২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১:০২

রেফারির কলম চেপে ধরে ১৬ ম্যাচ নিষিদ্ধ তুরান!

স্পোর্টস ডেস্ক:

ফুটবল মাঠে রেফারির যে কোনো সিদ্ধান্তই খেলোয়াড়দের পক্ষে যেতে পারে নাও যেতে পারে। কিন্তু তাই বলে সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ স্বরূপ রেফারির কলার চেপে ধরা! পাঠক অবাক হলেন? হ্যাঁ এমনই কান্ড ঘটিয়েছেন আরদা তুরান। যার ফলস্বরূপ তাকে তুরস্কের ফুটবল ফেডারেশন ১৬ ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করেছে। রেফারিকে ধাক্কা মেরে কিংবা তর্ক করেও নিষিদ্ধ হওয়ার অনেক ঘটনা ঘটেছে। এই তো এ মৌসুমের শুরুতেই রেফারিকে ধাক্কা মেরে ৫ ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছিলেন রিয়ালের ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।

রেফারিকে মারার শাস্তি হিসেবে তুরস্কের ফুটবল ইতিহাসেই সর্বোচ্চ শাস্তির রেকর্ড এটি। নিজ দেশের এই ক্লাবটির হয়ে খেলতে নেমেই গত শনিবার মেজাজ হারিয়ে ভয়ঙ্কর ওই কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেন আরদা তুরান। ইস্তান্বুল বাসাকসেহির ক্লাব ইতিহাসে প্রথমবারের মতো লিগ শিরোপার লড়াইয়ে রয়েছে। শীর্ষ থাকা গালাতাসারাইয়ের চেয়ে মাত্র ২ পয়েন্টে পিছিয়ে। শনিবারের ম্যাচটি জয় পেলে পিছিয়ে নয়, বরং গালাতাসারাইকে পয়েন্টে ধরে ফেলতে পারত বাসাকসেহির।

ঘটনার বিস্তারিত জানা যায়, সেদিন নিচের সারির দল সিভাসপোরের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করে। শত চেষ্টা করেও দলের জয়ের রাস্তা খুলতে পারছিলেন না, ফলে এমনিতেই মেজাজ গরম ছিল তুরানদের। এই পরিস্থিতিতে ম্যাচের এক সহকারী রেফারি তুরানের বিপক্ষে ফাউলের সংকেত দেন। তার ইঙ্গিত পেয়ে ফাউলের বাঁশি বাজান মূল রেফারি। কিন্তু সহকারী রেফারির এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি তিনি। মাটিতে থেকে উঠে রাগে গজগজ করতে করতে তেড়ে যান সহকারী রেফারির দিকে।

দাঁত-মুখ খিচিয়ে বেশ কয়েকবার হাত মুষ্ঠিবদ্ধ করে ঘুষি দেয়ার হুমকিও দেন। কিন্তু তাতেও ভয় না পেয়ে ওই সহকারী রেফারি বাদানুবাদ করেই যাচ্ছিলেন। ব্যাস, রাগ চেক দিতে না পেরে সজোরে তার টি-শার্টের কলার চেপে ধরেন। যেন বক্সিং রিংয়ে নেমেছেন! সতীর্থরা এগিয়ে আসলেও তাকে নিবৃত করতে পারেননি। কলার চেপে ধরার কাণ্ডের জন্য সঙ্গে সঙ্গেই লালকার্ড দেখান রেফারি। ডিসিপ্লিনারি কমিটির বৈঠক শেষে দেশটির ফুটবল ফেডারেশন এক বিবৃতিতে জানায়, এই ঘটনায় সব মিলিয়ে তাকে (তুরান) ১৬ ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে রেফারির গায়ে হাত তোলার জন্য ১০ ম্যাচ, অপমান করার জন্য ৩ ম্যাচ এবং হুমকি দেয়ার জন্য আরও ৩ ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছেন এই তারকা।

তুরস্কের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, দেশটির ঘরোয়া ফুটবলে এটাই সর্বোচ্চ নিষেধাজ্ঞা। এর আগে ১১ ম্যাচ করে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন রাউল মেরিলেস ও এনগিন বায়তার। নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি ৯ হাজার ২০০ ডলার জরিমানাও করা হয়েছে তুরানকে।এই শাস্তির অর্থ, আগামী মৌসুমের প্রায় অর্ধেকটা সময় প্রতিভাবান এই মিডফিল্ডারকে কাটাতে হবে মাঠের বাইরে বসে। কারণ, এই মৌসুমের আর মাত্র দুটি ম্যাচ বাকি। মানে শাস্তির ১৪ ম্যাচই তাকে কাটাতে হবে আগামী মৌসুমে।জানুয়ারিতে তুরস্কে ফেরার পর এবারই অবশ্য প্রথম মারামারিতে জড়াননি।

গত মার্চেও একবার মারামারিতে জড়ান তিনি। চড় মেরেছিলেন এক সাংবাদিককে। তখন অবশ্য সবার সহানুভূতিই পেয়েছিলেন আরদা তুরান। নিজের সহধর্মিনীকে নিয়ে খেতে গিয়েছিলেন এক হোটেলে। সেখানেই এক সাংবাদিক বারবার নিষেধ করার পরও নানা প্রশ্ন করেন। স্ত্রীর সামনে এভাবে বিরক্ত করায় খেপে গিয়ে ওই সাংবাদিকের গালে কষে একটা চড় বসিয়ে দেন।

দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ

 

প্রকাশ :মে ১১, ২০১৮ ৩:৩৪ অপরাহ্ণ