বগুড়া প্রতিনিধি:
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ডাবইর এলাকায় চার যুবককে গলাকেটে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী-স্ত্রী মেয়েসহ ছয়জনকে আটক করেছে। সোমবার দিবাগত রাতে উপজেলার কাঠগাড়া ও চন্দনপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। এদিকে নিহতদের মধ্যে অপর একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে।
তিনি হলেন, জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার নান্দাইল দীঘি গ্রামের শামছুদ্দিন মণ্ডল শ্যাম্পুর ছেলে খবির হোসেন ওরফে বাউশা (৩৪)। এ নিয়ে চারজনের পরিচয় পাওয়া গেল।
খবির হোসেনের মা খোদেজা বেগম জানান, খবির গত রবিবার বিকেলে পুনট বাজারে যাবার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরেনি। সে বিবাহিত। তার দুই ছেলে সন্তান রয়েছে। আজ বিকেল ৫টায় এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।
আটকরা হলেন উপজেলার কাঠগাড়া গ্রামের আবু বক্করের ছেলে বেলাল হোসেন, তাঁর স্ত্রী নাজনীন বেগম, মেয়ে নাতিশা খাতুন, আফছার আলীর ছেলে আবদুল হালিম প্রামানিক, চন্দনপুর গ্রামের জসিমুদ্দিনের ছেলে রফিকুল ইসলাম ও আটমূল ইউনিয়নের কুলুপাড়া গ্রামের ছেলে মোবাইল ব্যবসায়ী প্রফুল্ল সরকার লিটন সরকার (২৮)।
এ ঘটনায় বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল জলিলকে প্রধান করে গোয়েন্দা (ডিবি) ও থানা পুলিশের সমন্বয়ে ছয় সদস্যের একটি বিশেষ তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। এরইমধ্যে তদন্ত টিম কাজ শুরু করেছে।
শিবগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনিছুর রহমান আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন এ ঘটনায় এখনও বলার মত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে এ ঘটনার সার্বিক দিক পর্যবেক্ষণ করতে এডিশনার ডিআইজি নিশারুল আরিফ (ক্রাইম) মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে শিবগঞ্জে আসছেন।
হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য পুলিশ উদঘাটন করতে না পারলেও একাধিক সূত্র ধারনা করছে, মাদক সংক্রান্ত কোনো ঘটনা নিয়ে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হতে পারে। কারণ ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু মাদকের আলামত উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আটমূল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোজাফফর হোসেন বলেন, মাদক সংক্রান্ত বেচাকেনার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড হতে পারে। তবে নিহতরা সবাই নিম্ন আয়ের মানুষ।
শিবগঞ্জ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) জাহিদ হোসেন মণ্ডল জানান, এখন পর্যন্ত এ হত্যাকাণ্ডের কোনো ক্লু পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশ তিনটি বিষয় সামনে নিয়ে তদন্ত করছে। বিশেষ করে মাদক, পরকীয়া এবং চুরির ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বিরোধে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হতে পারে।
উল্লেখ্য, রবিবার রাতের কোনো এক সময় দুর্বৃত্তরা একই কায়দায় ৪ যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে। হত্যার পর তারা ডাবইর ধান ক্ষেতের মধ্যে মরদেহ ফেলে রেখে যায়। নিহতদের হাত পিছন দিক দিয়ে মোড়া করে বাধা ছিলো। পরে সোমবার দুপুরে সেই লাশ মর্গে পাঠায় পুলিশ।
দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ