলিশ মরদেহ চারটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। এ ঘটনার পরদিন নিহত সাহাবুল ইসলাম বাবা আছির উদ্দিন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে শিবগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
দৈনিক দেশজনতা/ এন আর