নিজস্ব প্রতিবেদক:
দুই বাসের রেষারেষিতে হাত হারানোর পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া রাজীবের দুই ভাইকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া সংক্রান্ত হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেনি চেম্বার বিচারপতি।
বিটিআরসির আবেদনের ওপর আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ১৭ মে দিন ঠিক করেছেন চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এই আদেশের ফলে ক্ষতিপূরণে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ আপাতত বহাল রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
গত ৮ মে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ রাজীবের পরিবারকে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেন।
আদেশে বলা হয়- ক্ষতিপূরণের টাকা পরিশোধ করবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহন। প্রতিষ্ঠান দুটি ২৫ লাখ টাকা করে মোট ৫০ লাখ টাকা আগামী এক মাসের মধ্যে যৌথ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে রাজীবের পরিবারকে দিতে হবে। টাকা পরিশোধের পর আগামী ২৫ জুনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
রিটকারীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল জানান, রাজীবের খালা জাহানার পারভীন এবং রাজীবের গ্রামের বাড়ি বাউফলের সাবেক চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদের ছেলে কাস্টমস কর্মকর্তা ওমর ফারুকের নামে সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় একটি যৌথ অ্যাকাউন্ট খোলা হবে। ওই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পরিশোধ করতে এই টাকা।
বাকি ৫০ লাখ টাকা পরিশোধের দিন নির্ধারণ করা হবে বলে জানান তিনি। গত ১০ মে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে বিআরটিসি।
উল্লেখ্য, গত ৩ এপ্রিল রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সার্ক ফোয়ারার কাছে বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের দুই বাসের রেষারেষিতে হাত হারান ছাত্র রাজীব। দুই বাসের চাপায় তার ডান হাত কনুইয়ের ওপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দুর্ঘটনার পরপরই তাকে পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। ১৩ দিন চিকিৎসার পর ১৬ এপ্রিল মধ্যরাতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন রাজীব।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বাঁশবাড়ি গ্রামের রাজীব তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় মা এবং অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবাকে হারান। ঢাকার মতিঝিলে খালার বাসায় থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন স্নাতকে। কখনও টিউশনি করে, কখনও বা পার্টটাইম কাজ করে নিজে পড়াশোনা করেছেন এবং দুই ভাইকেও বানিয়েছেন কুরআনের হাফেজ।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ