২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ২:২৫

পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে পাক-মার্কিন সম্পর্কে উত্তেজনা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

কূটনীতিকদের চলাফেরা সীমাবদ্ধ করতে পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ নিয়ে পাক-মার্কিন সম্পর্কে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। চলতি বছরের শুরুতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে দেওয়া মার্কিন সাহায্য বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পরই থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে। পাকিস্তানি গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, এই অবস্থার মধ্যে শনিবার পাকিস্তানে অবস্থানরত এক মার্কিন কূটনীতিককে (অ্যাটাচি) দেশে যেতে দেয়নি ইসলামাবাদ। কারণ ওই কূটনীতিকের গাড়ির ধাক্কায় এক পাকিস্তানি নিহত হয়েছেন।

এর এক দিন আগে পাকিস্তানে থাকা মার্কিন কূটনীতিকদের চলাফেরা সীমাবদ্ধ করে দেয় ইসলামাবাদ। দেশটিতে থাকা মার্কিন দূতাবাসে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, মার্কিন সরকার দেশটিতে অবস্থানরত পাকিস্তানি কূটনীতিকদের চলাফেরার ওপর যে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে, একই বিধি-নিষেধ পাকিস্তানে অবস্থানরত মার্কিন কূটনীতিকদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।

ইসলামাবাদের এই উদ্যোগের এক দিন আগে ওয়াশিংটনে অবস্থানরত পাক কূটনীতিকদের চলাফেরার ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, পাকিস্তানি কূটনীতিকরা কর্মস্থল থেকে ২৫ মাইলের (৪০ কিলোমিটার) বেশি ভ্রমণ করতে পারবেন না। এর বেশি পথ পাড়ি দিতে হলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। ওয়াশিংটনের এই উদ্যোগের জবাব হিসেবেই পাল্টা পদক্ষেপ নেয় ইসলামাবাদ।

রয়টার্স বলছে, মার্কিন ওই কূটনীতিককে দেশে যেতে না দেওয়া নিয়ে গণমাধ্যমের খবরের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ইসলামাবাদে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র। আর ওয়াশিংটনে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র বিষয়টি নিশ্চিতও করেননি আবার অস্বীকারও করেননি। স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র বলেছেন, ‘এর সঙ্গে গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা জড়িত। ওই কূটনীতিকের বর্তমান অবস্থান আমরা প্রকাশ করতে পারব না।’

প্রসঙ্গত, আমেরিকা যখন আফগানিস্তানে তালেবানবিরোধী অভিযান শুরু করে তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছে পাকিস্তান। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন যে, ইসলামাবাদ বরং তালেবান নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। এরপর পাকিস্তানের ওপর চাপ বাড়াতে দেশটিকে দেওয়া সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দেন তিনি।

রয়টার্স বলছে, দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে সর্বশেষ উত্তেজনা তৈরি হয় শনিবার, যেদিন ইসলামাবাদে থাকা এক মার্কিন সামরিক অ্যাটাচিকে (উল্লিখিত কূটনীতিক) দেশে যেতে বাধা দেওয়া হয়। এর এক দিন আগে ইসলামাবাদের একটি আদালত বলেন, গত ৭ এপ্রিল যে দুর্ঘটনা ঘটেছে তাতে ওই অ্যাটাচির ক্ষেত্রে কূটনৈতিক নিরাপত্তা (ইমিউনিটি) খাটে না। ৭ এপ্রিল ওই অ্যাটাচির গাড়ির ধাক্কায় ২২ বছর বয়সী এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার ইসলামাবাদের বাইরে নুর খান বিমানঘাঁটি থেকে মার্কিন বিমানবাহিনীর সি-১৩০ মডেলের বিমানে ওই অ্যাটাচির দেশে ফেরার কথা। কিন্তু আদালতের রায়ের পর ওই অ্যাটাচিকে ছাড়াই বিমানটি পাকিস্তান ছাড়তে বাধ্য হয়। এদিকে, কূটনীতিকদের চলাফেরায় বিধি-নিষেধ আরোপের বিষয়টি শনিবার রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাতে রাজি হয়নি কেউ।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :মে ১৩, ২০১৮ ১:৪৪ অপরাহ্ণ