শিল্প–সাহিত্য ডেস্ক:
রবীন্দ্রনাথের গানের সুরে সুরে সংস্কৃতির লড়াইকে বেগবান করার প্রত্যয়ে শেষ হলো বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা আয়োজিত ৩০তম জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত উৎসব। গতকাল শনিবার (১২ মে) ছিল তিন দিনের এ উৎসবের শেষ দিন।
সমাপনী দিনে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের অর্ধশতাধিকশিল্পী পরিবেশন করেন আবৃত্তি ও রবীন্দ্রসঙ্গীত।সমাপনী আয়োজনে রবীন্দ্রসঙ্গীত চর্চায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা সম্মাননা’ প্রদান করা হয় দেশের প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীতশিল্পী মিতা হককে।
রাজধানীর শাহবাগের সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারে (কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি) শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে সমাপনী আয়োজনে এই শিল্পীর হাতে সম্মাননা স্মারক ও অর্থমূল্য তুলে দেন সংস্থার সভাপতি তপন মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজেদ আকবর।
সম্মাননা প্রাপ্তির অনুভূতি প্রকাশ করে মিতা হক বলেন, ‘প্রথম থেকেই আমি এই সংগঠনের সদস্য। অনেকদিন গান করলেও, অসুস্থতার কারণে গেলো তিনবছর গান গাইতে পারছি না। এই সংগঠনটি যে সম্মাননা প্রদান করলো, তাতে নতুন করে প্রেরণা পেলাম। মানুষের জীবন চলে যায়, গান থাকে। সঙ্গীতচর্চার মাধ্যমে সমাজকে বদলে দেয়া যায়। আশা করি, সংগঠনটি সবসময় সেই কাজটিই করে যাবে।’
সংস্থার সভাপতি তপন মাহমুদ বলেন ‘মিতা হকের মতো গুণী শিল্পীকে সম্মাননা দিতে পেরে আমরাও গর্বিত।’
সমাপনী অনুষ্ঠানে শিল্পীরা পরিবেশন করেন রবীন্দ্রনাথের পূজা-প্রেম পর্যায়ের গানের পাশাপাশি ভাঙা, বৈচিত্র্য পর্যায় ও নৃত্য নাট্যের গান।একক কণ্ঠে সুফিয়া জাকারিয়া গেয়ে শোনান ‘ভালবেসে যদি সুখ নাহি’, অপর্ণা খান গাইলেন ‘আমি কেবলই স্বপন’, মিতা দে ‘যে কেবল পালিয়ে বেড়ায়’, নুসরাত জাহান রুনা ‘খাঁচার পাখি ছিল সোনার’, রাবিতা সাবাহ শোনালেন ‘সখী ভাবনারে কাহারে বলে’, টিপু চৌধুরী ‘ন্যায় অন্যায় জানিনে’, বনানী দত্ত ‘ওই জানালার কাছে’, মাহজাবিন রহিম মৈত্রী ‘তোমার অসীমে প্রাণমন’, খন্দকার খায়রুজ্জামান কাইয়ুম ‘গরব মম হয়েছে, প্রভু, দিয়েছ বহু লাজ’, কাজল মুখার্জি ‘ও যে মানে না মানা’, সানজিদা রহমান ‘গোধূলি গগন মেঘে’, তমাল চক্রবর্তী ‘আজ তোমারে দেখতে এলাম’, মাখন হাওলাদার ‘মনে রবে কিনা রবে’, রুমঝুম বিজয়া রিসিল ‘আমি তোমার প্রেমে’, সুরাইয়া ইমাম ‘কে দিল আবার আঘাত’, কাকলী গোস্বামী ‘আধেক ঘুমে নয়ন’, আসিফুল বারী ‘তুমি কি কেবলই ছবি’।
এ ছাড়া আরও একক গান পরিবেশন করেন-তপন মাহমুদ, অনুপম কুমার পাল, খোকন চন্দ্র দাস, খন্দকার আবুল কালাম, মামুন জাহিদ খান, মহাদেব ঘোষ, অনিকেত আচার্য্য, মিজানুর রহমান, নীলুফার রহমান, আহমেদ মায়া আকতারী, ফেরদৌসী কাকলী, কনক খান প্রমুখ।সমাপনী বক্তৃতায় সবাইকে ধন্যবাদ জানান সংস্থার সভাপতি তপন মাহমুদ।
এ সময় সাধারণ সম্পাদক সাজেদ আকবর উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সালমা আকবর ও পীযূষ বড়ুয়া।গত ১০ মে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা শতাধিক শিল্পীদের সঙ্গে নিয়ে রাজধানীর শাহবাগের সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের মুক্তাঙ্গনে ‘ভুবনেশ্বর হে, মোচন কর’ বন্ধন সব মোচন কর হে পূজা-প্রার্থনা পর্যায়ের গানের সঙ্গে একঝাঁক বর্ণিল বেলুন উঁড়িয়ে তিন দিনের উৎসবের উদ্বোধন করেন কথাশিল্পী অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।
দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ