স্পোর্টস ডেস্ক:
রেকর্ড বা রানসংখ্যার দিক দিয়ে তামিম ইকবাল অবশ্য বিরাট কোহলির আশেপাশে নেই। কিছুদিন আগে ক্রিকবাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তামিম নিজেও বলেছিলেন, তিনি নেই কোহলির ধারেকাছেও। তবে সেই কোহলিই কিন্তু একটা জায়গায় বড্ড পিছিয়ে বাংলাদেশী উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান থেকে। ব্রিটিশ মুলুকে রান করার ক্ষেত্রে তামিমের কাছেধারেও নেই কোহলি!
ব্যাট হাতে একের পর এক রেকর্ড ভাঙাগড়ার এক অদ্ভুত খেলায় মেতে উঠেছেন যেন কোহলি। সময়ের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যানকে মানা হয় ভারতীয় কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকারের যোগ্য উত্তরসূরি। তবে ইংল্যান্ডের মাঠে নামলেই যেন সেই কোহলিই হারিয়ে ফেলেন খেই। ব্রিটিশ মুলুক যেন ভারতীয় দলনায়কের জন্য একদমই অপয়া। অন্যদিকে তামিম যেন স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশিই রঙিন ইংলিশদের দেশে।
মোট দুই টেস্টে ইংল্যান্ডের মাঠে নেমেছেন তামিম। দুই ম্যাচের চার ইনিংসে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান হাঁকিয়েছেন দুই শতক আর এক অর্ধশতক, এর মধ্যে রয়েছে লর্ডসের সেই বিখ্যাত সেঞ্চুরিটাও। ৬৭ গড়ে ২৬৮ রান করা তামিমের স্ট্রাইক রেটটা নজর কাড়বে সবার, ৯৬.৪০! অর্থাৎ, ইংলিশ বোলারদের সাদা পোশাকে মোটামুটি তুলোধুনা করে ছেড়েছেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান।
ওয়ানডেতে তাও যা তামিমের চেয়ে বেশি ইনিংস খেলার কারণে রানটা বেশি কোহলির। কিন্তু টেস্টে একদমই বিবর্ণ ভারতীয় রান মেশিন। আর এই কারণেই আসছে ইংল্যান্ড সফরের প্রস্তুতিটা কোহলি নিতে চাচ্ছেন বেশ জাঁকিয়েই। আফগানিস্তানের বিপক্ষে তাদের অভিষেক টেস্টে ঘরের মাঠে থাকছেন না শুধু কাউন্টি ক্রিকেট খেলে ইংল্যান্ডের মাঠকেও নিজের রঙে রঙিন করতে।
ইংল্যান্ডের মাঠে সাদা পোশাকে কোহলি যেন তাঁর টেস্ট জার্সির মতোই একদমই ফ্যাকাশে। পাঁচ টেস্টের দশ ইনিংসে তাঁর সংগ্রহ মাত্র ১৩৪ রান! গড়টা যদি পারা যেত তবে নিশ্চিত সবার আড়ালেই রাখতে চাইতেন কোহলি, মাত্র ১৩.৪০! যেখানে ইংল্যান্ডের মাঠে তামিম শূন্য হাতে ফেরেননি এক ম্যাচেও সেখানে শুধু টেস্টেই পাঁচবার ডাক মেরেছেন কোহলি।
জো রুটদের দেশে ওয়ানডেতে রানের দিক দিয়ে কোহলি এগিয়ে থাকলেও তামিম এগিয়ে গড়ের দিক দিয়ে। অবশ্য ভারতীয় অধিনায়ক ম্যাচও খেলেছেন বাংলাদেশি বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের অর্ধেকের চেয়েও বেশি। ছয় ম্যাচে ৫৯.১৭ গড়ে তামিমের সংগ্রহ ৩৫৫ রান, আর কোহলির ঝুলিতে আছে ১৫ ম্যাচে ৪৮.৬০ গড়ে ৪৮৬ রান।
ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের মাঠে কোহলি কোনো শতক হাঁকাতে পারেননি। কিন্তু গত বছরের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই তামিম হাঁকিয়েছিলেন শতক। কোহলির চার অর্ধশতকের বিপরীতে তামিমের ঝুলিতে আছে এক শতক আর দুই অর্ধশতক। তামিম ইংল্যান্ডের মাটিতে ওয়ানডেতে কোনো ডাক না পেলেও কোহলি একবার ফিরেছেন শূন্য হাতে। তবে কোহলির চেয়ে একদিক দিয়ে পিছিয়ে তামিম। ভারতীয় ব্যাটিং মায়েস্ত্র পাঁচবার ছিলেন অপরাজিত, তামিম একবারও না।
ওয়ানডেতে রানের দিক দিয়ে একটু এগিয়ে থাকলেও দুই ফরম্যাট মিলিয়ে হিসেব করলে কোহলিকে হতে হবে ভীষণ হতাশ। টেস্ট আর ওয়ানডের রান যোগ করলে রান কিংবা গড় দুই দিক দিয়েই এগিয়ে থাকছেন তামিম। রানের ব্যবধানটা কম হলেও গড়ের দিক দিয়ে কোহলির চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে তামিম। ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট আর ওয়ানডের ১০ ইনিংসে ৬২.৩০ গড়ে তামিমের সংগ্রহ ৬২৩ রান। অন্যদিকে মাত্র ২৪.৮০ গড়ে ২৫ ইনিংসে কোহলির সংগ্রহ ৬২০ রান। ভারতীয় অধিনায়কের চেয়ে ১৫ ইনিংস কম খেলেও অনেক উপরে এই ড্যাসিং ওপেনার।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি