আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের মধ্যেকার দ্বিপক্ষীয় সাক্ষাতের দিন-ক্ষণ নির্ধারিত হয়েছে। আগামি ১২ জুন সিঙ্গাপুরে ঐতিহাসিক এ বৈঠকে মিলিত হবেন এই দুই নেতা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বৃহস্পতিবার এক টূইট বার্তায় তিনি খবর জানান। একই টুইট বার্তায় বৈঠকটিকে বিশ্বশান্তির জন্য জন্য কার্যকর করার আশাবাদও ব্যক্ত করেন তিনি।
উত্তর কোরিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া তিন মার্কিনিকে স্বাগত জানানোর কয়েক ঘণ্টা পরই কিমের সঙ্গে বৈঠকের এ দিনক্ষণ ঘোষণা করলেন ট্রাম্প। খবর বিবিসির।
তিনি বলেন, ‘আমি সত্যিই খুবই অর্থবহ কিছু একটা করার ভালো একটি সুযোগ পেয়েছি বলে মনে করছি।’
এক টুইটে ট্রাম্প বলেন, বৈঠকটি যাতে বিশ্বশান্তির জন্য এক অনন্য মুহূর্ত হয়ে ওঠে সে চেষ্টা তারা দুইজনই করবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় থাকা কোনো প্রেসিডেন্টই এ পর্যন্ত উত্তর কোরিয়ার নেতার সঙ্গে বৈঠক করেননি।
এবছর মার্চে ট্রাম্প নজিরবিহীনভাবে কিমের সঙ্গে বৈঠক করার আমন্ত্রণ গ্রহণ করে বিশ্বকে হতবাক করে দেন।
এর আগে দুই নেতার মধ্যে হুমকি-ধামকি আর বাকযুদ্ধে কোরিয়া উপদ্বীপের পরিবেশ উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছিল।
কিন্তু উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্কের বরফ গলার পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। গত ২৭ এপ্রিলে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার দুই নেতার মধ্যে ঐতিহাসিক বৈঠকও হয়। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম কোরিয়া উপদ্বীপ পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করার জন্য কাজ করে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
এরপরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিমের বৈঠকের প্রস্তুতি শুরু হয়। বৈঠক করা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে পিয়ংইয়ং সফরে যান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। তার এ সফরকালেই তিন বন্দি মার্কিনিকে মুক্তি দেয় উত্তর কোরিয়া।
বৈঠকের আগে দিয়ে উত্তর কোরিয়ার এ বন্ধুসুলভ পদক্ষেপকে ‘অনেক বড় সাফল্য’ মনে করছেন বলেই জানিয়েছেন ট্রাম্প।
বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র নিয়েই মূলত আলোচনা হবে। যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই পিয়ংইয়ং এর কাছে পারমাণবিক অস্ত্র পরিহারের দাবি জানিয়ে আসছে।
তবে উত্তর কোরিয়া বৈঠকের আলোচ্যসূচি নিয়ে কিছু জানায়নি বা তারা কি প্রস্তাব দিতে পারে তারও কোনো ইঙ্গিত দেয়নি। যদিও দক্ষিণ কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি এবং উত্তর কোরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া নিয়েই প্রধানত আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা বৈঠকের আয়োজক দেশ হতে পেরে আনন্দিত। এ বৈঠকের মধ্য দিয়ে কোরিয়া উপদ্বীপে শান্তির সম্ভাবনা জেগে উঠবে বলেই তারা আশাবাদী।
সিঙ্গাপুরে এর আগেও উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। ২০১৫ সালে চীন এবং তাইওয়ানের দুই নেতা সিঙ্গাপুরেই ৬০ বছরের মধ্যে প্রথম ঐতিহাসিক বৈঠক করেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সিঙ্গাপুরের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গেও সিঙ্গাপুরের কূটনৈতিক সম্পর্ক আছে। তবে উত্তর কোরিয়ার ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা কঠোর হওয়ার পর গতবছর নভেম্বরে দেশটির সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য স্থগিত করেছে সিঙ্গাপুর।
দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ