আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় হোয়াইট হাউস সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের বহুল প্রত্যাশিত বৈঠকের তারিখ ও স্থান ঠিক হলেও তা যেকোনো সময় স্থগিত হয়ে যেতে পারে। বৈঠকের আগমুহূর্ত পর্যন্ত উত্তর কোরিয়ার আচরণে যদি কোনো অসংগতি বা উসকানি চোখে পড়ে তাহলে বৈঠক স্থগিত করে দেওয়া হবে। সিঙ্গাপুরে আগামী ১২ জুন অনুষ্ঠেয় এই বৈঠকের বিষয়ে ট্রাম্পের ঘোষণা আসার পরপরই হোয়াইট হাউস এই সতর্কবার্তা দেয়।
একই সঙ্গে হোয়াইট হাউস এও জানিয়েছে, তারা আশা করছে, বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উনের সঙ্গে এমন এক পরমাণু অস্ত্রমুক্ত কোরীয় উপদ্বীপ সৃষ্টির চুক্তির ব্যাপারে কথা বলবেন, যা হবে পূর্ণাঙ্গ, অপরিবর্তনীয় এবং নজরদারিযোগ্য। ট্রাম্পের ঘোষণা আসার পরপরই হোয়াইট হাউসের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি রাজ শাহ এয়ার ফোর্স ওয়ানের সফরসঙ্গী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এক রাজনৈতিক সমাবেশে যোগ দিতে এয়ার ফোর্সে ওয়ানে চড়ে ইন্ডিয়ানায় যাচ্ছিলেন ট্রাম্প। রাজ শাহসহ সাংবাদিকরা এ সময় ট্রাম্পের সফরসঙ্গী হন।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি, বড় ধরনের সাফল্য (উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনায়) পাওয়া যাবে।’ বিশেষ করে বৈঠকের স্থান-কাল ঘোষণার আগেই উত্তর কোরিয়ায় বন্দি তিন মার্কিন নাগরিককে পিয়ংইয়ং মুক্তি দিলে অনেকটাই আশাবাদী হয়ে ওঠেন ট্রাম্প। ওই তিন বন্দি যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর পরপরই ট্রাম্প কিমের সঙ্গে বৈঠকের তারিখ ও স্থানের ঘোষণা দিয়ে টুইট করেন।
যদিও ট্রাম্পের মতো আশাবাদী নন যুক্তরাষ্ট্রের অন্য কর্মকর্তারা। এ কারণেই আশাবাদের সঙ্গে সতর্ক করে দিয়েছেন রাজ শাহ। তিনি বলেন, ‘আমাদের হাতে এক মাসের চেয়েও বেশি সময় বাকি। আনেক কিছুই ঘটতে পারে। উত্তর কোরিয়ার তরফ থেকে উসকানিমূলক তৎপরতা চালানো হতে পারে। বিষয়টিকে মোটেই সুনজরে দেখা হবে না। বৈঠকে সম্মতি দেওয়া হয়েছে। তবে যেকোনো কারণেই তা স্থগিত হয়ে যেতে পারে।’ এটিই হবে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের উত্তর কোরীয় নেতার সঙ্গে প্রথম বৈঠক। মধ্যস্থতায় আলোচনার জন্য জিমি কার্টার ও বিল ক্লিনটন কয়েকবার উত্তর কোরিয়া সফর করলেও সেগুলো ছিল তাঁদের প্রেসিডেন্সি ছাড়ার পরের ঘটনা।
স্থান হিসেবে সিঙ্গাপুরকে নির্ধারণ করা নিয়ে রাজ শাহ মন্তব্য করেন, ‘এই দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়া—দুই পক্ষেরই সম্পর্ক রয়েছে। তারা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও কিম উন দুজনেরই নিরাপত্তার নিশ্চিত করতে পারবে এবং একই সঙ্গে একটি নিরপেক্ষ পরিবেশও দিতে পারবে তারা।’ তিনি আরো বলেন, ‘এর আগেও এ ধরনের ভূমিকা সফলভাবে পালন করেছে সিঙ্গাপুর। চীন ও তাইওয়ানের নেতার প্রথম বৈঠক হয় সিঙ্গাপুরে।’
হোয়াইট হাউসের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি জানান, দুই নেতার মধ্যে প্রাথমিকভাবে এক দিনের বৈঠকের কথা বলা হলেও সময় বাড়ানো পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চলছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ইন্টারন্যাশনাল নেগোসিয়েশনসবিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক ভিক্টরিয়া কোটেস বলেন, ট্রাম্প-উনের বৈঠকের সময় দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের নেতারাও উপস্থিত থাকতে পারেন। সূত্র : পিটিআই, এএফপি।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি